আর্থিক অনটন ও দারিদ্রতার কষাঘাতে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করার পর আর লেখাপড়া চালানো সম্ভব হয়নি। জীবিকার তাগিদে চাকরি পেছনে ছোটে আলমগীর। তবে চাকরি নামের সেই সোনার হরিণ ধরতে পারিনে সে। ফলে বাপের এক খণ্ড জমিতে কৃষি কাজে মনোনিবেশ করেন। মেধা ও পরিশ্রম দ্বারা বর্ষাকালীন শসা উৎপাদন করে চমক লাগিয়ে দিয়েছে আলমগীর।
তার বাড়ি কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার পুমদী ইউনিয়নের রামপুর গ্রামে। তার পিতার নাম সৈয়দুজ্জামান। নিজস্ব অর্থায়নে ও উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের প্রযুক্তিগত আধুনিক জ্ঞানের সহায়তায় বাড়ির পাশে গত জুলাই মাসের শুরুতে ৫২ শতক পতিত জমিতে শসার আবাদ শুরু করেন।
বর্ষার মৌসুমে ফেন্টোসি-২, থাইল্যান্ড-১, ৫৭৭ এবং আগাম ৩৫ জাতের শসার বীজ বপন করা হয় জমিতে। পলিথিন সেডে মালচিং পদ্ধতিতে বেড তৈরি করে প্রয়োজনীয় রাসায়নিক ও জৈব সার একসাথে প্রয়োগ করা হয়। এতে করে জমিতে বার বার সার প্রয়োগ করতে হয় না। আবাদকৃত জমিতে মালচিং সেড দিয়ে ডেকে দেয়া হয়। অতি বৃষ্টিতেও মাটির জো নষ্ট হয় না এবং অতিরিক্ত আগাছার পরিমাণ কম থাকে বিদায় কৃষকের উৎপাদন খরচ কম হয়।
ফেন্টোসি-২ জাতের শসা রোপনের ৩৫ দিনের মধ্যে ফুল আসে এবং ৬৫দিন পর্যন্ত ভালো ফলন পাওয়া যায়। অন্যান্য জাতের হাইব্রিড শসার জীবনকাল ৭৫-৮০দিন। কম সময়ে ফলন বেশি। মোট জমি ৪ ভাগে ভাগ করে প্রতিবেড ৭দিন অন্তর অন্তর করে বীজ রোপন করা হয়। এতে করে একদিন পর পর শসা উত্তোলন ও বাজারজাতকরণের সুবিধা হয়।
বিক্রয়ের সুবিধা ও বাজার পেতে বীজ রোপনের দিন ব্যবধান করা হয়। এখনকার উৎপাদিত শসা পাইকারিভাবে দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হয়ে থাকে। বর্তমানে ৩৭ টাকা কেজি দরে পাইকারি বাজার রয়েছে।
রামপুর গ্রামের কৃষক আলমগীর হোসেন জানান, ইদানিং বর্ষা মৌসুমে ২ লক্ষ টাকা শসা বিক্রি করে লাভবান হয়েছি।
জানতে চাইলে রামপুর ব্লকে কর্মরত উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আলিমুল শাহান বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী গ্রামের একখণ্ড জমিও যাতে পতিত না থাকে এবং সারা বছর সবজি উৎপাদনের লক্ষে রামপুর গ্রামের কৃষকগণকে বিভিন্ন জাতের সবজি চাষে উদ্ধুদ্ধ করা হয়েছে।
নয়া শতাব্দী/জেআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ