ঢাকা, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

অন্ধর থেকে আলোর পথে ওরা ২০ তরুণ-তরুণী

প্রকাশনার সময়: ১১ জুন ২০২২, ১৭:৫৮

ওদের বয়সী বেশীরভাগ ছেলে-মেয়ে অন্ধ গলির অন্ধকারে হারিয়ে গেছে। মেয়েরা কচি মুখে কড়া মেকাপ মেখে খুঁজে ফেরে খদ্দের। ছেলেরা মাদক, জুয়া, বখাটেপনা ও পল্লীর মেয়েদের ভাড়ুয়া হয়ে দিন কাটায়, কেউবা থাকে মদের ডেরায়। এক অনিশ্চিত জীবনের সামনে প্রতিনিয়ত এগিয়ে চলে তারা। এর থেকে বের হয়ে একটু সুস্থ্য-সুন্দর জীবন লাভের জন্য দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছেন ২০ জন তরুণ-তরুণী।

বাংলাদেশ যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর এসে দাঁড়িয়েছে তাদের পাশে। তারা টানা ১ মাস মেয়াদি ড্রাইভিং প্রশিক্ষণের আয়োজন করে তাদের জন্য। শনিবার তাদের হাতে প্রশিক্ষণ গ্রহণের সনদপত্র তুলে দেয়া হয়।

জানা গেছে, দেশের সর্ববৃহৎ যৌনপল্লী রাজবাড়ী গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া পূর্ব পাড়ায় আবস্থিত। এখানে কয়েক হাজার যৌনকর্মীর বসবাস। তাদের রয়েছে নানা বয়সী সহস্রাধিক শিশু সন্তান। শিশুকাল থেকে অন্ধ গলির অস্বাভাবিক পরিবেশে বেড়ে উঠছে তারা।

পরিবেশের কারণে এদের বেশির ভাগ শিশু, কিশোর ও যুবক বিভিন্ন অসামাজিক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ে। যৌনপল্লী ও আশপাশের এলাকার সুবিধা বঞ্চিত এ সকল যুবকদের পুনর্বাসন করে সমাজের মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে গোয়ালন্দ উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের আয়োজনে ১৭ জন যুবক ও ৩ জন যুবতীসহ মোট ২০ জনকে যানবাহন চালানোর জন্য এক মাস ব্যাপী ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়।

প্রশিক্ষণ শেষে শনিবার (১১ জুন) দুপুরে গোয়ালন্দ উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে প্রশিক্ষণ গ্রহণকারীদের সনদপত্র বিতরণ করেন রাজবাড়ী জেলা প্রশাসক আবু কায়সার খান।

প্রশিক্ষণ গ্রহণকারী বাবলী আক্তার, নয়ন, সম্রাটসহ কয়েকজন বলেন, ‘আমরা এখন আলোর পথযাত্রী। এই প্রশিক্ষণ আমাদের স্বাভাবিক জীবন গড়তে সহযোগিতা করবে। পল্লীতে আরো বিভিন্ন বয়সী যে সকল ছেলে-মেয়েরা রয়েছে তাদের জন্যও এ ধরনের ভালো ভালো উদ্যোগ নেয়া দরকার।

জেলা প্রশাসক আবু কায়ছার খান আশা প্রকাশ করে বলেন, এই প্রশিক্ষণ পূর্ব পাড়ার তরুণ-তরুণীদের স্বাভাবিক কর্মজীবন গড়ার মাধ্যমে সুন্দর ভবিষ্যৎ গঠনে সহায়তা করবে বলে আশা করি। ওদের জন্য আমার আন্তরিক শুভকামনা রইল।

গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আজিজুল হক খান মামুনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন গোয়ালন্দ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ মো: মোস্তফা মুন্সি, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নার্গিস পারভীন, গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি স্বপন কুমার মজুমদার, উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা দেওয়ান তোফায়েল হোসেন, যৌন পল্লীর নারী ও শিশুদের অধিকার প্রতিষ্ঠা নিয়ে কর্মরত বেসরকারি সংগঠন মুক্তি মহিলা সমিতির নির্বাহী পরিচালক মর্জিনা বেগম, প্রোগ্রাম ডিরেক্টর আতাউর রহমান মন্জু প্রমুখ।

নয়া শতাব্দী/জিএস

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ