ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

থমকে আছে সোনারগাঁও পৌর নির্বাচন, উন্নয়নে স্থবিরতা

প্রকাশনার সময়: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২২, ২৩:১২

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলাটি ১০টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত। ১০ ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে গেলেও আইনি জটিলতায় আটকে আছে সোনাগাঁয়ের একমাত্র পৌরসভাটির নির্বাচন। নির্বাচনি এলাকার সীমানা নিয়ে মামলার কারণে মেয়াদ শেষ হওয়ার ২০ মাসেও হচ্ছে না পৌরসভার নির্বাচন। বর্তমানে এ পৌরসভায় নির্বাচিত কোন জনপ্রতিনিধি না থাকায় সকল ধরনের উন্নয়ন কাজ স্থবির হয়ে পড়েছে। নানা ধরনের ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন পৌরবাসী।

স্থানীয় বিচার-শালিস, প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের সত্যায়ন, ওয়ারিশ সার্টিফিকেটসহ বিভিন্ন ধরনের কাজে পৌরসভার বাসিন্দারা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। এছাড়াও বিভিন্ন ওয়ার্ডের রাস্তাঘাট ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার নানা সমস্যা নিরসনে বর্তমানে কোন উদ্যোগ নেই। পৌরসভার মেয়র ও কাউন্সিলররা কেউ দায়িত্বে না থাকায় এসব উন্নয়ন কাজ এখন বন্ধ হয়ে আছে।

গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারী সোনারগাঁও পৌরসভার নির্বাচিত মেয়র ও কাউন্সিলরদের ৫ বছরের মেয়াদ শেষ হয়। মেয়াদ শেষের ১৫ মাস পর গত ১৬ মে পৌরসভা পরিষদ বিলুপ্ত করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদ এলাহীকে প্রশাসক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। ফলে পৌরবাসীর প্রয়োজনীয় কাজকর্মের জন্য এখন দৌঁড়াতে হচ্ছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যলয়ে।

জানা গেছে, সোনারগাঁও পৌরসভার ছোট শীলমান্দি ও মল্লিকপাড়া মৌজার কিছু জমি ইকোনমিক জোনের জন্য কর্তন করে পার্শ্ববর্তী মোগরাপাড়া ইউনিয়নে অন্তর্ভুক্ত করে ভূমি মন্ত্রণালয়। পরে তৎকালীন পৌর মেয়র সাদেকুর রহমান বাদী হয়ে এর বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে একটি রিট পিটিশন দায়ের করেন। এ রিট পিটিশন নিষ্পত্তি না হওয়ায় সোনারগাঁও পৌরসভার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও নির্বাচন ঝুলে রয়েছে।

বর্তমানে প্রশাসক হিসেবে পৌরসভা পরিচালনা করছেন সোনারগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদ এলাহী। বিগত দুই বছর ধরে সোনারগাঁও পৌরসভার নির্বাচনকে ঘিরে হাফ ডজন মেয়র প্রার্থী ও অর্ধশত কাউন্সিলর প্রার্থী মাঠে সরব থাকলেও নির্বাচন অনিশ্চিত হওয়ায় সবার মধ্যেই এখন হতাশা বিরাজ করছে। অনেকেই প্রচার প্রচারনা থেকে ইতিমধ্যে নিজেদেরকে গুটিয়ে নিয়েছেন। পাশাপাশি পৌরসভার সাধারণ মানুষও অনেকটাই হতাশ।

সোনারগাঁও পৌরসভার বাসিন্দা মজিবুর রহমান জানান, পৌরসভায় নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি না থাকায় আমরা নানা দুর্ভোগের শিকার হচ্ছি। বর্তমানে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বেড়েছে, কিন্তু মশা নিধনের কোনও ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। স্থানীয় কাউন্সিলর থাকলে তাকে বললে আমরা আগে এর প্রতিকার পেতাম। এখন তা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি।

এ পৌরসভার মধ্যে ঐতিহাসিক পানাম নগরী ও সোনারগাঁও জাদুঘরসহ বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্র থাকায় প্রতিদিন এখানে বিপুল সংখ্যক পর্যটকের আগমন ঘটে। এখানকার রাস্তাঘাটের উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির বিকল্প নেই। যেহেতু মোগরাপাড়া ইউনিয়নের সঙ্গে সীমানা নিয়ে বিবাদ ছিল, এরই মধ্যে সেখানে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে গেছে, তাই সরকার দ্রুত সোনারগাঁও পৌরসভার নির্বাচনেরও ব্যবস্থা করবে বলে পৌরবাসী আশা করেন।

সোনারগাঁও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. ইউসুফ-উর-রহমান জানান, যেহেতু সোনারগাঁও পৌরসভার সীমানা নিয়ে আদালতে মামলা চলমান সুতরাং এটা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচনের কোনো সম্ভাবনাই নেই।

সোনারগাঁও পৌরসভার বর্তমান প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদ এলাহী জানান, সোনারগাঁওয়ের মতো একটি গূরুত্বপূর্ণ পৌরসভায় অবিলম্বে নির্বাচন প্রয়োজন, কিন্তু মামলার কারণে তা সম্ভব হচ্ছে না।

নয়াশতাব্দী/এমএস

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ