জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার তারাকান্দিতে অবস্থিত যমুনা সার কারখানার (জেএফসিএল) শ্রমিকরা অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছে।
শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে ৪৮৬ জন শ্রমিক ছাটাইয়ের প্রতিবাদ ও পুনর্নিয়োগের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল শেষে প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে কারখানার প্রধান ফটক অবরোধ করে প্রতিবাদ সমাবেশ করে।
এ সময় কারখানার অবরুদ্ধ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যাহ্ন বিরতিতে বের হতে আধাঘণ্টা দেরি হয়। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা চাকরি ফেরত না পেলে বৃহত্তর কর্মসূচির হুশিয়ারি দেন। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে কারখানা এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
জেএফসিএল সূত্র জানায়, বাংলাদেশ রাসায়নিক শিল্প সংস্থার (বিসিআইসি) নিয়ন্ত্রাধীন কেপিআই-১ মানের যমুনা সারকারখানায় ১৯৯১ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকেই দৈনিক হাজিরাভিত্তিক শ্রমিক নিয়োগ করে। দরপত্র আহ্বান করে নির্বাচিত ঠিকাদারের মাধ্যমে দুই বছরের জন্য এসব শ্রমিক নিয়োগ দেয়া হয়। সর্বশেষ সাবেক প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান এমপির প্রতিনিধি সাখাওয়াত আলম মুকুলের মালিকানাধীন মেসার্স জান্নাত এন্টারপ্রাইজের মাধ্যমে ৪৮৬ জন শ্রমিক কর্মরত ছিলো। তাদের মেয়াদকাল শেষ হয়ে যাওয়ার ১ সেপ্টেম্বর থেকে সকল শ্রমিককে কারখানায় প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা দেয় কর্তৃপক্ষ। এদিকে নতুন শ্রমিক নিয়োগ বন্ধ রাখতে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান আদালতে মামলা দায়ের করে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জানান, এমপির কথিত প্রতিনিধি (ঠিকাদার) নিজেদের স্বার্থে মামলা করে শ্রমিক নিয়োগ বন্ধ করেছে। এদিকে কারখানা কর্তৃপক্ষ দরপত্র আহ্বান না করে বিধিবহির্ভূতভাবে নিজেদের পছন্দমতো লোকজন নিয়োগের পায়তারা করছে। অথচ কর্মহীন শ্রমিকদের কাজ হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে।
ইউপি চেয়ারম্যান আশরাফুল আলম মানিক জানান, শ্রমিকদের যোক্তিক দাবি পূরণ না হওয়ায় ক্ষোভ বেড়েই চলছে। দ্রুত সমাধান না হলে এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি হতে পারে।
এ ব্যাপারে কারখানার ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) দেলোয়ার হোসেন মুঠোফোনে জানান, চুক্তিভিত্তিক ৪৮৬ জন শ্রমিকের মধ্যে ১৯৩ জনের নিয়োগ বিধি মোতাবেক আগেই বাতিল হয়েছে। বাকি ২৯৩ জনের মেয়াদকাল গত ৩১ আগস্ট শেষ হয়। নতুন ঠিকাদার নিযুক্ত করতে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছিলো, কিন্তু ঠিকাদারের মামলার কারণে নতুন শ্রমিক নিয়োগ বন্ধ আছে।
সরিষাবাড়ী থানার ওসি (তদন্ত) আব্দুল মজিদ জানান, শান্তিপূর্ণভাবে শ্রমিকরা কর্মসূচি পালন করেছে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। এছাড়াও সমাবেশে শ্রমিকদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন পোগলদিঘা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আশরাফুল আলম মানিক, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সামস উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আলিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আল মামুন, ডোয়াইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল জলিল, সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন রতন, মহাদান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন, পোগলদিঘা মহাবিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যক্ষ মোয়াজ্জেম হোসেন, ট্রান্সপোর্ট সমিতির সভাপতি আবুল হোসেন সরকার, কান্দারপাড়া বাজার সমিতির সভাপতি মাহবুবুর রহমান, পরিবহন শ্রমিক সংগঠনের আহ্বায়ক আক্কাস উদ্দিন প্রমুখ।
নয়া শতাব্দী/জেআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ