ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফুলবাড়ীয়া নির্বাচন অফিসারের বিরুদ্ধে ঘুষ-দুর্নীতির অভিযোগ

প্রকাশনার সময়: ১১ জুন ২০২২, ১৯:৩৫

ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া উপজেলা নির্বাচন অফিসারের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি ও ঘুষ নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। নতুন ভোটার, সংশোধন ও স্থান পরিবর্তনসহ সব কাজে ঘুষ দিতে হয় নির্বাচন কর্মকর্তাকে। কাজের ধরন বুঝে টাকার অংক চাওয়া হয়, তবে নতুন ভোটার হতে ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার টাকা দিতে হয়। এমন ভোগান্তিতে উপজেলার হাজারও সেবাপ্রার্থী। উপজেলা নির্বাচন অফিসারের দুর্নীতির সুযোগে দালালদের তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে।

এ অবস্থায় হয়রানির শিকার এক ভুক্তভোগী জেলা নির্বাচন অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। ভুক্তভোগীরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

সেবাপ্রার্থীদের অভিযোগ, উপজেলা নির্বাচন অফিসার সরকারি সকল নিয়মকে উপেক্ষা করে ঘুষ নিয়ে কাজে হাত দেয়।

উপজেলার জোরবাড়ীয়া গ্রামের অভিযোগকারী গোলাম মোস্তফা আলামিন বলেন, গত ৬ মার্চ নতুন ভোটার হওয়ার সকল ডকুমেন্ট জমা দিয়ে ছবি ও আঙ্গুলের ছাপ দেই। তিনমাস পার হওয়ার পরও এখনো ভোটার আইডি নাম্বার হয়নি। নির্বাচন অফিসারের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি আমাকে বলেন, গোপনে একা যোগাযোগ করতে। নির্বাচন অফিসার মোস্তফা কামাল এখন আমাকে ফোনে হুমকি দিয়ে বলেন, আমার বিরুদ্ধে জেলা অফিসে অভিযোগ করেছ। সুতরাং জেলা থেকেই তোমার আইডি কার্ড দেবে আমি দেবো না।

নির্বাচন অফিসের বারান্দায় কথা হয় কালাদহ গ্রামের ফাতেমা আক্তারের সাথে। তিনি বলেন, একই উপজেলায় পার্শ্ববর্তী ইউনিয়নে আমার স্বামীর ঠিকানায় ভোটার স্থানান্তর করতে এসেছি। অফিসের স্যার বলেন, জরুরি হলে ৭’শ টাকা, আর নরমাল ৩৫০টাকা লাগবে।

কেউ নতুন ভোটার হতে নির্বাচন অফিসে সকল ডকুমেন্ট নিয়ে আসলে নির্বাচন অফিসার ১ থেকে দেড়মাস তারিখ পিছিয়ে দিয়ে স্বাক্ষর করে দেন।

উপজেলার আছিম পাটুলি গ্রামের ফয়জুল হতের ছেলে রিপন মিয়া বলেন, আমি তারিখ মোতাবেক ১মাস পরে অফিসে যাই।নির্বাচন অফিসার ফাইল দেখে বলে, এটা (অফিসারের) আমার স্বাক্ষর নয়- এই বলে ভোটার আবেদনের ফরমসহ সকল কাগজপত্র ছিড়ে অকথ্য ভাষায় গালীগালাজ করে রুম থেকে বের করে দেন।

উপজেলা সদর থেকে ২০ কিলোমিটার দূরত্ব থেকে আসা গর্ভবতী রিপা আক্তার বলেন, আমি স্যারকে অনুরোধ করেছি আমার শরীর ভালা না আজকে ভোটার করে দেন, স্যার বলে শরীর ভালো না ভোটার হতে আসছেন কেন। উপজেলা নির্বাচন অফিসারের দুনীতির কারণে মানুষ পদে পদে হয়রানির শিকার হচ্ছে। ছবি ফিঙ্গার নেয়ার পরও সকল ডকুমেন্ট, এনআইডি সার্ভারে আপলোড না দিয়ে মাসের পর মাস ফাইল টেবিলে ফেলে রেখে দিয়েছে, যারা টাকা দিয়েছে তাদেরটা দেখে দেখে আপলোড দিচ্ছে।

উপজেলা নির্বাচন অফিসার মুহাম্মদ মুস্তফা কামাল বলেন, ভোটার স্থানান্তরের জরুরি সেবা দেওয়ার জন্য ৩৫০টাকা আমরা নেই। নতুন ভোটারের ডকুমেন্ট আপলোড দেয়ার জন্য নির্দিষ্ট কোন সময় নেই, আমরা ২/৩ মাসের মধ্যেও দিতে পারি।

সিনিয়র জেলা নির্বাচন অফিসার দেওয়ান মো: সারওয়ার জাহান বলেন, স্থানান্তরের জন্য কোন টাকা পয়সা লাগে না, নতুন ভোটারের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সকল ডকুমেন্ট ৭ থেকে ১৫ দিনের মাঝে সার্ভারে আপলোড দিতে হবে।

নয়া শতাব্দী/জেআই

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ