ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

১৭ বছরেও মেরামত হয়নি পলাশকান্দা ব্রিজ

প্রকাশনার সময়: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৯:৫২

ময়মনসিংহের ফুলপুরে ১৭ বছরেও মেরামত হয়নি সিংহেশ্বর ইউনিয়নের পলাশকান্দার ভাঙা ব্রিজটি। এতে দীর্ঘবছর ধরে এলাকাবাসীকে চলাচল পোহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগ।

জানা যায়, ফুলপুর উপজেলার সিংহেশ্বর ইউনিয়নের পলাশকান্দা গ্রামের পাশখলা খালের ওপর ২০০৪-০৫ অর্থবছরে নির্মিত হয় ব্রিজটি। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের গ্রামীণ সেতু নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ৩০ফুট দৈর্ঘ্যেরে এ সেতুটির নির্মাণ ব্যয় ছিলো ৬০ লাখ টাকা। ব্রিজের উভয় পাশে সংযোগ সড়কের সাথে মাটি ভরাট না থাকায় নির্মাণের অল্প ক’দিন পরই বন্যায় তা ভেঙে যায়। বহু কাঙ্খিত ওই ব্রিজ এলাকাবাসী একদিনও ব্যবহার করতে পারেননি। এলাকাবাসীর উদ্যোগে ধ্বসে পড়া ব্রিজের দু’পাশে বাঁশ-কাঠের সংযোগ সেতু নির্মাণ করে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছে অন্তত ১০ গ্রামের মানুষ।

স্থানীয়রা জানান, ব্রিজ ভেঙ্গে যাওয়ার পর বেশ কয়েকবার চেয়ারম্যান, মেম্বার ও এমপি পদে পরিবর্তন আসলেও ব্রিজটির অবস্থার পরিবর্তন হয়নি। বিষয়টি নিয়ে বারবার জনপ্রতিনিধিদের কাছে গেলেও মিলেছে শুধু আশ্বাস। কিন্তু বাস্তবে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি তারা।

জানা যায়, এই রাস্তা দিয়ে চানপুর, হরিরামপুর, জিগারকান্দা, বালিচান্দা, পলাশকান্দা, দনারভিটা, মাইঝপাড়া, পুরাপুটিয়া ও উগলিরপাড়সহ প্রায় ১০ গ্রামের মানুষ চলাচল করে থাকেন। ওই এলাকার ধান-চালসহ উৎপাদিত কৃষি পণ্য বাজারজাত করা এমনকি ছাত্রছাত্রীদের বিদ্যালয়ে যাতায়াতসহ গর্ভবতী মা, শিশু ও রোগী বহন করার আর ভিন্ন কোন পথ নেই। তাদের কষ্ট লাঘবের লক্ষ্যে ব্রিজটি নির্মাণ করা হলেও এখন সেটিই কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ধানের বস্তা মাথায় ষাটোর্ধ্ব এক মুরুব্বি ও লাকড়ির বোঝা মাথায় চল্লিশ বছর বয়সী এক নারী বলেন, ‘কি করবাম বাহু, বিরিজ ভাঙা। এইন্দা কুনু গাড়িগুড়ি চলে না। কিছু নিলে মাতাত কইরাই নেওন লাগে।’

পলাশকান্দা গ্রামের জলি জানান, যে বছর ব্রিজ হয়েছে সেই বছরই ভেঙে গেছে। একদিনও ব্যবহার করতে পারিনি।

সিংহেশ্বর ইউনিয়নের পলাশকান্দা গ্রামের মো. আব্দুর রশিদ জানান, ব্রিজের জন্য চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বর্ষা মৌসুমে তাদেরকে গৃহবন্দি অবস্থায় থাকতে হয়। কিন্তু বিগত ১৭ বছরেও সংস্কার হয়নি সেতুটি।

একই গ্রামের সুলতান মিয়া জানান, সেতুটি ধ্বসে পড়ায় স্থানীয় কৃষকদের উৎপাদিত খাদ্যশস্য, কৃষিপণ্যসহ বিভিন্ন কাঁচামাল বাজারজাতকরণে যাতায়ত করতে হয় ৫ মাইল ঘুরে।

ওই এলাকার বাসিন্দা মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, পলশাকান্দা গ্রামে পাশখলা খালের উপরে প্রায় ১৭ বছর আগে একটি ব্রিজ নির্মাণ করেন এক ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। ব্রিজের কাজ সপন্ন হলেও ব্রিজের দুই পাশে মাটি না দেওয়ার কারণে বন্যার প্রবল স্রোতে ব্রিজটি ধ্বসে হেলে পড়ে যায়।

পলাশকান্দা গ্রামের আরিফুল আলম সরকার বলেন, ব্রিজটিতে খুব নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় এ অবস্থা হয়েছে। এলাকাবাসী ব্রিজটির দ্রুত সংস্কার দাবি করেন।

সিংহেশ্বর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সাহা আলী জানান, আমি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর এ সেতুর বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি।

ফুলপুর উপজেলা প্রকৌশলী রাকিব উল হাফিজ জানান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ব্রিজের জন্য প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে।

নয়াশতাব্দী/এমএস

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ