প্রথমবারের মত সম্পূর্ণ ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে সম্পন্ন হয়েছে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের ভোটগ্রহণ। এর আগে কুমিল্লা সিটির প্রথম নির্বাচনে কিছু কেন্দ্রে ইভিএমে ভোট গ্রহণ হলেও সম্পূর্ণ কেন্দ্রে ইভিএমে এবারই প্রথমবারের ভোট গ্রহণ হয়েছে। ভোটের দিন নগরীর বেশ কয়েকটি কেন্দ্রে ঘুরে ইভিএম নিয়ে ভোটারদের মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়।
বয়স্ক ভোটাররা বলছেন, ইভিএমে ভোট দিতে বিড়ম্বনার মুখোমুখি হয়েছেন। তবে তরুণরা বলছেন, তারা ইভিএমে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন।
ভোটের প্রথম প্রহরেই নগরীর ১৭ নং ওয়ার্ডের জে এল মেমোরিয়াল একাডেমি ভোটকেন্দ্রে গিয়ে কথা হয় বেশ কয়েকজন ভোটারের সাথে। এর মধ্যে আব্দুর রহমান নামে এক বৃদ্ধ ইভিএমে ভোট দিয়ে বলেন, মেশিনে আমার ভোট অন্য কেউ দিতে পারতো না, তবে আগের অভিজ্ঞতা না থাকাতে একটু কঠিন মনে হইছে।
প্রথমবারের মত ভোট দেওয়া তরুন হাসান ইমাম বলেন, ‘প্রথম ভোট ইভিএমে দিলাম, খুব অল্প সময়েই ভোট দিতে পেরেছি। আমার কাছে এই পদ্ধতি নিরাপদ মনে হয়েছে।’ তবে নারী ভোটাররা বলছেন, ইভিএম নিয়ে ভিন্ন অভিজ্ঞতার কথা।
একই ওয়ার্ডের নগর স্বাস্থ্য কেন্দ্র-২ ভোটকেন্দ্রে গিয়ে বেলা ২ টায় দেখা যায় নারীদের দীর্ঘ লাইন। এসময় তাদের বেশ কয়েকজন অভিযোগ করে বলেন, কয়েক লাইনে থাকার পরও তারা ভোট দিতে পারতেছেন না। আলেয়া খাতুন নামের এক ভোটার বলেন, সকাল হতে লাইনে আছি তারা বলতেছে মেশিনে সমস্যা। এতক্ষণ কি দাঁড়াই থাকা যায়। আমাগো ব্যালটই ভালা ছিলো। মেশিনে দেরি হয়।
তবে এই কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান জানান, অনভিজ্ঞতার কারণে নারী ভোটারদের একটু সময় লাগতেছে। একটা মেশিনে একটু ত্রুটি ছিলো, তাৎক্ষণিক ভাবে মোবাইল টিম সমস্যা সমাধান করে।
এর আগে সকাল সাড়ে নয়টায় নগরীর হোচ্ছা মিয়া স্কুলে ভোট দিতে এসে আঙ্গুলের ছাপ না মেলার অভিযোগ করেন বৃদ্ধ রহমত আলী। তিনি এসময় বলেন, অনেক চেষ্টা করেও আঙ্গুলের ছাপ মিলেতেছে না। এইটা একটা ভোগান্তি।
ভিক্টোরিয়া কলজিয়েট স্কুল কেন্দ্রে ভোট দিয়ে ইয়াসিন আরাফাত বলেন, ইভিএমে তাড়াতাড়ি ভোট দেওয়া যায়, এইটা ভালো। ব্যালটের ফলাফলেও দেরি হয়, ইভিএমে ঝামেলা নাই।
পুরো নগরীজুড়ে বেশ কয়েকজন ভোটারের সাথে কথা হলে বেশিরভাগই বলছেন, ইভিএম নিয়ে দৃশ্যমান ঝামেলা নেই তবে এই পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে। তবে বয়স্কদের চেয়ে ইভিএম পদ্ধতিতে তরুণরা বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছেন বলে জানান।
প্রসঙ্গত, কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শুরু হয় সকাল ৮টায়, শেষ হবে বিকাল ৪ টায়। এই নির্বাচনে মেয়র পদে ৫ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ২৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থী ৩৬ জন এবং সাধারণ ওয়ার্ডে ১০৮ জন। ভোটার আছেন ২ লাখ ২৯ হাজার ৯২০ জন। যার মধ্যে ১ লাখ ১২ হাজার ৮২৬ জন পুরুষ, ১ লাখ ১৭ হাজার ৯২ জন নারী ও তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন ২ জন। ১০৫টি ভোটকেন্দ্রে বুথ রয়েছে ৬৪০টি।
নয়াশতাব্দী/জেডআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ