ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

গণধর্ষণের শিকার ছাত্রীর আত্মহত্যা, ধর্ষক গ্রেফতার

প্রকাশনার সময়: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৯:৪১

কতিপয় বখাটে যুবকদের দ্বারা গণধর্ষণের শিকার হয়ে ঘরে থাকা ঘাস মারার প্যারাকোট নামক বিষ পান করে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান মিম আক্তার (১৫) নামে নবম শ্রেণির এক ছাত্রী। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৯ আগস্ট সকাল ১০:৪৫ মিনিটে মৃত্যুবরণ করেন মিম। নিহত মিম মোহাম্মদ রেজাউল করিম ও মোসা. বিউটি বেগম দম্পতির কন্যা। তিনি গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর থানাধীন দিগনগর উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত ছিলেন।

ওই ঘটনায় দায়েরকৃত ধর্ষণ ও আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলায় ঘটনার প্রধান পরিকল্পনাকারী ও ধর্ষক এম জেড এইচ রাব্বি (২৩) কে গ্রেফতার করেছে সিআইডি।

বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সিআইডির তরফ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।

জানা যায়, গত ২৩ আগস্ট ২০২২ তারিখে রাত আনুমানিক ১০টায় ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা থানাধীন হাজরাকান্দা এলাকায় কতিপয় বখাটে যুবকদের দ্বারা গণধর্ষণের শিকার হয় মিম আক্তার (১৫)। প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেওয়ার জন্য ঘরের বাইরে এলে রাব্বি ও তার সহযোগীরা তার মুখ আটকে পার্শ্ববর্তী জঙ্গলে নিয়ে সংঘবদ্ধভাবে পালাক্রমে গণধর্ষণ করে। এসময় বিষয়টি কাউকে বললে তার ও তার পরিবারের সদস্যদের খুন করার হুমকিও প্রদান করে অভিযুক্তরা।

এ ঘটনায় লজ্জায় অপমানে ঘরে থাকা ঘাস মারার প্যারাকোট নামক বিষ পান করে গুরুতর অসুস্থ হয়ে রেফার্ড সূত্রে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৯ তারিখ সকাল ১০:৪৫ মিনিটে মৃত্যুবরণ করে মিম। মৃত্যুর আগে জবানবন্দী প্রদান করে অভিযুক্তদের পরিচয় বলে যায় ভুক্তভোগী।

সেসময় ঘটনাটি দেশজুড়ে বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে এবং বিভিন্ন প্রিন্ট, অনলাইন ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় বেশ গুরুত্বের সাথে প্রচারিত হয়।

সিআইডি জানায়, ঘটনাগুলো জানার পর এডিশনাল আইজিপি সিআইডি মোহাম্মদ আলী মিয়া বিপিএম পিপিএম মহোদয়ের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ও নির্দেশনায় সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার, জনাব মুক্তা ধর পিপিএম (বার) এর নেতৃত্বে এলআইসি’র একটি চৌকস দল উক্ত ঘটনার ছায়া তদন্ত শুরু করে। ভিকটিমের পরিবার ও বিভিন্ন উৎস হতে ঘটনা সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্য সরেজমিনে সংগ্রহ করা হয়। পরবর্তীতে সংগৃহীত বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে ঘটনার সাথে ফরিদপুর জেলার নগরকান্দা থানাধীন ছোট পাইককান্দি এলাকার নুরুল ইসলামের ছেলে এম জেড এইচ রাব্বি (২৩) সহ বেশ কয়েকজনের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়।

প্রেস বিজ্ঞপ্তি সূত্রে আরও জানা যায়, সিআইডির একটি চৌকস টীম ফরিদপুর সদর থানা এলাকা হতে উক্ত ঘটনার প্রধান পরিকল্পনাকারী ও ধর্ষক রাব্বিকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানায় যে, ভিক্টিম মিম আক্তার (১৫) তার সৎ মামাতো বোন। সে মিমকে পছন্দ করায় তাকে প্রেমের প্রস্তাব দিলে মিম তা প্রত্যাখ্যান করে। পরবর্তীতে রাব্বি তার বাবা-মা’র মাধ্যমে মিমের পরিবারের নিকট বিয়ের প্রস্তাব দিলে মিম প্রাপ্ত বয়স্কা না হওয়ায় তার পরিবার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। এতে রাব্বি আরো ক্ষিপ্ত হয়ে মিম ও তার পরিবারের উপর প্রতিশোধ নেয়ার সুযোগ খুঁজতে থাকে। অবশেষে ২৩ আগস্ট রাত আনুমানিক ১০ টায় তার সহযোগীসহ ভিকটিমের বসত বাড়িতে গিয়ে ওৎ পেতে থাকে। পড়ে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেওয়ার জন্য ঘরের বাইরে এলে রাব্বি ও তার সহযোগীরা ভিকটিমের মুখ আটকে পার্শ্ববর্তী জঙ্গলে নিয়ে সংঘবদ্ধভাবে পালাক্রমে গণধর্ষণ করে। এসময় বিষয়টি কাউকে বললে তার ও তার পরিবারের সদস্যদের খুন করার হুমকিও প্রদান করে অভিযুক্তরা।

নয়াশতাব্দী/এমএস

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ