ভোলার তজুমদ্দিনে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের তাণ্ডবে প্রায় ৫ শতাধিক কাঁচা ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উপজেলার জনবসতিপূর্ণ ও নদী বেষ্টিত দ্বীপ চরজহির উদ্দিন, চর মোজাম্মেল, সিডার চর ও চর নাছরিন স্বাভাবিকের চেয়ে ৫-৬ ফুট জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে। শতাধিক পুকুরের মাছ ও অসংখ্য গবাদিপশু জোয়ারের পানিতে ভেসে গেছে। এসব চরাঞ্চলের প্রায় ১০ হাজার পরিবার সোমবার দুপুর থেকেই জোয়ারের বন্দি রয়েছে বলে জানা গেছে।

সূত্র জানায়, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাব শুরুর আগেই উপজেলা প্রশাসন ৭৮টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রেখেছিল। বিকেল থেকেই সেখানে প্রায় ৮ হাজার মানুষ নিরাপদ আশ্রয় গ্রহণ করে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের নিরাপদ পানি, শুকনা খাবার ও মোমবাতি সরবরাহ করা হয়। স্থানীয় সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরী শাওনের নির্দেশে দলের নেতা-কর্মিরা দুর্গত মানুষদের পাশে থেকে বিভিন্ন সহায়তা দেন।

মেঘনার বিভিন্ন ঘাটে বাধা অবস্থায় ঢেউ ও স্রোতের চাপে বেশ কিছু নৌকার মাস্তুল ভেঙে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অধিকাংশ সড়কের পাশে গাছ পড়ে যোগাযোগ সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ হয়ে যায়। পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মিরা স্থানীয়দের সহায়তায় গভীর রাত থেকে রাস্তা থেকে গাছ অপসারণ করে সকালে মধ্যেই যান চলাচল স্বাভাবিক করেন।

এছাড়াও সোমবার সকাল থেকেই মুসলধারে টানা বৃষ্টিতে উপজেলার নিন্মাঞ্চল ও অলিগলি পানিতে টইটুম্বুর হয়ে যায়। রোববার দিবাগত রাত ১ টার পর থেকে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন গোটা উপজেলা। তবে বিদ্যুৎ বিভাগ জানিয়েছে, দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে কাজ চলছে। সোমবার দুপুর ২টার পর থেকে গ্রামীণ ফোনের নেটওয়ার্ক বন্ধ হয়ে যায়। একারণে উপজেলা প্রশাসনের গঠিত কন্ট্রোলরুমের সাথে দুর্গতরা যোগাযোগই করতে পারেনি।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সেলিম মিয়া জানান, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনো নির্ধারণ করা যায়নি। তবে জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে দ্রুত তালিকা প্রস্তুতের কাজ চলছে। আশ্রয়কেন্দ্রে আসা মানুষদের সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা ও প্রয়োজনীয় উপকরণ নিশ্চিত করা হয়েছে। মঙ্গলবার ভোরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর মানুষ বাড়ি ফিরে গেছে।

উপজেলা নির্বাহি অফিসার মরিয়ম বেগম জানান, চরাঞ্চলগুলোতে মানুষ জোয়ারের পানিতে আটকা পড়েছে। এখন জোয়ারের পানি নেই। তাদের জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তার ব্যবস্থা করা হবে। ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য জেলা প্রশাসক মহোদয়ের কাছ থেকে বরাদ্দ পাওয়া গেছে।

নয়া শতাব্দী/জেআই