খুলনার উপকুলীয় উপজেলা দাকোপের গুনারী গ্রামের আদিত্য নারায়ন সরদার। ঢাকী নদীর ভয়াবহ ভাঙনে চলে গেছে তার বসত ভিটেসহ অর্ধশত বিঘা চাষাবাদের জমি। একই এলাকার নকুল চন্দ্র মন্ডল। নদী ভাঙনের কারণে দফায় দফায় বসতভিটা বদল করে এখন মাথা গোজার মত নিজস্ব সম্পদ বলতে কিছু নেই। ভয়াবহ শিপসা এবং ঢাকী নদীর মোহনা গুনারী কালীবাড়ি এলাকার দীনেশ নারায়ন সরদার, ডাঃ মোশারফ হোসেন, প্রদীপ মন্ডল, আঃ রশিদ শেখসহ সেখানে বসবাসকারী সকলের কণ্ঠে একই সুর। এক সময়ের সম্ভ্রান্ত পরিবারগুলো নদী ভাঙনে সব হারিয়ে এখন নিঃস্ব প্রায়।
সর্বহারা এ সব মানুষেরা বাঁচার আকুতি নিয়ে চালিয়ে যাচ্ছে সংগ্রাম। ওই এলাকার নারী পুরুষ সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ভাঙন কবলিত এলাকায় দাঁড়িয়ে করেছে মানববন্ধন। তাদের ক্ষোভ- নদীর গতি প্রকৃতি না বুঝে শত শত কোটি ঋণের টাকায় বাস্তবায়িত টেকসই বেড়ীবাঁধ কামারখোলা সুতারখালী ইউনিয়নবাসীর নিরাপত্ত্বায় কোন কাজে আসেনি। যে কারণে দু’টি ইউনিয়নের সংগ্রামী মানুষেরা আগে নদী শাসন করে ভাঙন রোধে ডাম্পিংসহ পরিকল্পিত নিরাপদ ব্যবস্থা নিশ্চিত করে টেকসই বাঁধ নির্মানের দাবি জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার বেলা ১২ টায় কালীবাড়ি ভাঙন এলাকায় কামারখোলা ইউপি চেয়ারম্যান পঞ্চানন মন্ডলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন ও সমাবেশে বক্তৃতা করেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও দাকোপ উপজেলা আ’লীগের সভাপতি আলহাজ্ব শেখ আবুল হোসেন, আ’লীগ নেত্রী জয়ন্তী রানী সরদার, শফিকুল ইসলাম আক্কেল, কবির হোসেন, গোলাপ হোসেন শেখ, ইউপি সদস্য সুশান্ত কুমার ঢালী, শিক্ষক আদিত্য নারায়ন সরদার, মনিমোহন সরদার, মনিরুল শিকদার, দীনেশ নারায়ন সরদার, বিকাশ মিস্ত্রি, তন্ময় মন্ডল, রশিদ শেখ, রফিকুল ইসলাম, নয়ন শেখ, আশিকুর রহমান, নিমাই মন্ডল, মনিন্দ্র মন্ডল, জয়ন্ত মন্ডল, বিকাশ রায়সহ আরো অনেকে।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া শত শত নারী পুরুষের কণ্ঠে উচ্চারিত হয়েছে আমরা বাঁচতে চাই। জন্ম মাটিতে টিকে থাকতে তারা পাউবোর ৩২ নং পোল্ডার তথা কামারখোলা ও সুতারখালী ইউনিয়নে বিশ্ব ব্যাংকের ঋণের টাকায় নির্মিত টেকসই বাঁধের ভয়াবহ ভাঙন কবলিত গুনারী, কালীবাড়ী, নলিয়ান, জালিয়াখালী, কালাবগী, সুতারখালী, কামারখোলা জোড়াগেট ডিএস-১ এলাকার ভাঙন রোধে কার্যক্রর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। অন্যথায় দুৃ’টি ইউনিয়নের অর্ধ লক্ষ মানুষ আইলার মত ফের প্লাবিত হওয়ার ঝুঁকিতে আছে বলে তারা দাবি করেছেন।
নয়া শতাব্দী/জেআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ