ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

মিষ্টি খেতেই ৫০ হাজার, পল্লী বিদ্যুতের সেই কমকর্তা বরখাস্ত

প্রকাশনার সময়: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৫:৩২

পাবনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর ঈশ্বরদীর দাশুড়িয়া জোনাল অফিসের উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) মো. সাজ্জাদুর রহমানের ঘুষের টাকা নেওয়ার দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার জেরে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ঘটনার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করেছে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি।

সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) পাবনা বিদ্যুৎ সমিতি- ১ মহাব্যবস্থাপক আকমল হোসেন এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি আরও বলেন, সমিতির প্রধান কার্যালয়ের নিদেশে ডিজিএম সাজ্জাদুর রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত করে দাশুড়িয়া পল্লী বিদ্যুৎ কার্যালয় থেকে ময়মনসিংহ তত্ত্বাবদায়কের কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে।

সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করবে জানিয়ে তিনি জানান, তদন্ত শেষে কমিটির রিপোর্ট পাওয়ার পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে কমিটিতে কারা আছেন তা নিশ্চিত করেননি তিনি।

তবে ডিজিএম সাজ্জাদুর রহমানের দাবি, তাকে ফাঁসাতে বকেয়া বিদ্যুৎ বিলের টাকা দিতে গিয়ে এ দৃশ্য ধারণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় তিনি থানায় অভিযোগ করেছেন।

ওই টাকা দিতে যান গ্রাহক আমিনুল ইসলাম রানা। তিনি উপজেলার দাশুড়িয়া ট্রাফিক মোড় এলাকার আনিসুর রহমান ওরফে হামেজ উদ্দিনে ছেলে।

আমিনুল ইসলাম রানা বলেন, ঘুষ দাবি করায় তিনি ওই টাকা দিতে গিয়েছিলেন। এ সময় হঠাৎ অপরিচিত একজন অফিস কক্ষে ঢুকে ঘুষের ৫০ হাজার টাকা দেওয়ার ভিডিও ধারণ করেন।

বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় দাশুড়িয়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর জোনাল অফিসে এ ঘটনা ঘটে।

ভিডিওতে দেখা যায়, গ্রাহক আমিনুর রহমান রানা ডিজিএম সাজ্জাদুর রহমানের হাতে ৫০০ টাকার এক বান্ডিল টাকা দিচ্ছেন। এ সময় একজন ব্যক্তি গ্রাহককে জিজ্ঞাসা করেন, কিসের টাকা দিচ্ছেন। তখন তিনি বলছেন, ডিজিএম স্যার মিষ্টি খেতে চাইছিল তাই। ভিডিও ধারণের বিষয়টি টের পেয়ে ডিজিএম ওই টাকা গ্রাহককে ফেরত দেন।

গ্রাহক আমিনুল ইসলাম রানা বলেন, বিদ্যুতের একটি বাণিজ্যিক সংযোগের জন্য দীর্ঘদিন ধরে ডিজিএমের কাছে ঘুরছিলাম। অফিসিয়াল কাগজপত্র সব কিছু ঠিকঠাক থাকার পরও তিনি সংযোগ দিচ্ছেন না। বাণিজ্যিক সংযোগের জন্য এক লাখ টাকা ঘুস দাবি করেন। ওইদিন ঘুষের ৫০ হাজার টাকা দিতে এসেছিলাম। এ সময় পেছন থেকে এক ব্যক্তি ভিডিও ধারণ করেন।

তবে ডিজিএম সাজ্জাদুর রহমান বলেন, গ্রাহক আমিনুল ইসলাম রানার বাবা আনিছুর রহমান ওরফে হামেজ উদ্দিনের নামে ৯ লাখ ৩ হাজার টাকার বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রয়েছে। এ টাকা কিস্তিতে পরিশোধের জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছিল। সে চিঠি অনুযায়ী তিনি (রানা) ৫০ হাজার টাকা কিস্তি দিতে এসেছিলেন এবং টাকার বান্ডিল তিনি আমার হাতে দেন। ভিডিও ধারণের দৃশ্য দেখার পর সহকর্মীদের ডাক দিলে টাকা নিয়ে গ্রাহক রানাসহ ওই ব্যক্তি পালিয়ে যায়।

তিনি বলেন, আমাকে পরিকল্পিতভাবে ফাঁসাতে এই ভিডিও করা হয়েছে। আমি থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।

এ বিষয়ে ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অরবিন্দ সরকার বলেন, ডিজিএম সাজ্জাদুর রহমানের একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। সেটি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ