ঢাকা, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬
দাম নিয়ে হতাশা

রাজশাহীতে মৌসুমি ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত

প্রকাশনার সময়: ১৩ জুলাই ২০২২, ১৩:৪৬

প্রতি বছরই পবিত্র ঈদুল আজহা ঘিরে মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ী গড়ে উঠে। লাভের আশায় এবারও মৌসুমি ব্যবসায়ীরা বাড়ি বাড়ি ঘুরে চামড়া কিনেছেন। কিন্তু দাম নিয়ে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। ফলে প্রত্যন্ত অঞ্চল ঘুরে চামড়া কিনে লাভ করতে না পেরে মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত পড়েছে। সারা বছর ধরে অপেক্ষা করে চামড়া কিনে লাভ করতে না পারায় এই খাতে মানুষের আগ্রহ হারাচ্ছে। গত বছরও একইভাবে চামড়া কিনে লোকসান গুনতে হয়েছে। এবার সব জিনিষপত্রের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় লাভের স্বপ্ন দেখছিলেন। কিন্তু তাদের সেই স্বপ্ন পূরণ হয়নি বলে জানান রাজশাহীর মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীরা। তবে চামড়ার আড়তদাররা বলছেন, তারা উপযুক্ত দামই দিয়েছেন। ক্ষেত্র বিশেষ সরকার নির্ধারিত দামের বেশি দিয়েও চামড়া কিনেছেন তারা। কিন্তু এরপরও মৌসুমি ব্যবসায়ীদের চামড়া কিনে লাভ হচ্ছে না।

রাজশাহীতে ঈদের দিন ও ঈদের পরের দিনও চামড়া কেনাবেচা হয়েছে। বর্তমানে চামড়া সংরক্ষণে ব্যস্ত সময় পার করছেন রাজশাহী জেলা ও উপজেলার ব্যবসায়ীরা। লবণ মাখিয়ে নির্দিষ্ট স্থানে চামড়াগুলো স্তূপ করে রেখেছেন। এভাবে প্রায় এক সপ্তাহ সংরক্ষণের পর চামড়া ট্যানারি মালিকদের কাছে পাঠিয়ে দিবেন।

মৌসুমি ব্যবসায়ীরা জানান, পাড়া-মহল্লা ঘুরে বেশি দামে চামড়া কিনে আড়তে তারা এবারও চামড়ার দাম পাননি। আড়তে গিয়ে দাম না পেয়ে ধরাশায়ী হয়েছেন। এতে লাভ তো হয়নি। পুঁজিও ওঠেনি অনেকের। সব কিছুর দামই বেশি। শুধু চামড়ার দামই কম। তাই এই ব্যবসা ছেড়ে দিবেন বলে জানান মৌসুমি ব্যবসায়ীরা।

রাজশাহীতে এবার গরুর প্রতি পিস চামড়া ৪০০ থেকে সর্বোচ্চ ৯০০ টাকা করে দরে বিক্রি হয়েছে। আর ছাগলের চামড়া বিক্রি হয়েছে পিস প্রতি ১০ থেকে ১৫ টাকায়। তবে ছোট আকারের ছাগলের চামড়া এবং কাটা ও ফাটা চামড়া বিক্রি হয়নি। নদীতে ফেলে দিতে হয়েছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে গরুর চামড়া বিক্রি করতে এসে ছাগলের চামড়া ফ্রি আড়তদারদের দিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছেন। অনেকে আবার দাম না পেয়ে রাগে-ক্ষোভে সেসব ছাগলের চামড়া আবর্জনার স্তূপে ফেলেও দিয়েছেন। ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরকার নির্ধারিত দামের তুলনায় কম দামে বিক্রি করতে হচ্ছে কোরবানির পশুর চামড়া।

রাজশাহী মহানগরীর সপুরা এলাকার মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ী মিলন জানান, লাভের আশায় চামড়া কিনে লোকসান দিতে হয়েছে। গ্রাম ঘুরে বেশি দামে চামড়া কিনে আড়তে আনার সব গড়ে সব চামড়ার দামই ৬০০ থেকে সর্বোচ্চ ৯০০ টাকার মধ্যে বিক্রি করে দিতে হয়েছে।

চামড়ার আড়ত ব্যবসায়ী আবদুর রউফ জানান, সাধারণত বড় আকৃতির গরুর চামড়া ৩৫-৪০ বর্গফুট হয়, মাঝারি আকৃতির চামড়া ২১-৩০ এবং ছোট আকৃতির গরুর চামড়া ১৬-২০ বর্গফুটের হয়। একেকটি গরুর চামড়া প্রক্রিয়াজাত করতে লবণ ও শ্রমিকের মজুরিসহ গড়ে ৩০০ টাকা খরচ হয়। গত বছরের তুলনায় এবার লবণের দাম দ্বিগুণ হওয়ায় খরচ কিছুটা বেশি হচ্ছে। এরপরও তারা ৭০০ থেকে ১ হাজার টাকা দরে কাঁচা চামড়া কিনেছেন। কোনো কোনো ক্ষেত্রে সরকার নির্ধারিত দামের চেয়েও বেশি দাম দিয়েছেন। এখন এসব চামড়া লবণজাত করতে তাদের খরচ বেড়ে গেছে। লাভ নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন।

নয়া শতাব্দী/এসএম

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ