নেত্রকোনা জেলার পূর্বধলায় হঠাৎ করে চোখ ওঠা রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। চোখ ওঠা রোগের প্রকোপ থাকে সাধারণত গ্রীষ্মকালে। তবে এবার শরৎকালে এ রোগ বৃদ্ধি পেয়েছে। সারা দেশের মত পূর্বধলা উপজেলার প্রায় প্রতিটা ঘরে ঘরে চোখ ওঠা রোগের মহামারি দেখা দিয়েছি। পূর্ণ বয়স্ক থেকে মধ্য বয়স্ক ও শিশুরাও এ রোগ থেকে রেহাই পাচ্ছে না। কারো কারো এক চোখ উঠলেও বেশির ভাগ মানুষের দু-চোখ একসাথে সংক্রমণ হচ্ছে।
চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায়-এ রোগকে কনজাংটিভাইটিস বলে। এ রোগের লক্ষণ সমূহ হচ্ছে হঠাৎ করেই চোখ লাল হয়ে পানি পরা সহ চুলকানো। আবার অনেকেরই প্রচণ্ড ব্যাথা অনুভব হয়। চোখ ওঠা রোগটি ছোঁয়াচে। আর এ কারণেই দ্রুত একজনের কাছ থেকে অন্যজনের কাছে ছড়াচ্ছে। অনেকেই এ রোগ থেকে বাঁচতে কালো চশমা ব্যবহার করছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার অধিকাংশ মানুষ এই ভাইরাস জনিত ছোঁয়াচে রোগে ভুগছে। গত কয়েকদিন ধরে উপজেলা হাসপাতাল, ফার্মেসি এবং পল্লী চিকিৎসকের কাছে ভিড় করছে চোখ ওঠা রোগীরা। এই ভাইরাস ছোঁয়াচে রোগটি সাধারণনত ৬/৭ দিনের মধ্যে ভাল হয়ে যাচ্ছে বলে রোগীরা সাধারণত চোখে কালো চশমা ও চোখের ড্রপ দিয়েই শান্ত থাকতে হচ্ছে। এই ছোঁয়াচে রোগের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পরেছেন নিম্ন আয়ের মানুষজন। যারা দিন মজুর চোখ ওঠার করণে তারা কাজ করতে পারছে না। পাশাপাশি স্কুল, কলেজেও এ রোগের প্রকোপ ছড়িয়ে পড়ছে।
উপজেলার পুকুরিয়ারকান্দা গ্রামের গৃহিনী রেখা আক্তার বলেন, দু’দিন ধরে চোখ ওঠার কারণে গৃহস্থালী কাজকর্ম করতে পারছি না। কোলের শিশু বাচ্চাটির জন্য ভয় হচ্ছে কখন জানি ছেলেটারও চোখ ওঠে যায়। পাড়া-প্রতিবেশীদের কাছেও যেতে পারছি না।
বেসরকারি চাকুরীজীবি আবুল কাশেম বলেন, আমার নাতনীর চোখ ওঠেছে। সবসময় শুধু চোখ দিয়ে পানি ঝরে। মাঝে মাঝে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব হয়।
মিডিয়া আইডিয়াল স্কুলের পরিচালক ইসমাইল হোসেন খোকন বলেন, চোখ ওঠা রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় অনেক ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষকেরা নিয়মিত স্কুলে আসতে পারছে না। ফলে সাময়িক শিক্ষা কার্যক্রম ব্যহত হয়। এক শিক্ষার্থীর থেকে অন্য শিক্ষার্থীর মধ্যে ছড়িয়ে পরছে এই রোগ। এমনকি যার হয়েছে তার দিকে তাকালেও সংক্রামত হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে পূর্বধলা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ আবু হাছান শাহীন বলেন, চোখ ওঠা সাধারণত একটি সিজনাল ভাইরাসজনিত ছোঁয়াচে রোগ। এতে আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। সাধারণত পাঁচ থেকে সাত দিনের মধ্যে এই রোগ সেরে যায়। সাবধানতা অবলম্বন করলে সহজেই এ ভাইরাসজনিত ছোঁয়াচে রোগ হতে পরিত্রাণ পাওয়া যায়।
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ