কক্সবাজারের টেকনাফের সাবরাংয়ে যৌতুক না দেয়ায় বিয়ে বন্ধ করে দেয় বর পক্ষ। এঘটনায় কনের বাবা মামলা করলে পুলিশ বরকে গ্রেফতার করে। শুক্রবার (১০ জুন) দুপুরে তাকে গ্রেফতারের পর শনিবার (১১ জুন) আদালতে হাজির করা হলে আদালত কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়।
গ্রেফতার বরের নাম মো. মোহাম্মদ ইমরান প্রকাশ এমরান উল্লাহ। তিনি টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের কচুবনিয়া এলাকার আব্দুল মাজেদের ছেলে।
বাদী ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, আটক ইমরান উল্লাহ দুবাই থাকাকালে মেয়েকে পছন্দ করতো। এর সূত্র ধরে গত বছরের ৫ নভেম্বর ছেলের পরিবারসহ মেয়ের বাড়িতে এসে শাহপরীর দ্বীপের আব্দুল জব্বারের মেয়ের সাথে বিয়ের কথা ঠিকঠাক হয়। সেই সুবাদে মেয়ের সাথে নিয়মিত মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ভিডিও কলসহ কথাবার্তা বলতো। এক পর্যায়ে দু’পক্ষের সন্মতিতে গত ৯ জুন বিয়ের তারিখ নিদিষ্ট করা হয়। সেই সুবাদে ২ জুন এমরান উল্লাহ ও তার ভাই জসিম তাদের বাড়িতে আসেন।
দুই পরিবারের সম্মতিক্রমে আলোচনার পর তাদের দাবীকৃত বিয়ের আসবাবপত্র, ওয়াশিং মেশিন, ফ্রিজ, বক্স খাট, সোফা, আলমারি, সুকেস, ওয়াড্রপ ইত্যাদি যাবতীয় ইলেকট্রনিক পণ্য, বিয়ের খরচসহ প্রায় ৮ লক্ষ টাকার আসবাবপত্র ক্রয় করে এমরান উল্লাহ বাড়িতে পৌঁছিয়ে দেওয়া হয়। এমনকি পূর্ব থেকে মেয়ের বাড়িতে বিবাহের কার্ডে নির্ধারিত তারিখে ৮ মে শাহপরীর দ্বীপের নিজ বাড়িতে প্রীতি ভোজ দাওয়াতি মেহমানে খাওয়া দাওয়া প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা খরচ হয়।
পরবর্তীতে বৃহস্পতিবার সকালে বিবাদীরা বিভিন্ন প্ররোচনায় অতি লোভে পড়ে পুনরায় ৪ লক্ষ মোটরসাইকেল দাবি করে। তার পরও মেয়ের পিতা আড়াই লক্ষ টাকা দামের মোটরসাইকেল দেওয়ার জন্য সম্মতি প্রকাশ করেন। কিন্তু ছেলের পরিবার ৪ লক্ষ টাকা দামের মোটরসাইকেল না দিলে বধূ হিসাবে গ্রহণ করবে না মর্মে হুশিয়ারি দেয় এবং তাদের মেয়েকে বিয়ে করবে না বলে জানিয়ে দেয়। পরে মেয়ের বাবা আত্মীয়-স্বজন গণ্যমান্য ব্যক্তিগণসহ অনুরোধ করার পরও তারা সাফ জানিয়ে দেয় চার লক্ষ টাকার মোটরবাইক না দিলে বিয়ে হবে না।
পরে ঘটনার বিষয়ে গণ্যমান্য ব্যক্তিদের অবহিত করে তাদের পরামর্শক্রমে মেয়ের বাবা শাহপরীর দ্বীপ মাঝের পাড়া এলাকার মৃত আজিত আল্লাহ পুত্র আব্দুল জাব্বার বাদী হয়ে সাবরাং ইউনিয়নের কচুবনিয়া এলাকার আব্দুল মাজেদের পুত্র মোহাম্মদ ইমরান প্রকাশ এমরান উল্লাহকে প্রধান আসামি করে ৫ জনের বিরুদ্ধে ১১ জুন টেকনাফ মডেল থানার এজাহার দায়ের করের। যার মামলা নং-৪৪ ধারা ৪০৬/৪২০/৪২৭/৫০০/৪৩ সহ যৌতুক বিরোধী আইন ৩/৪ দায়ের করা হয়েছে। বাকি আসামিরা হলেন, মো. ছাবের, জসিম উদ্দিন, তৈয়বা খাতুন, আব্দুল মাজেদ।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা টেকনাফ মডেল থানার (এসআই) নুর আলম বলেন, পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে ইমরান প্রকাশ এমরান উল্লাহসহ তার পরিবারের বিরুদ্ধে যৌতুকের সত্যতা পাওয়া গেছে। তাকে গ্রেফতার করে আদালতের নির্দেশে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ মামলাটি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছে বলেও জানান তিনি।
নয়া শতাব্দী/এসএম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ