ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

সুপেয় পানির জন্য হাহাকার

প্রকাশনার সময়: ০৮ আগস্ট ২০২১, ১৯:১৫ | আপডেট: ০৮ আগস্ট ২০২১, ১৯:১৯

ঘূর্ণিঝড় আইলা, সিডর, বুলুবুল, ফণি, আম্পান ও ইয়াশে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার মানুষ। তাদের দীর্ঘ দিনের চাওয়া বিশুদ্ধ খাবার পানি। সারা বছরই খাবার পানির তীব্র সংকট দেখা দেয় সুন্দরবন নিয়ে গঠিত দেশের দক্ষিণের সর্বশেষ উপজেলা শ্যমনগরে।

উপকূলের পানিতে মাত্রাতিরিক্ত লবণাক্ততা থাকায় তা পান করার অনুপযোগি হয়ে পড়েছে।

বাধ্য হয়ে অনেকেই পুকুরের পানি পান করছেন। আবার অনেকের ৩ থেকে ৪ কিলোমিটার দূর থেকে খাবার পানি সংগ্রহ করতে হয়।

শ্যমানগর উপজেলার মুন্সিগঞ্জ, কালিঞ্চি, মথুরাপুর ও কুপোট এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

দীর্ঘ লাইন দিয়ে মহিলা ও শিশুরা খাবার পানি এনে থাকেন বাড়িতে।

শ্যামনগরের বয়ারসিং গ্রামের রেজাউল করিম জানান, এলাকায় নলকূপের পানিও লবন। যে কারণে পুকুরের পানি ফিল্টারিং করে খেতে হয়।

তিনি আরও বলেন, তার ছয় সদস্যের পরিবারের জন্য প্রতিদিন তাদেরকে তিন কলস করে পানি সংগ্রহ করতে হয়।

মুন্সিগঞ্জ ফুলবাড়ি গ্রামের খাদিজা বেগম জানান পাঁচ জনের সংসারে প্রতিদিন দু’কলস খাবার পানির দরকার। বাড়ি থেকে এক কিলোমিটার দূরে পুকুর থেকে পানি এনে খেতে হয়। তবে সে পানিও লবণাক্ত।

তিনি বলেন, আইলা’র পর দু’বার পুকুরটি খনন করার পরও লবণ কাটেনি। তাই বাধ্য হয়ে ওই লবনাক্ত পানি পান করতে হয়।

একই গ্রামের রহিমা খাতুন বলেন, তাদের এলাকায় গভীর বা অগভীর নলকূপের পানি লবনাক্ত। যে কারণে গোটা এলাকার মানুষ বর্ষাকালে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ করে খায়। পরবর্তী সময়ে বর্ষাকালের সংরক্ষিত পানির পাশাপাশি পুকুরে স্থাপনকৃত পিএসএফ এর পানি পান করে। তবে গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে পুকুরের পানি বিশুদ্ধ নেই। উপকুলবর্তী শ্যামনগর উপজেলায় ১৪১৮টি গভীর, ৩২২টি অগভীর নলকূপ চালু রয়েছে। এছাড়া, এসএসটি ৩৯৭ এবং প্রায় চারশত পিএসএফ সচল রয়েছে। তবে বৃষ্টির পানি ও নদীর জোয়ারের পানি তে প্লাবিত। গোটা উপকূলে দেখা দিয়েছে সুপেয় খাবার পানির সংকট।

উপকূলের বাসিন্দারা বলেন জনপ্রতিনিধিরা আসেন ভোটের সময় অনেক আশ্বাস দেন কিন্তু খাবার পানির সংকট থেকেই যায় বছরের পর বছর।

এ বিষয়ে সাতক্ষীরা-২ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ রবি বলেন, উপকূলীয় এলাকার পানি সমস্যা সমাধানে ভূ-উপরিস্থ পানি ব্যবহারের ওপর জোর দেয়া হচ্ছে এবং এই পানি প্রতিটি পরিবারের জন্য সহজলভ্য করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে চল্লিশটি পুকুর খনন করা হচ্ছে। পাশাপাশি বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের জন্য সাড়ে ৫ হাজার সংরক্ষণাগার তৈরি করা হচ্ছে। এছাড়া প্রয়োজনীয় এলাকায় গভীর ও অগভীর নলকূপের ব্যবস্থা থাকছে।

নয়া শতাব্দী/এম

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ