মাদারীপুরের কালকিনিতে মোসা. শ্রাবনী আক্তার (২১) নামে এক অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূর সিজারিয়ান অপারেশন করা হয়েছে। তবে অপারেশনের ২০ দিন পার হলেও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের লাইফ সাপোর্টের বেডে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে ওই গৃহবধূ।
এদিকে কালকিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডা. জিএম রিয়াজ রহমান স্থানীয় মাতৃছায়া ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড ক্লিনিকে এ অপারেশন করেছেন বলে ভূক্তভোগী পরিবারের দাবি।
মঙ্গলবার দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ওই গৃহবধূর পরিবার।
ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার কয়ারিয়া ইউনিয়নের মোল্লারহাট গ্রামের অসহায় ইউনুস হাওলাদারের ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী শ্রাবনী আক্তার হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান তার পরিবারের লোকজন। সেখানে ওই গৃহবধূর আল্ট্রাসনোগ্রাম করা হয়।
আল্ট্রাসনোগ্রামের রিপোর্ট দেখে ডা. জিএম রিয়াজ রহমান বলেন, ওই অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূর পেটের বাচ্চা মারা গেছে। পরে স্থানীয় মাতৃছায়া ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড ক্লিনিকে ওই গৃহবধূকে ভর্তি করা হয়। ওই ক্লিনিকে ডা. জিএম রিয়াজ রহমান অপারেশন করে অন্তঃসত্ত্বা শ্রাবনীর পেটের মরা বাচ্চা বের করেন। ওই ক্লিনিকে ৫ দিন থাকার পরে ওই গৃহবধূকে বাড়ি যেতে বলেন ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ।
কিন্তু ওই গৃহবধূ বাড়িতে গেলে পুনরায় অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে তার অবস্থার আরও অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের লাইফ সাপোর্টের বেডে দেওয়া হয়। অপারেশনের ২০ দিন পার হলেও ওই গৃহবধূ এখন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে।গৃহবধূর স্বামী ইউনুস অভিযোগ করে বলেন, ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা আমার স্ত্রী শ্রাবনী আক্তার হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে ডা. জিএম রিয়াজ রহমান স্থানীয় মাতৃছায়া ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড ক্লিনিকে অপারেশন করেন। কিন্তু আমার স্ত্রী সুস্থ না হয়ে পুনরায় অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাকে আমরা এখন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসছি। সে এখন লাইফ সাপোর্টে আছে। আমি ওই ডাক্তারের বিচার চাই। আমি ডাক্তারের ও ক্লিনিকের নামে মামলা করব।
মাতৃছায়া ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড ক্লিনিকের ম্যানেজার মো. রোকনউজ্জামান বলেন, গৃহবধূ শ্রাবনীর অপারেশন আমাদের ক্লিনিকে ডা. জিএম রিয়াজ রহমান করেছেন। এবং সে সুস্থ হয়ে বাড়িতে গেছেন।
ডা. জিএম রিয়াজ রহমান বলেন, আমি ওই গৃহবধূকে মাতৃছায়া ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড ক্লিনিকে অপারেশন করেছি।
কালকিনি থানার ওসি মো. শামীম হোসেন বলেন, ওই গৃহবধূর পরিবারকে সিভিল সার্জন ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বরাবর লিখিত অভিযোগ ও আদালতে মামলা করার জন্য বলে দিয়েছি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার পিংকি সাহা বলেন, ওই গৃহবধূর পরিবারকে ডাক্তার ও ক্লিনিকের নামে অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে।
নয়াশতাব্দী/এফআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ