লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জের বদরপুর গ্রামের জান্নাত আক্তার শান্তা নামের এক গৃহবধূর দুই স্বামী বলে অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি পাসপোর্ট করতে গিয়ে ধরা পড়ে প্রতারণার এমন ভয়াবহ চিত্র। এ নিয়ে চলছে সমালোচনার ঝড়। আর এই ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে একটি প্রতারক চক্র উঠে পড়ে লেগেছে বলে জানা গেছে।
মঙ্গলবার (৩ আগস্ট) সরেজমিনে গিয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার কালিকাপুর গ্রামের আশোক মুন্সি বাড়ির বেলাল হোসেনের মেয়ে জান্নাত আক্তার শান্তার পার্শ্ববর্তী বদরপুর গ্রামের নুর মোহাম্মদের ছেলে আমির হোসেন সুজনের সঙ্গে ২০১৭ সালে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের এক বছরের মাথায় এই দম্পতির সংসারে এক ছেলে সন্তানের জম্ম হয়।
অপরদিকে ২০১৬ সালে ২০ জুন মাসে জান্নাত আক্তার শান্তার সঙ্গে গাজীপুর গ্রামের জয়নাধন শীলের ছেলে শুভর বিয়ে হয়েছে এমন একটি কাবিননামা নিয়ে এই ধুম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে।
কাবিননামায় দেখা যায়, এতে উল্লেখিত তারিখেই শুভ চন্দ্রশীল আইনজীবীর মাধ্যমে নোটারী পাবলিকে হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে মুসলিম ধর্ম গ্রহণ করে এবং একই দিনে ৫ লাখ টাকা দেনমোহরে জান্নাতকে বিয়ে করে।
গৃহবধূর স্বামী আমির হোসেন সুজনকে না পেয়ে তার পিতা নুর মোহাম্মদ থেকে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার পুত্রবধূ জান্নাত আক্তার শান্তা কালিকাপুর দেওয়ান বাজার নাপিত জয়নাধনশীলের ছেলে শুভ চন্দ্র শীলকে বিয়ে করে বিদেশ যেতে পাসর্পোট করতে দেয়। পাসর্পোটে স্বামীর নাম শুভ দিলেও সন্তানের বাবার নাম আমার ছেলের নাম আমির হোসেন সুজন দেয়। এতে পাসপোর্ট তদন্তকারী কর্মকর্তা এলাকাতে তদন্তে আসলে বিষয়টি জানাজানি হয়।
তিনি আরো বলেন, শুনেছি বসু বাজার এলাকার সজিব নামের এক দালালকে দেড় লক্ষ টাকা শুভ পাঠিয়েছে। সজিব জান্নাত এবং তার সন্তানকে পাসর্পোট করে বিদেশে পাঠিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব নেয়।
এদিকে আরেক স্বামী শুভ চন্দ্র শীলের পিতা জয়নাধন শীল বলেন, আমার ছেলে বিদেশ থাকাবস্থায় জান্নাতের সঙ্গে সম্পর্ক। এই সম্পর্ক থাকাবস্থায় আমাকে একবার ফোন দিয়ে জান্নাতকে টাকা দিতে বলে। ছেলের কথা মতো জান্নাতকে টাকাও দিয়েছি। এরপর আমার ছেলে ২০২০ সালে বিদেশ থেকে আসার পরে হিন্দু ধর্মানুসারে শান্তাকে বিয়ে করে আবার বিদেশ যায়। এখন লোকের মুখে মুখে শুনছি মুসলিম গৃহবধূকে আমার ছেলে বিয়ে করেছে। তবে এলাকাতে প্রচার হওয়ার পর থেকে আমার ছেলের মোবাইল বন্ধ।
এ ব্যাপারে গৃহবধূ জান্নাত আক্তার শান্তা বলেন, বিদেশ থাকাবস্থায় শুভর সঙ্গে আমার ফেসবুকে পরিচয় হয়। ২০২০ সালে বিদেশ থেকে দেশে এসে আমাকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যায় এবং আমাকে বিদেশ নিবে বলে কাগজে স্বাক্ষর নেয়। শুভ বিদেশ ফিরে যাওয়ার পরে আমি পাসপোর্ট করতে দিলে ঝামেলা শুরু হয়। তবে শুভর কথামতোই বাসু বাজার এলাকার সজিবের কাছে কাগজপত্র দিয়েছি।
এ ব্যাপারে স্থানীয় করপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান মজিবুল হক মজিব বলেন, ঘটনাটি লোকের মুখে শুনেছি। এই ধরনের ঘটনার বিচার গ্রাম্য আদালতের এখতিয়ারে নেই বলে জানান তিনি। তবে এ নিয়ে এলাকায় ব্যাপক তোলপাড় চলছে।
নয়া শতাব্দী/এসএম
নয়া শতাব্দী/এসএম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ