ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

লতি চাষ করে স্বাবলম্বী জামাল উদ্দিন

প্রকাশনার সময়: ১২ আগস্ট ২০২২, ১৭:০৯

কৃষিকাজের প্রতি প্রবল আগ্রহ আর কঠোর পরিশ্রম করে নিজের ভাগ্যকে বদলে দিয়েছেন ময়মনসিংহের নান্দাইলে চরবেতাগৈর ইউনিয়নের চরকামট খালী গ্রামের জামাল উদ্দিন (৬৫)। কচুর লতি বিক্রি করে হয়েছেন তিনি স্বাবলম্বী। রীতিমতো চমকে দিয়েছেন সবাইকে।

নিজের ৩০ শতাংশ জমিতে তিনি লতি চাষ করেন। এখন পর্যন্ত তিনি ৫০ হাজার টাকার লতি বিক্রি করেছেন। পরিচর্যা, সার ও কীটনাশকসহ তার মোট ৩ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।

কচুর লতি চাষে তুলনামূলক কম শ্রম ও অধিক লাভ হওয়ায় দিন দিন কচুর লতি চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন এই অঞ্চলের চাষিরা।ধানের থেকে তা লাভজনক হওয়ায় কচুর লতি চাষে ঝুঁকছেন কৃষক।

এছাড়া কচুর লতি চাষে রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার ছাড়াই এর ফলনও হচ্ছে অনেক বেশি। এ অঞ্চলের চাষ হওয়া কচুর লতি স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছে।

নান্দাইল উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে নান্দাইলে কচু আবাদ হয়েছে ৬০ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে ১৫ হেক্টর জমিতে লতিরাজ কচু (লতির জন্য) আর বাকি ৪৫ হেক্টর জমিতে কাঠ কচু আবাদ হয়েছে।

সরেজমিন দেখা যায়, বাড়ির পাশে জামাল উদ্দিন কচু ক্ষেতে লতি তুলছেন। কাঁচি দিয়ে লতি তুলে তিনি আঁটি বাঁধছেন স্থানীয় বাজারে বিক্রির জন্য। প্রতিটি লতা সতেজ ও মোটা।

স্থানীয় বীরকামট খালী দক্ষিণ ও হাটশিরা বাজারে প্রতি মঙ্গলবার, শুক্রবার ও রোববারে তিনি লতি বিক্রি করেন। প্রতিটি লতির আঁটি ২০ থেকে ২৫ টাকায় বিক্রি করছেন।

কচু গাছে এখনো যে পরিমাণ লতি রয়েছে তাতে তিনি ধারণা করছেন অন্তত আরো ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকার লতি বিক্রি করতে পারবেন। তিনি বলেন, এক মাঘ মাসে তিনি কচুর চারা রোপন করে আরেক পৌষ-মাঘ পর্যন্ত (১ বছর) লতি তুলতে পারেন।

স্থানীয়রা জানান, জামালের ক্ষেতের কচুর লতি দেখতে অনেক সুন্দর। খেতেও বেশ সুস্বাদু। তাই জামালের লতির চাহিদা রয়েছে বেশ। আর এর ফলে ভাল দামও পাচ্ছেন তিনি।

কৃষক জামাল উদ্দিন জানান, তিনি ৭ বছর ধরে কচু ও লতি চাষ করছেন। তিনি ত্রিশাল থেকে বগুড়া জাতের চারা কিনে এনে রোপণ করেছেন। বারোমাসি লতি চাষ করেন তিনি।

লতি চাষ করে সবসময় তিনি লাভবান থাকেন। ক্ষেতের পরিচর্যা তিনি নিজেই করেন। পরিশ্রম করে তার সুফলও তিনি পান। লতি বিক্রির পর তিনি কচু বিক্রি করবেন।

জামাল উদ্দিন তৃপ্তির হাসি হেঁসে বলেন, আমি লতি চাষ করে অহন স্বাবলম্বী। গত বছর আমি এক লাখ টেহার কচু ও লতি বেঁচছি।আমার ৫ জনের সংসারে অহন কোনো অভাব নাই।

উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোহাম্মদ আনিসুজ্জামান বলেন,কচু একটি দীর্ঘমেয়াদী লাভজনক ফসল।কৃষক অন্য যেকোন ফসলের চাইতে কচু চাষ করে অল্প খরচে বেশী লাভবান হতে পারেন। কচু ও লতি চাষে আগ্রহ বাড়াতে কৃষকদের সার্বিক সহযোগিতা ও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

নয়া শতাব্দী/জেআই

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ