ঢাকা, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

জগন্নাথপুরে বন্যায় ভেসে গেছে ঈদ আনন্দ

প্রকাশনার সময়: ১১ জুলাই ২০২২, ০৫:০৪

দেশের আকাশে যখন ঈদের চাঁদ উঠেছিল তখনো বন্যার পানি ছিল সুনামগঞ্জের জগান্নাথপুরে।

রোববার (১০জুলাই) দেশের ন্যায় ঈদ উদযাপিত হয়েছে জগান্নাথপুরে। তবে সেই ঈদের আনন্দ পৌঁছয়নি অনেক ঘরে। তাদের সব খুশি ভেসে গেছে বন্যার পানিতেই। অনেক এলাকায় এখনো পানিবন্দি আছে শত শত মানুষ। অধিকাংশ এলাকায় পানি না থাকলেও উপজেলার অনেক বাসিন্দার ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। বাধ্য হয়ে এখনো আশ্রয়কেন্দ্রে আছে পরিবার নিয়ে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ১৭ জুন প্রবাসী অধ্যুষিত এ উপজেলায় স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা দেখা দেয়। কয়েক দিনের অব্যাহত রোদ ও ভারি বৃষ্টিপাত না হওয়াতে বন্যা পরিস্থিতি উন্নত হলেও এখনো নিম্নাঞ্চলের লোকজন পানিবন্দী অবস্থায় আছে। অনেকের বসতবাড়ি থেকে পানি নেমে গেলেও বিধ্বস্ত করে দিয়েছে মাথা গোঁজার ঠাঁই। অনেক পরিবার আশ্রয়কেন্দ্রে ঈদ উযাপন করছে।

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর পৌর এলাকার শেরপুরের রিকশাচালক আব্দুস সত্তার টানা ১৮ দিন পর আশ্রয়কেন্দ্র ছেড়ে বাড়ি ফিরেছিলেন। বাড়িতে গিয়ে দেখেন বসতঘরটি বিধ্বস্ত। বাধ্য হয়ে বৃদ্ধ মা ও পরিবারের অন্য সদস্যদের নিয়ে ফিরে যান আশ্রয়কেন্দ্রে। স্থানীয় আব্দুর রশিদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এখন ঈদ কাটছে আব্দুস সাত্তারের পরিবারের।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মধ্যবিত্ত পরিবারের কর্তা জানান, উপজেলার একটি বাজারে ছোট একটি জুতার দোকানের ব্যবসা রয়েছে তার। এ ব্যবসার ওপর পরিবারের আট সদস্যের জীবিকা পরিচালিত হয়ে আসছে। বন্যার তলিয়ে যায় তার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। এতে লক্ষাধিক টাকার মালামাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বন্যার কারণে ১৫ দিন দোকান বন্ধ ছিল। দোকান থেকে পানি কমে যাওয়ায় কয়েক দিন ধরে দোকান খুলেছেন। তবে ক্রেতা নেই আগের মতো। তাই নিজের সংসারেও ঈদের ছোঁয়া লাগেনি তার।

তবে বন্যার পরেও এলাকার প্রবাসী ও বিত্তশালী পরিবারের সদস্যরা কোরবানি করেছেন। তাদের মধ্যে অনেকে চেষ্টা করছেন অসহায় ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের মধ্যে ঈদ আনন্দ ছড়িয়ে দিতে।

চিলাউড়া হলদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম বকুল বলেন, ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের লোকজন এখনো পানিবন্দী। সরকারি-বেসরকারি অব্যাহত সহায়তায় অনেক দরিদ্র পরিবারে ঈদের আনন্দ থাকলেও মধ্যবিত্ত পরিবারের লোকজনের মধ্যে নেই কোনো আনন্দ। বন্যায় ক্ষতির শিকার এসব পরিবার কোনো সহায়তা পাচ্ছে না, আবার তারা মুখ ফুটেও কারো কাছে চাইতে পারে না।

জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাজেদুল ইসলাম বলেন, বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হয়েছে। ঈদের এই খুশির আনন্দ সবার মাঝে ভাগাভাগি করে নিতে সমাজের সচ্ছলদের এগিয়ে আসা দরকার।

নয়া শতাব্দী/জেআই

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ