সঠিকভাবে হোমওয়ার্ক না করায় অতিরিক্ত পানি পান করিয়ে কয়েক শিক্ষার্থীকে শাস্তি দিয়ে বেকায়দায় পড়েছেন বরিশাল কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজের এক সহকারি শিক্ষক। শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ইংরেজি বিষয়ের শিক্ষক মনোয়ারুল ইসলাম মামুনের বিরুদ্ধে শাস্তিস্বরুপ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে জেলা প্রশাসন। পাশাপাশি ওই শিক্ষককে বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের জন্য শোকজ করা হয়।
বুধবার (১২ অক্টোবর) সন্ধ্যায় সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ প্রফেসর খোন্দকার অলিউল ইসলাম নয়া শতাব্দীকে এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
বিভিন্ন মাধ্যম জানা গেছে- মঙ্গলবার হোমওয়ার্ক করে নিয়ে না যাওয়ায় সহকারি শিক্ষক মনোয়ারুল ইসলাম মামুন তৃতীয় শ্রেণির ৫ শিক্ষার্থীকে ক্লাসে বসিয়ে অতিরিক্ত পানি পান করান। মাত্রারিক্ত পানি পান করে কয়েকজন ক্লাসেই বমি করে। ঘটনাটি প্রাথমিকভাবে লুকোচাপা থাকলেও একদিন বাদে প্রকাশ্যে আসলে শিক্ষাগুরুর এমন নীতিবিবর্জিত কর্মকাণ্ড নিয়ে সর্বমহলে তুমুল আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি করে।
যদিও অনেকটা চাপের মুখে আত্মপক্ষ সমর্থন করতে গিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক মনোয়ারুল ইসলাম মামুন সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেছেন- তিনি শাস্তি দেওয়ার জন্য কিছু করেননি। যারা হোমওয়ার্ক করেনি তাদের সঙ্গে মজা করে সঙ্গে থাকা পটের পানি খেতে বলেছেন। শিক্ষার্থীরা বেশি পানি পান করে ফেলেছে। এটি শাস্তি দেওয়ার জন্য নয়। বাচ্চাদের শাস্তি দেওয়ার উদ্দেশে এমনটি করা হয়নি। বরং তাদের সাথে মজা করেছেন।
এমন একটি খোড়া অজুহাতে তার বিরুদ্ধে যে ব্যবস্থাগ্রহণ করা হয়েছে তাতে তিনি রীতিমত বিব্রত এবং মর্মাহত বলেও মন্তব্য ওই শিক্ষকের।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ প্রফেসর খোন্দকার অলিউল ইসলাম নয়া শতাব্দীকে বলেন, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এমন আচরণের ঘটনায় বিদ্যালয় প্রশাসন হতবাক-বাকরুদ্ধ। বিদ্যালয়ের সভাপতি ও জেলা প্রশাসক ইতোমধ্যে অভিযুক্ত শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) এ ঘটনা তদন্তে নির্দেশনা দিয়েছেন।
জেলা প্রশাসনের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, তাদের অধিনস্থ একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এমন বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে খোদ জেলা প্রশাসক মো. জসীম উদ্দিন হায়দারও বিব্রত এবং মর্মাহত। সঙ্গত কারণে তিনি এই ইস্যুতে নিশ্চুপ থাকতে পারেননি। কোনো এক মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন এবং ঘটনাটি তদন্তে ইউএনওকে দায়িত্ব দিয়েছেন।
পাশাপাশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ শিক্ষককে শোকজ নোটিস দিয়ে তিন কার্যদিবসের মধ্যে ঘটনার ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। সেক্ষেত্রে এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা মিললে তার বিরুদ্ধে আরও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হতে পারে বলে নিশ্চিত করেছে সূত্রটি।
নয়াশতাব্দী/এমএস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ