ঢাকা, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

এটিএম বুথে নেই টাকা, হাহাকার গ্রাহকের

প্রকাশনার সময়: ০৯ জুলাই ২০২২, ১৮:৪৩

আজ বাদে কাল ঈদ। আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে বিভিন্ন প্রয়োজন মেটাতে প্রত্যেকেরই অর্থের দরকার। কারো আবার চাকরির সুবাদে সম্পূর্ণ টাকা ব্যাংক একাউন্টে জমা রাখা আছে। তাই টাকার প্রয়োজনে সকলেই ভিড় জমাচ্ছে এটিএম বুথের দরজার সামনে। কিন্তু টাকা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছে অনেকেই, অনেকেই দাঁড়িয়ে সময় কাটাচ্ছে কখন টাকা আসবে। কেউ কেউ আবার এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় বুথে খুঁজছে টাকা পাওয়া যায় কিনা কিন্তু হতাশ হয়ে সবাই হাহাকার করছে টাকার জন্য।

শনিবার (৯ জুলাই) এমনই দৃশ্য দেখা যায় গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর উপজেলার বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন ডাচ বাংলার এটিএম বুথে। এখানে দায়িত্বপ্রাপ্ত কোন অফিসারও দেখা যায়নি। সরেজমিনে আরো কয়েকটি স্থান পরিদর্শন করলে একই চিত্র দেখা মিলে। পাশাপাশি আরো অন্যান্য প্রায় ব্যাংকের বুথগুলো বন্ধ দেখা গেছে। এটিএম হতে পর্যাপ্ত টাকা রাখার সরকারি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা থাকলেও মানছেন না এসব প্রাইভেট ব্যাংক।

আসন্ন ঈদুল আজহার ছুটিতে গ্রাহক যেন নিরবচ্ছিন্ন লেনদেন করতে পারেন সেই লক্ষ্যে এটিএম বুথে পর্যাপ্ত টাকা সরবরাহের নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। একই সঙ্গে পয়েন্ট অব সেল (পিওএস), অনলাইন ই-পেমেন্ট গেটওয়ে ও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের (এমএফএস) মাধ্যমে গ্রাহকদের নিরবিচ্ছিন্ন লেনদেনেরও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেমস ডিপার্টমেন্ট থেকে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা দেয়া হয়। দেশের সব ব্যাংক, মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস প্রোভাইডার বা পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডার, পেমেন্ট সিস্টেম অপারেটরের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে এ নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে।

নির্দেশনায় বলা হয়, অটোমেটেড টেলার মেশিনের (এটিএম) ক্ষেত্রে সার্বক্ষণিক সেবা নিশ্চিত করতে হবে। এটিএমে কারিগরি ত্রুটি দেখা দিলে তা দ্রুততম সময়ের মধ্যে নিরসনের ব্যবস্থা করতে হবে। এটিএম বুথে পর্যাপ্ত টাকার সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। টাকা উত্তোলনের ক্ষেত্রে প্রতিটি লেনদেনের সর্বোচ্চ সীমা রাখা এবং এটিএম বুথে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।

মুসলিম উদ্দিন নামের একজন জানান, আমি শ্রীপুরে পোশাক কারখানায় কাজ করি। আমার বেতন ডাচ বাংলা ব্যাংকের একাউন্টে যোগ হয়। কিন্তু গতকাল ভোরে আসছি টাকা পাইনি, আজ এসে বসে আছি তাও টাকা পাচ্ছি না; শ্রীপুর এটিএম বুথেও একই অবস্থা।

জামান নামের একজন ভাঙ্গারী ব্যবসায়ী বলেন, ব্যবসার জন্য আমার সব সময়ই টাকা লেনদেন করতে হয় কিন্তু বুথে কালকে এসে ঘুরে গেছি টাকা পাইনি। আজকে মির্জাপুর, কোনাবাড়ি ও সফিপুর সকল জায়গায় ঘুরেও কোন বুথে টাকা পাই নাই। এতে আমাদের খুব সমস্যা হচ্ছে।

শাহিন নামের আরেক শ্রমিক বলেন, সকাল থেকে বসে আছি টাকা পাই নাই। আমি টাকা ছাড়া কীভাবে বাড়ি যাবো? টাকার জন্য এত কষ্ট করে কাজ করি এখন সঠিক সময়ে টাকা না পেলে তাহলে এত কষ্ট করে লাভ কি?

একজন বৃদ্ধ স্কুল শিক্ষক বলেন, আমি ফজরের নামাজ পড়ে বুথে এসেছি, এসে দেখি বুথ খোলা আছে কিন্তু টাকা নেই। কোন অফিসারও নেই।

এ ব্যাপারে ডাচ-বাংলা ব্যাংকের ফাস্ট ট্র্যাকের সিকিউরিটি জানান, গতকাল থেকেই টাকা নাই। অনেক মানুষ এসে ঘুরে যাচ্ছে। আমাদের বুথের গ্লাস গতকাল ভাঙচুর করেছে। আজকে দুপুরের পরে টাকা আসার কথা, এখন কতটুকু আসবে তাও জানি না। এই ব্যাপারে তো আসলে আমার কিছু করার নাই, আমি তো অফিসার না।

নয়া শতাব্দী/জেআই

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ