রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার হাটকানপাড়া বাজারের উত্তরে তাহেরপুর-দুর্গাপুর রোডের শ্যামপুর বাজার পর্যন্ত দীর্ঘ প্রায় ৮ কিলোমিটার সড়ক চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। অপরিকল্পিতভাবে পুকুর খননের মাটি ট্রাক্টরে বহনের ফলে পাকা রাস্তার উপর কাচা মাটি পড়েছে। পাকা রাস্তায় জমে থাকা মাটিতে বৃষ্টির পানি পড়ে রাস্তা পিচ্ছিল হয়ে মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। রাস্তায় মোটরসাইকেল, সিএনজি, অটোরিক্সা, ভ্যানসহ বিভিন্ন যানবাহন চলাচল অনুপযোগি হয়ে পড়েছে।
সোমবার (৬ জুন) মাত্র কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে চার-পাঁচটি মোটরসাইকেল ও অটোরিক্সা দুর্ঘটনায় পড়ে। কাদাময় রাস্তায় ব্রেক করলে যানবাহন উল্টে গিয়ে মারাত্মক দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। অথচ সেখানে ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনধি ও স্থানীয় প্রশাসনের নজরে পড়লেও তারা কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। প্রতিনিয়ত অবৈধ পুকুর খনন করে সেই রাস্তায় ট্রাক্টরে করে মাটি বহন করে রাস্তা নষ্ট করা হচ্ছে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করলেও কোনো প্রতিকার পাচ্ছে না। নিরব ভূমিকা পালন করছে প্রশাসনসহ জনপ্রতিনিধিরা। দুর্গাপুরের শত শত বিঘা কৃষি জমি পুকুর খননের মাধ্যমে হারিয়ে যাচ্ছে।
সরেজমিনে সোমবার ওই রাস্তায় চলাচল করতে গিয়ে দেখা গেছে, সোমবার সকালে সামান্য বৃষ্টিপাতের কারণে রাস্তায় পড়ে থাকা মাটিগুলো পিচ্ছিল হয়ে পুরো রাস্তা চলাচলের অনুপযোগি হয়ে পড়েছে। যানবাহন নিয়ে সেখানে চলাচল করা যাচ্ছে না। মোটরসাইকেল বা সিএনজি, অটোরিক্সা নিয়ে রাস্তায় উঠলে কর্দমাক্ত পিচ্ছিল রাস্তায় খানা-খন্দে পড়ে মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটছে।
ইমরান আলী নামে কলেজ পড়ুয়া এক শিক্ষার্থী সোমবার সকালে ওই রাস্তায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার শিকার হন। দুর্ঘটনায় তার হাতে মারাত্মক জখম হয়। একইভাবে দুর্ঘটনায় পড়েন বাগমারা থেকে আগত পথচারী শেখ জামাল। তিনি বলেন, এটি রাস্তা নয়, যেন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। অবৈধ পুকুর খননের মাটি বহণ করে এই রাস্তা নষ্ট করা হয়েছে। অচিরেই রাস্তাটি মেরামত না করলে রাস্তার ধারে থাকা স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ পথচারীরা আরো বিপদে পড়বে।
বখতিয়ারপুর গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা সিদ্দিকুর রহমান নয়া শতাব্দীকে বলেন, এই রাস্তা ঘেঁষে রয়েছে বখতিয়ার ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স, বখতিয়ারপুর স্কুল, কলেজ ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এছাড়া রাজশাহী সদর থেকে বাগমারা, তাহেরপুর, আত্রাই, দুর্গাপুরের আলীপুর, উজাল খলসি এলাকার হাজার হাজার লোক এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করে। কিন্তু বর্তমানে দুর্গাপুরে পুকুর খননের হিড়িক পড়েছে। জনপ্রতিনিধি, স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশকে অর্থনৈতিক সুবিধা ও বিভিন্নভাবে ম্যানেজ করে অবৈধ পুকুর খননের মাটি ট্রাক্টর দিয়ে বহন করা হচ্ছে। এতে রাস্তা মাটি পড়ে নষ্ট হচ্ছে। পথচারীরা মারাত্মক দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন। অথচ কোনো প্রতিকার নেই। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, এই দেশে কোনো বিচার নেই। চোখের সামনে এ ঘটনার কোনো সুরাহা নেই।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে রাজশাহী দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সোহেল রানা নয়া শতাব্দীকে বলেন, কানপাড়া-শ্যামপুর রাস্তাটি ট্রাক্টর চলাচলে নষ্ট হয়েছে বলে আমি জেনেছি। অচিরেই সেখানে অভিযান পরিচালনা করবো। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
নয়া শতাব্দী/জেআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ