রাজধানীতে পৃথক তিনটি এলাকায় ৫ টি প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়ে ২০ লাখ ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) ভ্রাম্যমান আদালত। এসময় রিয়াজুল ইসলাম (৪৫) নামে এক হারবাল ফ্যাক্টরীর মালিককে আটক করা হয়েছে।
বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকালে র্যাব-৩ এর সহকারী পুলিশ সুপার, সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) ফারজানা হক গণমাধ্যমকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মঙ্গলবার বিকেল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত রাজধানীর হাতিরঝিল, যাত্রাবাড়ী এবং নিউমার্কেট থানা এলাকায় ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে র্যাব-৩।
র্যাব সূত্র জানায়, গ্রেফতারকৃত আসামি রিজন হারবাল ফ্যাক্টরীর মালিক মো. রিয়াজুল ইসলাম (৪৫) কে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। পরে সে জরিমানার টাকা পরিশোধ না করায় বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস এন্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন আইন ২০১৮ এর ১৫ এবং ২৭ ধারা মোতাবেক তাকে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন র্যাবের ভ্রাম্যমান আদালত। পরে তাকে ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।
র্যাব সদর দপ্তরের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মো. মাজাহারুল ইসলামের নেতৃত্বে অভিযানকালে বিপুল পরিমান জেলিযুক্ত চিংড়ি মাছ, নকল প্রসাধনী সামগ্রী এবং ভেজাল ঔষধ জব্দ করা হয়। পরবর্তীতে এসব ধ্বংস করা হয়েছে।
তিনি জানান, গোপনে র্যাব-৩ এর একটি দল জানতে পারে, রাজধানীর হাতিরঝিল, যাত্রাবাড়ী এবং নিউমার্কেট থানা এলাকায় কিছু ব্যবসায়ী দীর্ঘদিন যাবৎ বিদেশী ব্র্যান্ডের নাম ব্যবহার করে নকল কসমেটিক্স উৎপাদন এবং বিক্রয়, মাছের আড়ৎ এ চিংড়ি মাছের মধ্যে জেলিযুক্ত করে বিক্রয়, ভেজাল ঔষধ উৎপাদন এবং বিক্রয় করে আসছিল। এমন সুনির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-৩ এর একটি দল মঙ্গলবার বিকেল থেকে হাতিরঝিল থানার এলাকায় রিজন হারবাল ফ্যাক্টরীতে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করেন। এএসপি ফারজানা হক বলেন, নকল কসমেটিক্স উৎপাদন এবং বিক্রয় করার অপরাধে রিজন হারবাল নামক প্রতিষ্ঠানের মালিক মো. রিয়াজুল ইসলামকে ১ লাখ টাকা জরিমানা, ম্যানেজার মো. মামুনুর রহমান (৪৫) কে ১ লাখ টাকা জরিমানা, সহযোগী আহাম্মেদ হাওলাদার (২৬) কে ১ লাখ টাকা জরিমানা, লাল মিয়া (২৪) কে ১ লাখ টাকা জরিমানা, মো. মালেক (৩৫) কে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
তিনি জানান, যাত্রাবাড়ী থানা এলাকায় আল্লাহর দান মাছের আড়ৎ এবং ‘মন্ডল ফিস’ নামক দোকানে চিংড়ি মাছে জেলিযুক্ত করে বিক্রয় করার অপরাধে ওই প্রতিষ্ঠানের মালিক মো. মুসা গাজী (৩৬) কে ১০ হাজার টাকা জরিমানা ও মো. মোস্তফা কামাল (৩০) কে ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
র্যাবের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, নিউমার্কেট থানা এলাকায় স্টার ল্যাবরেটরীজ নামক লাইসেন্সবিহীন একটি কোম্পানী ভেজাল ঔষধ তৈরি করতো। সে অপরাধে এই ল্যাবরেটরীজ এর মালিক মো. সাদমান (১৮) কে ১ লাখ টাকা জরিমানা, আব্দুল্লাহ আল মামুন (৫০) কে ১ লাখ টাকা জরিমানা ও মো. ওজায়ের (৩২) কে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
তিনি বলেন, এছাড়াও ক্রিসেন্ট ফার্মা নামক একটি প্রতিষ্ঠানকে ভেজাল ঔষধ আমদানীর অপরাধে ওই প্রতিষ্ঠানের মালিক মো. সাইফুল ইসলাম (৪৫) কে ২ লাখ টাকা এবং তার সহযোগী মো. জাকির হোসেন (৫৭) কে ২ লাখ টাকা, এস এম আবু হানিফ (৪৫) কে ২ লাখ টাকা, মো. মাহমুদুর রহমান (৪০) কে ২ লাখ টাকা ও মো. শাকিল আহমেদ (২৫) কে ২ লাখ টাকা জরিমানা করে র্যাবের ভ্রাম্যমান আদালত।
অভিযানে রিজন হারবাল ফ্যাক্টরী থেকে বিপুল পরিমান নকল কসমেটিক্স, আল্লার দান মাছের আড়ৎ এবং মন্ডল ফিস থেকে বিপুল পরিমান জেলিযুক্ত চিংড়ি মাছ, স্টার ল্যাবরেটরীজ ও ক্রিসেন্ট ফার্মা থেকে বিপুল পরিমানে ভেজাল ঔষধ জব্দ করা হয়। এসময় ৫ টি প্রতিষ্ঠান থেকে সর্বমোট ২০ লাখ ১০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। পরবর্তীতে জব্দকৃত ভেজাল সামগ্রীসমূহকে ধ্বংস করা হয়।নয়াশতাব্দী/এমএস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ