অথৈই সাগরের জলরাশির সাথে মুহুর্মুহু ভেঙে পড়ছে মোহনীয় গর্জন। আর বালুকণায় ছুঁয়ে ছুঁয়ে যায় চিকিমিকি রোদের কিরণ- এ যেন বিধাতার নিজ হাতে গড়া মায়াবী এক প্রকৃতির নিদর্শন। যার পানে দুই নয়ন অবাক তাকিয়ে রয়। পড়ন্ত বিকেলে পশ্চিমের আকাশে লাল বৃত্তটা যেন একখণ্ড আগুনের পসরা সাজিয়ে রঙ ঢেলে দেয় আগন্তুকদের হৃদয়ে। আর তাই কুয়াকাটার মনমুগ্ধকর এমনসব দৃশ্য উপভোগ করতেই দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসেন অসংখ্য পর্যটন প্রেমী।
তবে এতোসব প্রাকৃতিক সৌন্দার্যের মাঝেও বিনোদনে ঘাটতি রয়েছে সাগরকণ্যা খ্যাত পর্যটন নগরীতে বলে মনে করছেন, ভ্রমনপিপাসুরা। আগত অতিথিদের দাবি, শুধু প্রাকৃতিকভাবেই নয়, মানব সৃষ্ট কৃত্তিম নয়নাভিরাম উপভোগ্য দর্শণীয় অনেক কিছুই দেখতে চাইছেন পর্যটকরা। বলছেন, কেবল সৈকতের বালীয়ারির বেঞ্চিতে বসেই সমুদ্র দেখে তুষ্ট নন তারা, আনন্দের মাত্রা যোগে মিনি চিড়িয়াখানাসহ পার্ক প্রভৃতির বিনোদনের স্থান চাইছেন।
ঢাকার বউবাজার থেকে বন্ধুদের নিয়ে বেড়াতে আসা সাজিদ জানান, বহু দিনের স্বপ্ন নিয়ে কুয়াকাটায় এসছি। এখানে এসে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে হৃদয় জুড়িয়েছে। কুয়াকাটার ঐতিহ্য রাখাইনদের খননকৃত আদিম কুয়াটাই ছিল সবচেয়ে উপভোগ্য। তবে কুয়াকাটায় বেশ কিছুদিন থেকে ঘুরে বেড়াবার মত পর্যাপ্ত ভ্রমণ স্পর্ট নির্মাণের দাবি জানান তিনি।
হবিগঞ্জ থেকে আসা কামরুল ইসলাম ও নাজরিন দম্পতি বলেন, শুক্রবার সকালে সন্তানদের নিয়ে কুয়াকাটায় এসেছেন তারা। বেশ উপভোগ করছেন নৈসর্গিক কুয়াকাটার দৃশ্য। তবে কুয়াকাটায় অন্তত মিনি চিড়িয়াখানাসহ শিশুদের পার্ক নির্মাণের লক্ষে সরকারের প্রতি অনুরোধ জানান তারা।
এদিকে শুক্রবার সকালে কুয়াকাটার সৈকতে দেখা যায় বালি নিয়ে খেলায় মেতেছে অনেক শিশু। বাবা মায়ের সাথে বেড়াতে আসা কোমলমতি শিশুদের উচ্ছাস যেন থামছেই না। মাঝে মাঝে পরিবারের স্বজনদের হাত ছেড়ে ছুটে বেড়াচ্ছে সৈকতের বালিয়ারীতে। অনেকেই আবার বায়না ধরছে সমুদ্রের জলে পা ভেজাবে বলে। আর এভাবেই প্রতিদিন কুয়াকাটার সৈকতে ভ্রমণে এসে প্রাণ ভরে আনন্দ উল্লাসে মেতে উঠছেন পরিবার পরিজন নিয়ে আসা পর্যটন প্রেমীরা।
এদিকে পর্যটকদের দাবি যৌক্তিক বলে সহমত পোষণ করেছেন কুয়াকাটার মেয়র আনোয়ার হাওলাদার। কুয়াকাটায় চিড়িয়াখানা নির্মাণের জন্য সরকারের প্রতি জোর অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
নয়া শতাব্দী/জেআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ