সিরাজগঞ্জ জেলা পরিষদ নির্বাচনে ৪ নম্বর ওয়ার্ডে বিজয়ী প্রার্থী সুমন সরকারের বিরুদ্ধে নকল টাকা সরবরাহ করে ভোট কেনার গোপন তথ্য ফাঁস হয়েছে। বেশ কয়েকজন ইউপি সদস্য (ভোটার) নকল টাকা চালাতে না পেরে আক্ষেপ করেছেন। ফেঁসে যাবার ভয়ে অভিযোগ দেননি কেউই। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে শুরু হয়েছে ব্যাপক তোলপাড়। তবে সরাসরি অভিযোগ না পাওয়ায় ব্যবস্থা নেননি রিটার্নিং কর্মকর্তা।
সোমবার (১৭ অক্টোবর) রায়গঞ্জের স্থানীয় সাংবাদিক সেখ মোস্তফা নুরুল আমিন ফেসবুকে লেখেন, ‘আজ জেলা পরিষদের নির্বাচন হচ্ছে। নির্বাচনে সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জের এক সদস্য প্রার্থী জেলা পরিষদ নির্বাচনে তার পক্ষে ভোট আদায়ের কৌশল হিসেবে তালিকাভুক্ত ভোটার অর্থাৎ সংশ্লিষ্ট এলাকার ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বারদের টাকার বান্ডিল দিয়েছেন গত রাতে। আজ ভোট দিয়ে কিছু কেনাকাটা আর ফুর্তির জন্য বের হন তারা। কিন্তু পরখ করে দেখেন রাতের অন্ধকারে কেনা-বেচার সব টাকাই জাল। কয়েক মেম্বার তাদের সেই প্রার্থীকে বিষয়টি অবহিত করলে তিনি সাফ জানিয়ে দেন, জাল নোট যার কাছে পাওয়া যাবে তাকেই কিন্তু পাকড়াও করবে পুলিশ। এ কথা শুনে স্তব্ধ হন তারা। ভোট কেনা-বেচার বাজারে এভাবে কত কিছুই না ঘটছে।’
অন্যদিকে, অভিযুক্ত প্রার্থী সুমন সরকার রায়গঞ্জ উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক। জেলা পরিষদের সদস্য পদে (বৈদ্যুতিক পাখা প্রতীক) বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। এর আগেও তিনি জেলা পরিষদের সদস্য ছিলেন।
ওই ওয়ার্ডের পরাজিত প্রার্থী গোলাম মোস্তফা সাংবাদিকদের বলেন, ‘জালনোটের বিষয়টি ফেসবুকের মাধ্যমে জেনেছি। তবে কে কাকে জাল টাকার বান্ডিল দিয়েছে সেটা জানা নেই।’
অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিজয়ী প্রার্থী সুমন সরকার। তিনি বলেন, ‘নির্বাচিত হওয়ায় প্রতিপক্ষ এমন মিথ্যা গুজব ছড়াচ্ছে। কোনো ইউপি সদস্যকে জাল টাকার বান্ডিল দেইনি।’
রায়গঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাদি আলমাজি জিন্নাহ বলেন, ‘মূলত প্রক্রিয়া করেছি নারী ভোটার সংগ্রহে। এবার পুরুষ ভোটারদের নিয়ে আমাদের কোনো মাথা ব্যথাই ছিল না। অর্থ খরচের বিষয়টিও অমূলক।’
সিরাজগঞ্জ পৌর শ্রমিক লীগের আহ্বায়ক মো. খালেদ মোশারফ শাওন এবারের সিরাজগঞ্জ জেলা পরিষদ নির্বাচনে দুই নম্বর ওয়ার্ড থেকে সদস্য পদে হাতি মার্কা নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তিনিসহ মোট পাঁচ প্রার্থীর জামানত বাতিলও হচ্ছে এ ওয়ার্ডে। টিউবওয়েল প্রতীকে ৭৫ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন জেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক একরামুল হক।
খালেদ মোশারফ শাওন বলেন, ‘আমি সৎ শ্রমিকবান্ধব মানুষ। সততাই একমাত্র পুঁজি। অবৈধভাবে ভোট কেনার অর্থও আমার নেই। যদি অন্যদের মতো অঢেল টাকা খরচ করে অবৈধভাবে ভোট কিনতে পারতাম, তাহলে জিততেও পারতাম। জামানতও বাতিল হতো না।’
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম মঙ্গলবার সকালে বলেন, ‘নির্বাচনে অর্থ লেনদেন হয়ে থাকলেও আমাদের কাছে এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ নেই।’
নয়াশতাব্দী/এমএস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ