ময়মনসিংহের ত্রিশালে রেলিং ভাঙা সেতুতে ঝুঁকিপূর্ণ পারাপার করছে গ্রামবাসি। ভেঙে গেছে সেতুর দুইপাশের রেলিং। এতে যে কোন সময় ঘটতে পারে বড় দুর্ঘটনা। উপজেলার কাঁঠাল ইউনিয়নের বাঘের বাজার সংলগ্ন পাগারিয়া নদীর ওপর প্রায় ২৫ বছর আগে নির্মিত হয়েছিল এই পাকা সেতু। কাঁঠাল-কানিহারী এ দুই ইউনিয়নের গ্রামবাসির সহজলভ্য নদী পারাপারের জন্য ব্যবহার করা হয় এই সেতু। তবে এখন সময়ের ব্যবধানে স্থায়িত্ব কমে দুর্বল হয়ে পড়েছে সেতুটি।
স্থানীয়রা জানান, একসময় বাঁশের সাঁকো পেরিয়ে ঝুঁকি নিয়ে নদী পার হতো কয়েক গ্রামের মানুষ। নদীর দু’পারের দেওয়ানিয়াবাড়ী ও দড়ি কাঁঠাল গ্রামের মানুষের নদী পারাপারে একমাত্র ভরসা ছিল ওই বাঁশের সাঁকো। দুই ইউনিয়নবাসির মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা ও নদী পারাপার সহজতর করতে স্থানীয় বাঘের বাজার সংলগ্ন ওই নদীর ওপর ১৯৯৪ সালের দিকে ৮০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৮ ফুট প্রস্থের একটি পাকা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়। নির্মাণকাজ শেষে ১৯৯৬ সালে সেতুটি সর্বসাধারণের চলাচলে উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। দীর্ঘসময় অতিক্রান্ত হওয়ায় তার স্থায়িত্ব কমে ক্রমশঃ দুর্বল হয়ে পড়েছে সেতুটি। শিক্ষার্থীরা ছাড়াও ওই ঝুঁকিপূর্ণ ওই সেতু দিয়ে প্রতিদিন পার হচ্ছে বিভিন্ন যানবাহনসহ শতশত মানুষ।
সরেজমিনে দেখা যায়, সেতুটির রেলিংয়ের প্রায় ৫০ শতাংশই ভেঙে গেছে। ফাটল ধরেছে সেতুর দু’পাশের গাইড ওয়ালে। সেই ঝুঁকিপূর্ণ সেতু দিয়ে চলাচল করছেন শিশু, বৃদ্ধ, শিক্ষার্থী, যানবাহনসহ শতশত মানুষ। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের সংযোগস্থল থেকে কাঁঠাল ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রামের ভেতর দিয়ে সড়কটি ময়মনসিংহ-গফরগাঁও সড়কে গিয়ে মিলেছে। সেতুটি ইউনিয়নের মধ্যে যেগাযোগ সহজতর করেছে। দিনের আলোতে দেখে সেতু পারাপার হলেও রাতে পড়তে হয় বিপাকে। সেতুর দুই পাশে আলোর ব্যবস্থা না থাকায় ঘুটঘুটে অন্ধকার নেমে আসে। তখন যানবাহনসহ পায়ে হেঁটে চলাচলে পড়তে হয় বেকায়দায়।
স্থানীয় শিক্ষার্থী খাদিজা আক্তার, ইয়াসমিন সুলতানা, রাজু মিয়া ও শামীম আহমেদ বলেন, আমরা দঁড়ি কাঠাল উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। প্রতিদিন রেলিং ভাঙ্গা এই সেতু দিয়ে আমরা স্কুলে যাই। আমাদের সেতু পাড় হতে অনেক ভয় লাগে। দীর্ঘদিন ধরেই সেতুর এই অবস্থা। আমাদের দাবি দ্রুত সময়ের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ পুরাতন ব্রিজটি ভেঙে নতুন একটি ব্রিজ নির্মান করা হোক।
ঐ সেতু দিয়ে চলাচলকারী অটোচালক আকরাম হোসেন বলেন, এ সেতুর দুইপাড়ের রাস্তা অনেক দিন যাবৎ খারাপ তবুও কোন রকম চলাযায়। কিন্তু ব্রিজের অবস্থা খুবই করুণ। এই ব্রিজ দিয়ে পাড় হতে অনেক ভয় লাগে। দিনের আলোতে কষ্ট করে চললেও রাতের অন্ধকারে চলাচল করা যায়না। সেতুর দুইপাড়ে আলোর কোন ব্যবস্থা নাই। মাঝে মাঝে মনে হয় এই বুঝি গাড়ি নিয়ে সেতুর নিচে পড়ে গেলাম। তবু ভয়ে ভয়ে পার হই। এখানে অনেকেই দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মনিরুজ্জামান জানান, খোঁজ খবর নিয়ে জেনেছি এ ব্রিজটি ঝুঁকিপূর্ণ। ব্রিজটি অনেক আগের তাই ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনা করে, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে।
নয়াশতাব্দী/এমএস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ