অবশেষে নানা জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে জয়ের মালা গলায় পরলেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী আরফানুল হক রিফাত। এরই মধ্য দিয়ে রিফাতের হাত ধরে প্রতিষ্ঠার পর প্রথমবারের মত কুমিল্লা সিটির নগর ভবনে আওয়ামী লীগের নেতা কর্তাব্যক্তি হলেন।
আওয়ামী লীগের টিকেট নিয়ে আরফানুল হক পেয়েছেন ৫০৩১০ভোট । এই নির্বাচনে হ্যাটট্রিকের আশায় থাকা কুমিল্লা সিটির দুইবারের মেয়র এবার নির্বাচন করতে যেয়ে বিএনপি হতে বহিষ্কার হওয়া মনিরুল হক সাক্কু ৪৯৯৬৭ ভোট পেয়ে হ্যাটট্রিকের সুযোগ হারান। আর আরেক বিএনপি নেতা নিজামউদ্দিন কায়সার যিনিও নির্বাচনে অংশ নিয়ে সেচ্ছাসেবক দলের পদ হারিয়েছেন তিনি পেয়েছেন ২৯০৯৯ ভোট।
এদিকে, কুমিল্লা সিটির ভোটের প্রথম প্রহরেই হানা দিয়েছিলো বৃষ্টি, সেই বৃষ্টি শঙ্কা জাগিয়েছিলো ভোটার- প্রার্থী উভয়েরই মনে। তবে এরপর সেভাবে বৃষ্টি না আসলেও প্রায় সারাক্ষণই আকাশ ছিলো মেঘাচ্ছন্ন। মাঝেমধ্যে অবশ্য মেঘ কাটিয়ে রোদ সূর্যের উপস্থিতি জানান দিচ্ছিলো। তবে ভোটের শেষ সময়ে এসে নগরীর বেশ কয়েকটি স্থানে আবারো গুড়িগুড়ি বৃষ্টি পড়ে। এভাবেই শেষ হয় কুমিল্লা সিটির তৃতীয় নির্বাচন।
এর আগে, সকাল আটটায় নগরীর ২৭টি ওয়ার্ডের ১০৫ টি ভোটকেন্দ্রে ইভিএমে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার দুই লাখ ২৯ হাজার ৯২০ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার এক লাখ ১৭ হাজার ৯২, পুরুষ ভোটার এক লাখ ১২ হাজার ৮২৬ জন। আর দুজন তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছে। মেয়র ছাড়াও সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১০৬ জন ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ৩৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এদিকে সকাল হতেই নগরীর বেশ কয়েকটি ভোট কেন্দ্র ঘুরে দেখা যায় পুরুষদের তুলনায় নারী ভোটারদের সংখ্যা বেশি। নারীদের কেন্দ্রগুলোতে দীর্ঘ লাইন ছিলো চোখে পড়ার মত। তবে বেশ কয়েকটি কেন্দ্রে ভোটারদের অভিযোগ ছিলো ধীর গতিতে ভোট নেওয়ার।
এছাড়া প্রত্যেক ভোটকেন্দ্রে পুরুষদের লাইন নারীদের তুলনায় ছোট ছিল। এ কারণে শুরুতে প্রত্যেক কেন্দ্রে নারীদের ভোট পুরুষের চেয়ে বেশি পড়ে। য়েকটি কেন্দ্রে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নারী ভোটাদের ব্যাপক উপস্থিত চোখে পড়ে। এসব কেন্দ্রে সকাল থেকেই নারীরা ভোট প্রদানের জন্য দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে অবস্থান করেন।
নগরীর ৭নং এলাকায় গোবান্দিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের নারী ভোটার তাহিনা আক্তার বলেন, আট মাসের সন্তানকে নিয়ে ভোট দিতে এসেছি। ভোটের পরিবেশ তো আগের তুলনা অনেক ভালো দেখছি।তবে দীর্ঘ লাইনের কারনে দুই ঘন্টা ভোট দিতে পারিনি।
আয়েশা আক্তার নামে এক ভোটার বলেন, ভোট আমার আমানত। ভোট দেওয়া আমার দায়িত্ব। এই দায়িত্ববোধ থেকেই কষ্ট করেও আমি ভোট দিতে এসেছি। যোগ্য মানুষকেই ভোট দিয়েছি।
এদিকে সন্ধ্যায় ফলাফল ঘোষণার প্রথম হতেই টানটান উত্তেজনা ছিলো। সাক্কু পিছিয়ে থাকলেও ব্যবধান কমার সাথে সাথে ফলাফল ঘোষণার স্থান জেলা শিল্পকলা একাডেমীর অডিটোরিয়াম এবং এর আশেপাশে সাক্কুর কর্মী সমর্থকরা ভিড় জমাতে থাকে। শেষ মুহূর্তে এসে রিফাতের কর্মী সমর্থকরাও মিছিল নিয়ে অডিটোরিয়ামে প্রবেশ করে। এতে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে পুরো অডিটোরিয়ামে। এরপর বেশ কিছুক্ষণ ভোট ঘোষণা কার্যক্রম বন্ধ থাকে। পরবর্তীতে ফল ঘোষণা শুরু হলে রিফাতকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।
নয়াশতাব্দী/জেডআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ