ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতসহ উপকূলীয় বেড়িবাঁধ ভেঙে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। এতে লোকালয়ে নোনাপানি প্রবেশ করছে। বেড়িবাঁধ ভেঙে যাওয়ায় প্রায় কোটি টাকার মৎস্যঘের তলিয়ে গেছে বলে জানা গেছে। শুধু তাই নয়, সৈকতের বালিয়াড়ি ভাঙ্গনের পাশাপাশি ভেঙ্গে তছনছ রাস্তাও। সৌন্দর্য হারিয়ে সৈকত পরিণত হয়েছে ময়লার ভাঙ্গাড়ে। ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং পরবর্তী সৈকত দেখতে ভিড় করছেন পর্যটকরা। তবে, সাগর উত্তাল থাকায় এখনও নিষেধ রয়েছে নোনাজলে সমুদ্রস্নান। আর ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের আঘাতে ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।
মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং দুর্বল হয়ে পড়লেও উত্তাপ কমেনি সাগরের। জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ২ থেকে ৩ ফুট উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছে। উত্তাল ঢেউ আঘাত হানছে বালিয়াড়ি ও জিও ব্যাগে।
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়েছে ৩ কিলোমিটার সৈকতে। তলিয়ে গেছে জিও ব্যাগ, রাস্তাঘাট ভেঙ্গে তছনছ। একই সঙ্গে ময়লায় সয়লাব সাগরপাড়। সৈকতপাড়ের ব্যবসায়ীরা বলছেন, উচ্চ জোয়ারে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
সৈকতের কিটকট ব্যবসায়ী মফিজ বলেন, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়েছে সৈকতে। ভেঙ্গে গেছে রাস্তাঘাট, তলিয়ে গেছে জিও ব্যাগ। সৈকতের শৈবাল থেকে কলাতলী পর্যন্ত ব্যাপক ভাঙ্গন হয়েছে বালিয়াড়ির।
রাশেদ আলম বলেন, ৮ ফুট উচ্চতায় পানি প্রবাহিত হয়ে আঘাত করেছে সৈকত এলাকায় সৈকতের দরিয়ানগর এলাকায় বেশকিছু ঘরবাড়ি ভেঙ্গে গেছে। ভেসে গেছে ঘরের আসবাবপত্র।
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং পরবর্তী সাগর দেখতে ভিড় করছেন পর্যটকরা। বালিয়াড়ি কিংবা জিও ব্যাগে উঠে দেখছেন উত্তাল সাগর, তুলছেন ছবি। ভয়ে কেউ নামছেন না সমুদ্রস্নানে। সৈকতের লণ্ডভণ্ড দৃশ্য দেখে হতাশ সবাই।
সিরাত আরা নামে এক পর্যটক বলেন, সাগর উত্তাল থাকার কারণে সাগরে নামতে ভয় লাগছে। তাই দূর থেকে দেখে ছবি তুলছি।
আরেক পর্যটক শফিউল আলম বলেন, রাতে জোয়ারের পানির ভয়ে সাগর না দেখে হোটেলের রুমে চলে গিয়েছিলাম। কিন্তু সকালে সৈকতপাড়ে এসে দেখি সবকিছু তছনছ অবস্থা। সৈকতের পুরো সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে গেছে। বালিয়াড়িতে ময়লা আবর্জনায় ভরপুর।
সাগর উত্তাল থাকায় পর্যটকদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে দিচ্ছেন লাইফ গার্ড কর্মীরা। সী সেইফ লাইফ গার্ডের ইনচার্জ মোহাম্মদ সিরু বলেন, সাগর উত্তাল হবার কারণে এখনও পর্যটকদের নামার অনুমতি নেই। তাই পর্যটকদের সমুদ্রস্নানে নামতে দেয়া হচ্ছে না। মাইকিং করছি এবং পর্যটকদের অনুরোধ করছি নির্দেশ মেনে চলার জন্য।
জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, প্রশাসনের তৎপরতার কারণে জানের কোন ক্ষতি হয়নি। এখন ক্ষয়ক্ষতি নিরূপনের কাজ চলছে।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট মো. আবু সুফিয়ান বলেন, প্রশাসনের তৎপরতার কারণে জানের কোন ক্ষতি হয়নি। এটা প্রশাসনের বড় সফলতা। তবে কুতুবদিয়া, মহেশখালী ও সেন্টমার্টিনে বেশ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এখন ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের কাজ চলছে। তারপর দ্রুত ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে কাজ শুরু হবে।
নয়াশতাব্দী/এমএস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ