পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় স্বামীকে আপন করে পেতে কবিরাজের কাছে তদবীর নিতে গিয়ে গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন এক গৃহবধূ। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ওই তরুণী গৃহবধূর অভিযোগের ভিত্তিতে ৩ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
শনিবার (১ অক্টোবর) ভোর রাতে উপজেলার মিঠাগঞ্জ ইউপির চরপাড়া এলাকা থেকে অভিযান চালিয়ে অভিযুক্তদের আটক করা হয়। আটককৃতরা হলেন- শহীদুল ইসলাম মুসুল্লী, মালেক হাওলাদার ও আলমগীর হোসেন। এদের সকলের বাড়ি ওই ইউপির চরপাড়া গ্রামে। এছাড়া ভুক্তভোগী গৃহবধূর বাড়ি ঢাকার নারায়নগঞ্জ এলাকায়।
ওই তরুণীর অভিযোগের ভিত্তিতে জানা যায়, ২০১৯ সালে পারিবারিক ভাবে এক যুবকের সাথে বিয়ে হয় তার। বিয়ের পর দাম্পত্য জীবনে বিরোধের সৃষ্টি হলে তিনি তার বাবার বাসায় বসবাস শুরু করেন। আর সেখানেই বাবার বাসার পাশে একই ফ্লাটের বাসিন্দা অভিযুক্ত মালেক হাওলাদারের মেয়ে শিল্পীর সাথে পরিচয় হয় গৃহবধূর। সখ্যতার এক পর্যায়ে স্বামীর সাথে বনিবনা না হওয়ার বিষয়টি শিল্পীকে জানান ভুক্তভোগী। পরে কবিরাজের মাধ্যমে স্বামীকে বসে আনার পরামর্শ দেন শিল্পী। এরই ধারাবাহিকতায় অভিযুক্ত কবিরাজ শহীদুলকে গত রমজান মাসে ভুক্তভোগীর বাসায় নেয়া হলে সেখানে ২০ হাজার টাকায় সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন তিনি। এরপর থেকে টাকা নিয়ে তদবীর দেয়াসহ বিভিন্ন সময়ে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করতেন শহীদুল। সর্বশেষ গৃহবধূকে তদবীর নিতে কবিরাজের নিজ বাড়ি চরপাড়ায় আসতে বলেন শহীদুল।
তার কথা অনুযায়ী নারায়ণগঞ্জ থেকে বাসযোগে গত ২৩সেপ্টেম্বর শহীদুলের বাড়িতে তদবীর নিতে আসেন ২২ বছর বয়সী ওই তরুণী। তবে একদিন শহীদুলের বাড়িতে তার স্ত্রীর সাথে রাত্রী যাপনের পরের দিন সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে অভিযুক্ত শহীদুল ও আলমগীর কৌশলে গৃহবধূকে মালেকের খালি বাসায় নিয়ে যায়। সেখানে ঘরের দোতালায় আটকে রেখে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের সহায়তায় জোরপূর্বক তিনজন মিলে তাকে গণধর্ষণ করে। এসময় ধর্ষণের কথা কাউকে জানালে প্রাণে মেরে ধানক্ষেতে মরদেহ গুম করার হুমকি দেয়া হয় বলেও অভিযোগে উল্লেখ করেন ভুক্তভোগী ওই নারী।
এছাড়া ওই রাতে তাকে শহীদুলের বাড়িতে রেখে পরেরদিন ঢাকায় পাঠায় অভিযুক্তরা। পরে ঢাকায় গিয়ে স্বজনদের কাছে বিস্তারিত জানালে তাদের পরামর্শনুযায়ী শুক্রবার কলাপাড়া থানায় এসে তিন জনের নাম উল্লেখসহ ৬ জনের নামে ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন ওই গৃহবধূ।
কলাপাড়া থানার ওসি মো. জসীম জানান, অভিযোগ পেয়ে শনিবার ভোর রাতে অভিযান চালিয়ে তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের আদালতে প্রেরণ করা হবে।
নয়াশতাব্দী/এমএস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ