দখল দূষণে ধীরে ধীরে মরে যাচ্ছে ঢাকার প্রাণ বুড়িগঙ্গা। যে বুড়িগঙ্গা তীরে উঠেছিল রাজধানী ঢাকা, আজ সেই ঢাকার উন্নয়নে ঢাকার মানচিত্র থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে বুড়িগঙ্গার চিত্র। সেই বুড়িগঙ্গাকে দখলমুক্তর দাবিতে ‘বুড়িগঙ্গার গণগোসল’নামে একটি ব্যতিক্রমী আয়োজন করেছে জেসিআই ঢাকা নর্থ, ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ, রিভার অ্যান্ড ডেল্টা রিসার্চ সেন্টার ও বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন-বাপা।
আগামীকাল রোববার (৫জুন) বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে তারা এ ব্যতিক্রমী আয়োজন করবে। এদিন সকালে মোহাম্মদপুর বসিলা ব্রিজ এলাকায় আয়োজিত এই গণগোসল অনুষ্ঠানে নদীপাড়ের মানুষ, কর্তব্যরত ব্যক্তিবর্গ, পরিবেশকর্মী, গবেষক, শিক্ষক, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, যুব নেতৃবৃন্দ, সেলিব্রেটি ও মিডিয়া কর্মীসহ কয়েকশ মানুষ উপস্থিত থাকবেন।
আয়োজকরা জানান, বুড়িগঙ্গার পানিকে গোসলের উপযোগী করা, দূষণমুক্ত পরিবেশ তৈরি এবং বুড়িগঙ্গার নদী দূষণের শিকার ব্যক্তিদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
বুড়িগঙ্গা নদী ঢাকা শহরের জন্য শুধু অর্থনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণই নয়, বরং এটি ঢাকার ত্রাণকর্তাও। নদীটির তীরে ৫২ লাখেরও বেশি মানুষ বাস করে। আজ এই নদী সামগ্রিকভাবে দূষণে জর্জরিত। কল-কারখানার রাসায়নিক বর্জ্য, গৃহস্থালির বর্জ্য, চিকিৎসা বর্জ্য, পয়োনিষ্কাশন, মৃত্যু প্রাণী, প্লাস্টিক ও তেল বুড়িগঙ্গাকে প্রতিনিয়তই দূষণ করে যাচ্ছে, নষ্ট হচ্ছে ইকোলজিকাল ভারসাম্য। যার ফলে একদিকে যেমন বুড়িগঙ্গা হারাচ্ছে তার যৌবন, অন্যদিকে ধীরে ধীরে ধাবিত হচ্ছে মৃত্যুর দিকে।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন বাপা’র সাধারণ সম্পাদক ও ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ’র সমন্বয়ক শরীফ জামিল বলেন, পরিবেশ ও জীবনের ক্ষয়ক্ষতির কথা মাথায় রেখে বুড়িগঙ্গা নদীকে বাঁচাতে আমাদের কাজ করতেই হবে। বুড়িগঙ্গা নদী কার্যত প্রাণহীন হয়ে পড়েছে। ঢাকাকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে বুড়িগঙ্গাকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে।
রিভার এন্ড ডেল্টা রিসার্চ সেন্টারের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এজাজ বলেন, বুড়িগঙ্গার দূষণের কারণে আশপাশের পরিবেশ, নদী জীবন ও মানুষ সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। দূষণে অত্র অঞ্চলের পরিবেশগত ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। যার প্রভাব দীর্ঘমেয়াদী। গণগোসল কর্মসূচির মাধ্যমে আমরা এই দূষণের প্রতিবাদ জানাতে চাই।
‘বুড়িগঙ্গায় গণগোসল’-এর সমন্বয়ক ও জেসিআই ঢাকা নর্থ-এর ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, মানুষের জীবন, সম্পদ, সর্বোপরি ঢাকা শহরকে বাঁচাতে হলে বুড়িগঙ্গা ও এর বৈচিত্র্যকে বাঁচাতে হবে। ভিন্নধর্মী এই আয়োজনে মধ্য দিয়ে আমরা বুড়িগঙ্গাকে দূষণের হাত থেকে রক্ষা করতে এবং বুড়িগঙ্গার পানিকে গোসলের উপযোগী করতে সবাইকে উৎসাহিত করতে চাই।
নয়া শতাব্দী/জেআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ