ঢাকা, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

আরএসআরএমের এমডি ঋণখেলাপি মাকসুদুর আটক : র‌্যাব

প্রকাশনার সময়: ০৯ জুন ২০২২, ০১:১২

রতনপুর স্টিল রি-রোলিং মিলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাকসুদুর রহমানকে আটক করেছে র‌্যাব। তিনি দেশের অন্যতম শীর্ষ ঋণখেলাপী ও ওয়ারেন্ট ভুক্ত আসামি।

বুধবার (৮ জুন) দিবাগত রাত ১টার দিকে তাকে রাজধানীর গুলশান এলাকা থেকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার সহকারী পরিচালক ইমরান হোসেইন। বলেন, পরে সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানানো হবে।

চট্টগ্রামের ইস্পাত খাতের অন্যতম শিল্প প্রতিষ্ঠান রতনপুর গ্রুপ। যেটি আরএসআরএম নামে বেশি পরিচিত। ১৯৮৪ সালে প্রতিষ্ঠা হওয়া গ্রুপটির বার্ষিক টার্নওভার প্রায় ৭০০ কোটি টাকা। যেই কারখানা ঘিরে প্রায় ৮০০ কর্মী উৎপাদন কাজে নিয়োজিত ছিল। কিন্তু ৪০ কোটি টাকা বকেয়া বিদ্যুৎ বিলের কারণে গ্রুপটির দুটি কারখানার উৎপাদন গত এক বছর ধরে বন্ধ রয়েছে।

গ্রুপটির কাছে বর্তমানে ১০টি ব্যাংক-আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ২২০০ কোটি টাকার ঋণ আটকে আছে। এই পাওনা আদায়ে গ্রুপটির কর্ণধারদের বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত ২০টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে সোনালী ব্যাংকের দুটি এনআই অ্যাক্ট মামলায় গ্রুপটির কর্ণধারদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে।

ব্যাংকগুলোর দায়ের করা মামলায় রতনপুর গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মাকসুদুর রহমান, চেয়ারম্যান শামসুন নাহার রহমান, এমডির সহোদর ইউনুস ভূঁইয়া, দুই ছেলে মিজানুর রহমান ও মারজানুর রহমান, মডার্ন স্টিল মিলস লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. আলা উদ্দিনকে বিবাদী করা হয়েছে।

রতনপুর গ্রুপের কাছে সবচেয়ে বেশি ১২০০ কোটি টাকা পাওনা রয়েছে জনতা ব্যাংক লালদিঘী শাখার। এর মধ্যে মেসার্স মডার্ন স্টিল মিলস লিমিটেডের কাছে ৪০৯ কোটি, মেসার্স রতনপুর শিপ রিসাইক্লিং ইন্ডাস্ট্রিজের কাছে ৩১৩ কোটি ও এসএম স্টিল রি-রোলিং মিলস লিমিটেডের কাছে ৪৮২ কোটি টাকা পাওনা রয়েছে।

রতনপুর গ্রুপের প্রতিষ্ঠান মেসার্স রতনপুর স্টিল রি-রোলিং মিলস লিমিটেডের (আরএসআরএম) কাছ থেকে ২০১ কোটি টাকা খেলাপি আদায়ে প্রতিষ্ঠানটির স্থাবর সম্পত্তি নিলামে তুলতে গত ৫ জানুয়ারি গণমাধ্যমে বিজ্ঞাপন দেয় সোনালী ব্যাংক।

নিলাম বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়- মেসার্স রতনপুর স্টিল রি-রোলিং মিলসের কাছে সোনালী ব্যাংকের ২০১ কোটি ৪৩ লাখ ৫২ হাজার ৮৬৫ টাকা পাওনা খেলাপি হয়েছে। এই পাওনার বিপরীতে চট্টগ্রামের বায়েজিদ এলাকায় গ্রুপটির কারখানাসহ ১০০ শতক জমি বন্ধক রয়েছে। দীর্ঘদিনেও ঋণ পরিশোধ না করায় অর্থঋণ আদালত আইন ২০০৩ (সংশোধন ২০১০) এর ১২ ধারার বিধান মোতাবেক প্রতিষ্ঠানটির স্থাপনাসহ এসব স্থাবর সম্পত্তি নিলামে তোলা হবে।

এ ছাড়া এই ঋণ আদায়ে আরএসআরএম গ্রুপের বিরুদ্ধে অর্থঋণ ও এনআই অ্যাক্টে মোট ১২টি মামলা করেছে ব্যাংকটি।

এক বছর ধরে উৎপাদন বন্ধ রয়েছে চট্টগ্রামভিত্তিক আরএসআরএম গ্রুপের দুটি ইস্পাত কারখানার। দীর্ঘদিনের বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকা ও ওয়ার্কিং ক্যাপিটালের অভাবে ২০২১ সালের ১২ ডিসেম্বর গ্রুপটির দুটি কারখানার উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়।

এর মধ্যে গত ৩০ সেপ্টম্বর স্টক এক্সচেঞ্জে চিঠি দিয়ে আরএসআরএমের দুটি কারখানা উৎপাদনে যাওয়ার কথা বলে। ওই ঘোষণার পর আরএসআরএমের শেয়ারের দাম সর্বোচ্চ ৩৮ টাকায় পৌঁছে। এই সুযোগে আরএসআরএমের কর্ণধার তাদের কাছে থাকা ২০ লাখ শেয়ার বিক্রি করে দেয়। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার ২৩ টাকায় নেমে আসে।

নয়া শতাব্দী/জেআই

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ