ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বাঁশখালীতে চিংড়ি ঘের লুট, গুলিবর্ষণ

প্রকাশনার সময়: ২২ অক্টোবর ২০২২, ২২:২০

চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার সরল এলাকার উপকূলীয় চিংড়ি ঘের থেকে বাধ কেটে রাতের আঁধারে মাছ লুট করার অভিযোগ উঠেছে। এ ছাড়া ঘটনার সময় সন্ত্রাসীরা বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে চিংড়ি ঘেরের নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত শ্রমিকদের মারধর ও গুলিবর্ষণের করেছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।

শুক্রবার (২১ অক্টোবর) গভীর রাতে সরল ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সরল উপকূলীয় সাগরপাড় এলাকার চিংড়ি ঘেরে এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্য চাষি তৈয়ব উল্লাহ ১৩ জনকে আসামি করে বাঁশখালী থানায় একটি অভিযোগ দাখিল করেছেন। অভিযোগ পেয়ে শুক্রবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে বাঁশখালী থানার ওসি (তদন্ত) আরিফুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল পুলিশ সরজমিনে গিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

অভিযুক্তরা হলেন, নোয়াপাড়া এলাকার সালাউদ্দিন কাদের মানিক (৪০), আজম উদ্দিন (২৪), মো. মিয়া (২২), মো. নেছার আহমেদ (৫৫), মঈনুদ্দিন (৪০), মোস্তাফিজ (৪০), হামিদুল্লাহ (৩৫), মো. রহিম (২৫), আব্দুল মান্নান রানা (৩২), আলমগীর (৩০), মো. আবু (৪০), মো. তৌহিদ (৩২) এবং মো. মনুর (৩৩)।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২১ অক্টোবর রাতের আঁধারে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সরল ইউনিয়নের নোয়াপাড়া এলাকার সালাউদ্দিন কাদের মানিকের নেতৃত্বে ৬০-৭০ জনের এক সন্ত্রাসী দল উত্তর মিনজীরিতলা এলাকার মো. তৈয়ব উল্লাহ সওদাগরের চিংড়ি প্রজেক্টের বাধ কেটে প্রথমে পানি ছেড়ে দেয়। পরে ওই প্রজেক্ট থেকে অন্তত ৫-৬ লাখ টাকার মাছ লুট করে নিয়ে যায়।

মৎস্য চাষী তৈয়ব উল্লাহ জানান, গতকাল গভীর রাতে স্থানীয় জলদস্যু সালাউদ্দিন কাদের মানিক বিভিন্ন অস্ত্রসস্ত্রসহ একদল সন্ত্রাসী নিয়ে এসে আমার মাছ ঘেরের বাধ কেটে মাছ লুট করে নিয়ে যায়। পরে আমি থানায় অভিযোগ করলে ঘটনাস্থলে পুলিশ আসলে তাদেরকে লক্ষ্য করে ২ রাউন্ড গুলি ছুড়ে তারা। এ সময় আমার ঘের থেকে অন্তত ৫-৬ লাখ টাকার মাছ লুট করে নিয়ে যায়। এসময় প্রজেক্টে থাকা নগদ ৬০ হাজার টাকা ও মাছ ধরার জাল নিয়ে যায় তারা।

তিনি আরও বলেন, আমি সরল ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আমিনুর রশীদের ছেলেদের কাছ থেকে বাৎসরিক লাগিয়ত হিসেবে মৎস্য প্রজেক্ট ও লবণ মাঠ করার জন্য নিয়েছি। লাগিয়ত হিসেবে নিয়ে এখানে চিংড়িসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ করেছি। এরপর থেকে স্থানীয় সন্ত্রাসী সালাউদ্দিন কাদের মানিক বিভিন্ন সময় দলবল নিয়ে এসে মাছ লুট করে নিয়ে যায় এবং বাধ কেটে ঘেরের পানি ছেড়ে দেয়। সে দীর্ঘদিন ধরে আমাদের সাথে এরকম করে আসছে। এছাড়াও সে একজন চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও জলদস্যু। তার বিরুদ্ধে বাঁশখালী থানাসহ বিভিন্ন জায়গায় অন্তত ১০টি মামলা রয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত সালাউদ্দিন কাদের মানিক বলেন, আমি গতকাল এলাকায় ছিলাম না। তবে আমার মাছের ঘেরে আমার পার্টনার নেছার উদ্দীন ও চারজন কর্মচারী ছিল। শুনলাম রাত দুইটার দিকে হটাৎ সেখানে পুলিশ যায়। ৩৫ থেকে ৪০ জন পুলিশ এবং তৈয়ব উল্লাহসহ তার ১৫ জন লোক ছিল। তাছাড়া মাছ ঘেরটা আমার মায়ের জায়গায়। এটা আমাদের। মুলত তারা এখানে এসে ঝামেলা করতেছে। আমাদের কর্মচারীদের মারধর করতেছে। এখানে তাদের সাথে পুলিশও জড়িত। না হয় এত রাতে এত গাড়ি পুলিশ আসল কেন। আমি পুলিশের বিরুদ্ধে উপর মহলে অভিযোগ দিয়েছি। এখানে আমার শত্রুপক্ষের লোকজন আমাদের ফাঁসাতে বিভিন্ন নাটক সাজাচ্ছে।

বাঁশখালী থানার ওসি (তদন্ত) আরিফুল ইসলাম বলেন, রাতে ঘের থেকে বাধ কেটে মাছ লুট করার অভিযোগ পেয়ে আমিসহ পুলিশের একটি টিম সরেজমিনে যায়। এসময় ওখানে কিছু লোক দেখছিলাম, লোকগুলো কারা সেটা চিহ্নিত করতে পারিনি। দুই রাউন্ড গুলি কারা করছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নট শিওর, এটা আমি জানিনা। তবে এ ঘটনায় তদন্ত চলছে বলেও জানান তিনি।

নয়াশতাব্দী/এমএস

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ