পটুয়াখালীর তেঁতুলিয়া-বুড়াগৌরাঙ্গ নদীসহ দেশের সকল নদ-নদীতে চলমান রয়েছে ২২দিনের ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা। বিকল্প কর্মসংস্থান না থাকায় জেলেদের আয়-রোজগার বন্ধ। এ সময় সরকারের পক্ষ থেকে বরাদ্দের চাল দ্রুত সময়ের মধ্যে পেতে চান জেলেরা।
উপজেলার একাধিক জেলে জানান, প্রতিবারই নিষেধাজ্ঞার সময়ে তাদের বরাদ্দের চাল হাতে পেতে বিলম্ব হয়। এতে তাদের সংসার চলে ধার-দেনা করে। এ দেনায় দায়ে তাদের বারবার সঙ্কটে পড়তে হয়। তাই এবার বরাদ্দের চাল দ্রুত হাতে পাবার দাবি জেলেদের। এ বছর নদীতে ইলিশ মাছ কম থাকায় তেমন টাকা পয়সাও পাননি বলে জানান তারা।
উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, গত ৭-২৮ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞার সময় সরকার জেলেদের সহায়তার জন্য ২৫কেজি করে চাল বরাদ্দ দিয়েছে। এ উপজেলায় নিবন্ধিত জেলে রয়েছে ৭ হাজার। এদের সবাই চাল পাবে। বিগত বছরগুলোতে নানা জটিলতায় ঠিক সময়ে সেই চাল পাননি জেলেরা।
উপজেলার বাঁশবাড়িয়া, হাজীহাট, গোলখালি, কাটাখালী, কালারানী, আউলিয়াপুর ও রনগোপালদীসহ বিভিন্ন জেলেপল্লী ঘুরে দেখা যায়, ইলিশ ধরা বন্ধ থাকায় ঘাটে ভেড়ানো রয়েছে জেলেদের নৌকা ও ট্রলার। জেলেদের মধ্যে কেউ জাল বুনছেন, কেউবা ঘাটে অলস সময় পার করছেন। কেউ আবার নৌকা ট্রলার মেরামতে ব্যস্ত। কেউ বাড়ি ফিরে গেছেন। ঘাটে নেই হাঁক-ডাক কোলাহল। নদীতে ইলিশ ধরা ছাড়া অন্য কোনো কাজও জানেন না তারা। এজন্য নিষেধাজ্ঞার সময়ে বিকল্প কর্মসংস্থানের জন্য প্রশিক্ষণ দেয়ারও দাবি জানান তারা। এমন বাস্তবতার মধ্যেই চাল বিতরণের দাবি জেলেদের। তবে বরাদ্দের এ চাল বিতরণের কার্যক্রম দেখা যায়নি উপজেলার কোন ইউনিয়ন পরিষদ ও মৎস্য অধিদফতরের সংশ্লিষ্টদের।
দশমিনা উপজেলার বাঁশবাড়িয়ার জেলে মো. লাল মিয়া বলেন, ‘স্ত্রী সন্তানসহ পরিবারের ছয় সদস্যের সংসার আমার একা চালাতে হয়। নদীতে মাছ ধরেই কোনো মতে চলে আমার সংসার। এখন নদীতে ইলিশ ধরা বন্ধ। তাই পেটে ভাত দিতে দ্রুত সরকারি চাল দরকার। সরকারের কাছে দাবি দ্রুত সময়ের ভেতর আমরা যেন চাল পাই।’
দশমিনা উপজেলার গোলখালির জেলে মো. জাকির হোসেন ও বাবুল মিয়াসহ একাধিক জেলে বলেন, ‘আমরা সরকারের নিষেধাজ্ঞা মেনে নদীতে মাছ শিকারে যাই না। এজন্য সরকার চাল দেয় কিন্তু যথাসময়ে চাল পাওয়া যায় না। ফলে পরিবার নিয়ে চলতে খুব কষ্ট হয়ে যায় আমাদের। আমরা তাড়াতারি বরাদ্দের চাল দেবার দারি জানাই।’
তারা আরও বলেন, ‘এই ২২ দিন যেন এনজিওগুলো কিস্তি বন্ধ রাখে। এটা হলে আমাদের মতো জেলেদের অনেক উপকার হবে।’
এ বিষয়ে দশমিনা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাহবুবুল আলম তালুকদার জানান, জেলেদের জন্য বরাদ্দকৃত চাল আগামী দু’একদিনের মধ্যে বিতরণ করা হবে।
তিনি আরও বলেন, নিষেধাজ্ঞার সময়ে জেলেরা যেন নদীতে না যায় সেজন্য জেলে পল্লীগুলোতে সচেতনতামূলক প্রচার-প্রচারণা করা হয়েছে।
নয়াশতাব্দী/এমএস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ