নড়াইলে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রী মুক্তা মনি বেগমকে হত্যার অভিযোগে স্বামী লাভলু মীরকে মৃত্যুদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অপর ৪ আসামিকে খালাস প্রদানের আদেশ দিয়েছেন নড়াইলের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) সানা মো. মাহ্রুফ হোসাইন।
সোমবার (১৭ অক্টোবর) বিকেলে বিচারক এ আদেশ দেন। মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত মো. লাভলু মীর জেলার লোহাগড়া থানার চর-বকজুড়ি গ্রামের লায়েব আলী মীরের ছেলে। খালাস প্রাপ্তরা হলেন চর-বকজুড়ি গ্রামের লায়েব আলী মীর, লাভলী বেগম, মামুন মীর ও মোসা. লিজা বেগম। রায় শোনার পর আসামি লাভলু মীর কাঠগড়ায় অজ্ঞান হয়ে পড়েন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০০৭ সালে লোহাগড়া থানার চরবকজুড়ি গ্রামের লাভলু মীরের সাথে মুক্তা মনি বেগমের বিবাহ হয়। বিয়ের পর থেকেই লাভলু মুক্তা ও তার পরিবারের লোকজনের কাছে ২লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে আসছিল। টাকা না পাওয়ার ক্ষোভে ২০১২ সালের ২১মে দুপুরে আসামিরা মুক্তা মনিকে শারিরীক নির্যাতন ও শ্বাসরোধে হত্যা করে মধুমতি নদীতে ফেলে দেয়। কিছু সময় পর নাটক সাজিয়ে নিহত মুক্তা মনির মরদেহ পানি থেকে উঠিয়ে বাড়িতে এনে পানিতে ডুবে মারা গেছে বলে জানায়। বাদীসহ তার আত্মীয় স্বজনরা আসামিদের বাড়িতে গিয়ে দেখতে পায় যে, নিহত মুক্তা মনির শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের বোন সালেহা সুলতানা বাদী হয়ে নিহতের স্বামী লাভলু মীরসহ ৫ জনকে আসামি করে ২০১২ সালের ৪ জুন লোহাগড়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নিহতের স্বামী লাভলু মীরসহ লায়েব আলী মীর, লাভলী বেগম, মামুন মীর ও মোসা. লিজা বেগমকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
আদালতে ৯জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আসামি লাভলু মীরের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাকে মৃত্যুদণ্ড ও ৫০হাজার টাকা জরিমানা এবং অপর ৪জন আসামিকে খালাস প্রদানের আদেশ দেন বিচারক।
রায়ের বিষয়টি সরকার পক্ষের আইনজীবী (পিপি) অ্যাডভোকেট এমদাদুল ইসলাম নিশ্চিত করেছেন।
নয়াশতাব্দী/এমএস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ