লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে দাবিকৃত যৌতুকের টাকা না পেয়ে শ্বশুরের বসতঘর পুড়িয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে মেয়ের জামাই আব্দুল মান্নানের বিরুদ্ধে। আগুনে ঘরসহ ঘরে থাকা সকল আসবাবপত্র পুড়ে ছাঁই হয়ে গেছে। এতে প্রায় ছয় লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি ভুক্তভোগী পরিবারের। তবে ঘরে কেউ না থাকা হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। এ ঘটনায় মেয়ের নানা আলী হোসেন বাদী হয়ে থানায় অভিযোগ করেছেন।
শনিবার (১৮ জুন) সকালে পুড়ে যাওয়ার ঘটনা সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন কমলনগর থানার ভরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ সোলাইমান। এর আগ গত মঙ্গলনার (১৪ জুন) গভীর রাতে আগুনের ঘটনা ঘটে।
জানাগেছে, উপজেলার চরলরেন্স এলাকার মৃত মো: দুলালের মেয়ে নুপুরের সাথে ৫ বছর আগে তোরাবগঞ্জ এলাকার আব্দুল খালেকের ছেলে আব্দুল মান্নানের ৩ লক্ষ টাকা দেনমোহরের নোটারী পাবলিক লক্ষ্মীপুর আদালতে বিয়ে হয়। তাদের ঘরে ৪ বছরের একটা প্রতিবন্ধী ছেলে সন্তানও রয়েছে। বিয়ের কিছু দিন পর মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে মেয়ের জামাইকে বিদেশ (আবুধাবি) পাঠায় শ্বশুর পক্ষ। বিদেশে থাকা অবস্থায় স্ত্রীর নগ্ন ছবি মোবাইলে চেয়ে নিয়ে তার সাথে থাকা বন্ধুদের দেখান। বিষয়টি জানা জানি হলে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। এর পর গত বছরের নভেম্বর মাসে মান্নান দেশে আসলে আবারও নগ্ন ছবির বিষয়ে কথা উঠলে স্ত্রীকে মারধর করে সে।
ভুক্তভোগী নুপুর বলেন, আমার স্বামী বিদেশ থাকা অবস্থায় বিভিন্ন সময় নগ্ন ছবি পাঠাইতে বলতেন। আমি রাজি থাকতাম না। এরপরে বিভিন্ন গালমন্দ হুমকি-ধমকি দিত। পরবর্তীতে ভয়ে দিয়ে দেই। আমার স্বামী এসব ছবি আমাদের পরিবারের লোকজনসহ তার বিভিন্ন বন্ধু-বান্ধবদেরকে পাঠাইতো। এরপর দেশে এসে আমার সাথে ভালো আচরণ না করে মারধর করতো, তাকে এক লক্ষ টাকা দিতে বলে। আমি দিতে পারি না বলে আমাকে বেদম মারধর করতো। পরবর্তীতে আমার নানা আমাকে নিয়ে আসে। এরপর মোবাইল ফোন এবং সরাসরি এসে আমাকে আমার সন্তানকে এবং আমার ঘর পুড়িয়ে দেবে বলে হুমকি দিতো। একদিন পরেই সত্যি আমার ঘরে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে, আমরা কেউ ঘরে ছিলাম না। সে আবারও হুমকি দেয় আমাকে আমার প্রতিবন্ধী সন্তানকে পেট্রোলের আগুনে পুড়িয়ে মারবে।
নুপুরের মা শাহিদা বলেন, মেয়ের জামাই মান্নান দুইদিন আগে হুমকি দিয়েছে ঘরে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারবে। তিনদিনের মাথায় সত্যি আগুন দিয়ে বসতঘর ছাঁই করে দিয়েছে। পার্শ্ববর্তী দালান ঘরে ঘুমানোর কারণে আগুন লাগানোর সময় তারা কাউকে দেখিনি। তবে এর আগেই পেট্রোল দিয়ে পুড়িয়ে ফেলবে বলে মান্নান হুমকি দেয়।
এ বিষয়ে মুঠোফোনে সকল অভিযোগ অস্বীকার করে মানান বলেন, আমাকে ফাঁসাতে তারা এ সব অপকর্ম করছে। আমি এর কিছুই জানি না।কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ সোলাইমান বলেন, এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
নয়া শতাব্দী/জেআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ