ঢাকা, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বাঁশের খুঁটিতে বিদ্যুতের লাইন, ঝুঁকিতে স্থানীয়রা

প্রকাশনার সময়: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৫:৫৩

ময়মনসিংহের ত্রিশাল পৌর এলাকার ৮ নং ওয়ার্ড শুকতারা বিদ্যানিকেতন সড়কে বাঁশের খুঁটির মাধ্যমে চলছে বিদ্যুতের মেইন লাইন আর সংযোগ দেওয়া হয়েছে বাঁশের খুঁটির মাধ্যমে। এতে জীবনের ঝুঁকিতে রয়েছে শিক্ষার্থীসহ হাজারো মানুষ।

গত এক বছর আগে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড ত্রিশাল বিদ্যুৎ বিতরণ ও বিক্রয় বিভাগের সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী এবিএম ফারুক হোসেন লোক পাঠিয়ে দ্রুত সমস্যা সমাধানের কথা বললেও এক বছরেও হয়নি সমাধান। ঝুঁকি নিয়েই শিক্ষার্থীদের যেতে হচ্ছে স্কুলে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এটি শুকতারা বিদ্যানিকেতন স্কুলের একমাত্র সড়ক। এ সড়ক দিয়ে শতশত ছাত্রছাত্রী যাতায়াত করে। বাঁশের খুঁটির মধ্যে নিচুতে ঝুলছে বিদ্যুতের মেইন লাইন। তার হাত দিয়ে ধরা যায়। যে কোন সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। এর আগেও তার ছিঁড়ে পড়েছে কয়েকবার। দীর্ঘদিন ধরেই বিদ্যুতের ঝুকিপূর্ণ তার সরানোর দাবি জানিয়ে আসছেন স্থানীয়রা। তবে কর্তৃপক্ষ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। এর ফলে যেকোনও সময় বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা প্রকাশ করছেন তারা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ত্রিশাল পৌর এলাকার ৮ নং ওয়ার্ড শুকতারা বিদ্যানিকেতন এলাকায় সড়কের উপর বাশের খুঁটিতে মেইন লাইন ও অনেক বাসা বাড়িতেই এমন ঝুঁকিপূর্ণভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়েছে পিডিবি। বৈদ্যুতিক খুঁটি না বসিয়ে বাঁশ দিয়ে বিদ্যুতের তার টানিয়ে নেয়া হয়েছে মেইন লাইন। তারের ভারে বাঁশগুলো হেলে পড়েছে। কোথাও বা হেলে থাকা বাঁশ আরও একটা বাঁশ দিয়ে ঠেকনা দেওয়া হয়েছে। ভারে ঘরের চালের উপর ঝুলছে বিদ্যুতের মেইন তার। ঝুকিতে দিন কাটছে ঘরে থাকা লোক জনের। লতাপাতা জড়িয়ে বৈদ্যুতিক তারগুলোকে আরও ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় ফেলেছে।

দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যুতের খুঁটির জন্য চেষ্টা করছিলেন ওই এলাকার বাসিন্দারা। কিন্তু খুঁটিতে তার না ঝুলিয়ে কর্তৃপক্ষ বাঁশ বসিয়ে ঠিকা দিয়ে রেখেছে। ঝুঁকিতে রয়েছে স্থানীয় শুকতারা বিদ্যানিকেতন স্কুলের শিক্ষার্থীরাসহ এলাকাবাসী। স্থানীয়দের অভিযোগ কয়েকবার লিখিত আবেদন করা হলেও বিদ্যুৎ অফিস নেয়নি কোন ব্যবস্থা।

স্থানীয় বাসিন্দা গোলাম মোস্তফা জানান, কয়েক বছর ধরেই আমার ঘরের চালের উপর দিয়ে পিডিবির মেইন লাইন গিয়ে বিদ্যুতের তার টিনের চালের সাথে ছুঁই ছুঁই করছে। অনেকবার বিদ্যুৎ অফিসকে জানিয়েছি তারা এসে দেখে যায় কিন্তু কোন ব্যবস্থা নেয় না। বিদ্যুতের সঞ্চালন লাইন অনেক নিচুতে থাকায় ঘর মেরামত করতে পারছি না । নতুন করে ঘর তুলতে পারছি না। আমরা কয়েকজন মিলে বাশের খুঁটি দিয়ে কোন রকম তার আটকে রেখেছি। তার ছিরেও পড়েছে কয়েকবার। সব সময় টেনশনে থাকি যেকোন সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।

স্থানীয় শুকতারা বিদ্যানিকেতন স্কুলের প্রধান শিক্ষক কামাল হোসেন জানান, স্কুলের রাস্তায় পিডিবির মেইন লাইনের তার বাশের খুঁটিতে ঝুলে- এটা খুব দুঃখজনক। আমি স্থানীয় বাসিন্দারের নিয়ে কয়েকবার লিখিতভাবে বিদ্যুৎ অফিসকে জানিয়েছি তবে তারা কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। কিছুদিন পর পর বাশের খুঁটি পচে নষ্ট হয়ে যায়, বিদ্যুতের তার ছিড়েও পড়েছে কয়েকবার। স্কুলের একমাত্র চলাচলের রাস্তা এটি। শিক্ষার্থীরা সারা দিন আসা যাওয়া করে। যেকোন সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।

পৌর ৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর খালেদ মাহমুদ সুমন জানান, আমি বিদ্যুৎ অফিসকে এ বিষয়টি অনেকবার জানিয়েছি। তারা এসে দেখে গেছেন। উনারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে জানিয়েছেন।

বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড ত্রিশাল বিদ্যুৎ বিতরণ ও বিক্রয় বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রুবেল আহম্মেদ জানান, এইটা প্রজেক্টের কাজ। আমার আরএমজের বাইরে। আমি প্রজেক্ট ম্যানেজারকে আমিও বলেছি ও এমপি সাহেব বলেছেন দ্রুত সময়ে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য। এটা আমার নিয়ন্¿নের বাইরে। এটা যারা প্রজেক্ট নিয়েছে তারাই কাজ করবে।

বিদ্যুত প্রজেক্ট ম্যানেজার আনোয়ার আকাশ বলেন, আমি সরেজমিনে লোক পাঠিয়ে বিষয়টি দেখেছি। এক সপ্তাহের মাঝে খুঁটি দিয়ে তার সড়ানোর ব্যবস্থা করবো। ঝুঁকি নিয়ে শিক্ষার্থীরা রাস্তা পাড়াপাড় করছে।

গত দেড় বছরে আপনার এ বিষয়টি নজরে আসে নাই- এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, লোক পাঠিয়ে বিষয়টি দেখেছি। কিন্তু লেবাররা রিস্কের কাজ করতে চায় না। এক সপ্তাহের মধ্যে কাজটি করে দেবো।

নয়া শতাব্দী/জেআই

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ