ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

তিস্তার ভাঙনে দিশেহারা হাজারো পরিবার

প্রকাশনার সময়: ০১ জুন ২০২২, ০২:৪৯

লালমনিরহাট, নীলফামারী ও কুড়িগ্রামে তিস্তা নদীর অব্যাহত পানি বৃদ্ধিতে ৩টি স্থানে তীব্র নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টার ভাঙনে শতাধিক পরিবারের বসতভিটা নদীতে বিলিন হয়েছে। আতংকিত ভাঙন এলাকার মানুষের ঘরবাড়ি সরিয়ে নেয়া হচ্ছে।

ইতিমধ্যে নদীতে বিলিন হয়েছে কুড়িগ্রামের গোড়াই পিয়ার, দালাল পাড়া, হোকডাঙ্গা ও ডাক্তার পাড়া গ্রাম। পাউবো জিও ব্যাগ দিয়ে ও ভাঙন রোধ করতে পারছে না। ফলে ভাঙনের কবলে পড়েছে ৫ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ২টি ওয়ার্ড ক্লিনিক, বাধেঁর রাস্তাসহ ৭টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ। ভয়াবহ ভাঙ্গন কবলিত তিস্তা পাড়ের নিঘুম মানুষজন আতংকিত ও দিশেহারা হয়ে পড়েছে।

চলতি বষার্ মৌসুমে ৩ দফা তিস্তা নদীর ভাঙ্গনে লালমনিরহাটের হাতিবান্ধা, নীলফামারীর ডিমলা ও জলঢাকা উপজেলা কুড়িগ্রামের থেতরাই ইউনিয়নের গোড়াই পিয়ার, হোকডাঙ্গা ও দালাল পাড়া গ্রামের ৫'শ পরিবার বসতবাড়ীসহ সহায় সম্পদ হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছে। ইতিমধ্যে নদীতে বিলিন হয়েছে গোড়াই পিয়ার, হোকডাঙ্গা, হিন্দু পাড়া ও দালাল পাড়া গ্রাম। বিলিন হয়েছে আবাদী জমি, গাছ পালা, সড়ক কালভাট ও ২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ভাঙনের হুমকিতে পড়েছে ঝাকুয়া পাড়া, মন্ডল পাড়া, মুলাধোয়ার পাড়, হিন্দু পাড়া, ডাক্তার পাড়া, মাঝিপাড়া ও ভারত পাড়াসহ ৭টি গ্রাম। এছাড়া গোড়াই পিয়ার দাখিল মাদ্রাসা, গোড়াই পিয়ার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, হোকডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, হোকডাঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়, দক্ষিণ চর হোকডাঙ্গা প্রাথমিক বিদ্যালয়, ২টি ওয়ার্ড ক্লিনিক, ৫টি মসজিদ, ২টি মন্দির ও ৭ গ্রামের কয়েক হাজার পরিবার।

জলঢাকা উপজেলার গোলমুন্ডা ইউনিয়নের ভাবনচূর এলাকায় তিস্তার আগ্রাসী ভাঙনে ভিটামাটি ও ফসলী জমি বিলিন হয়েছে শতাধিক পরিবারের। পানিতে ডুবে গেছে কয়েক'শ একর জমির বাদাম, মিস্ট্রি কুমড়া, ভুট্রাসহ অনান্য ফসল।

জলঢাকা উপজেলার ভাবনচূর তিস্তার চরে এবার কুমড়া চাষ করেছিলেন নগেন রায় তিনি জানান, 'ছয় দোন (বিঘা) মাটিত কুমড়া লাগাছিনু, আর কয়েকটা দিন হইলেই পোক্ত হইত, এই সময় পানি বাড়েনা; এবার আগতে পানি বাড়ি তলে গেইছে; জ্বালা (অপরিপক্ক)কুমড়া তুলি আনছুং। মোর ম্যালা লস হইবে।'

গত কয়েক সপ্তাহের টানা বৃষ্টিতে পানি বৃদ্ধিতে ক্ষতিগস্ত হয়েছেন কৃষক।

জলঢাকা গোলমুন্ডা ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান জানান, ভাঙ্গনের কারণে গত কিছুদিন থেকে বেশ কিছু বাড়ি বিলীন হয়েছে। গত ২ দিন ধরে গ্রামের মানুষজন নিয়ে ভাঙন এলাকায় গিয়েছিলাম। যখন যে বাড়ি হুমকির মুখে পড়ছে তখনই সেটা সরিয়ে নেয়া হচ্ছে।

নীলফামারী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিবার্হী প্রকৌশলী কৃষ্ণকমল চন্দ্র সরকার জানান, আপদকালীন ভাঙনরোধে জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন রক্ষার চেষ্টা করা হচ্ছে। এককালিন ভাঙন রোধে একটি প্রকল্প দাখিল করা হয়েছে। বরাদ্ধ পাওয়া গেলে কাজ শুরু করা হবে।

নয়া শতাব্দী/জিএস

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ