কুমিল্লার লালমাইয়ে গরু বিক্রির প্রায় ১২ লাখ টাকার জন্য খামারের মালিক-কর্মচারীকে হত্যার অভিযোগে মামলা হয়েছে। মালিক নিহত শরীফের পিতা হাছান আহমেদ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, ঈদ উল আযহার ৪দিন আগে ৬টি গরু ১১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি করে শরীফ। সেই টাকার জন্য অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা দু'জনকে হত্যা করে।
নিহতদের পরিবারের সদস্য, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গ্রামবাসীর সূত্র জানায়, ইছাপুরা গ্রামের হাছান আহম্মদের একমাত্র ছেলে হায়াতের নবী শরীফ (২৮)। ছোটকাল থেকেই নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে বিভিন্ন উদ্যোগ নিতেন। পারিবারিকভাবে গরু পালন করতেন। প্রথম দিকে বেলঘর বাজারস্থ একটি মুদি দোকানে চাকরি করতেন। গত বছর থেকে বাড়িতে ছোট পরিসরে বাণিজ্যিকভাবে গরু পালন শুরু করেন। গ্রামে একটি মুদি দোকান প্রতিষ্ঠা করেন। ব্যবসায়ের সহায়তার জন্য কর্মচারী হিসেবে চাকরি দেন একই গ্রামের আবুল হাশেমের ছেলে ফয়েজ আহমেদ পরানকে (১৮)। মালিক কর্মচারীর ব্যবধান কমিয়ে শরীফ যে কোন কাজে ফয়েজকে আপন ভাইয়ের মতো আদর করতেন। ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও ব্যবসায়িক সকল কাজে বিশ্বাস করতেন। নিজে যা খেতেন, ফয়েজকেও খাওয়াতেন। নিজে যেমন পোশাক পরতেন ফয়েজকেও তেমন পরাতেন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দু’জনের পোশাক একই ডিজাইন ও একই রঙের হতো। প্রতিদিন ব্যবসায়ীক কাজ শেষে শরীফের নিজের কক্ষে একই খাটে দু’জন রাত্রিযাপন করতেন।
নিহত শরীফের পিতা হাছান আহমেদ বলেন, পরিকল্পিতভাবেই দু'জনকে হত্যা করা হয়েছে। অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার রাতে লালমাই থানায় মামলা করেছি।
লালমাই থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আইয়ুব বলেন, প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে ফয়েজ আহমেদকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। তার গলায় জখম ও খামচির দাগ রয়েছে। শরিফের লাশ ছিল ঝুলন্ত। ঘরের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ ছিল। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন এলে ও মরদেহের বিভিন্ন আলামত পর্যালোচনা করে মৃত্যুর মূল কারণ উদ্ঘাটন করা হবে।
এদিকে বুধবার বিকালে কুমিল্লার পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ ঘটনাস্থল পরিদর্শক শেষে সাংবাদিকদের বলেন, হত্যা মামলাটি বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য- মঙ্গলবার শরীফের মরদেহ ঘরের দক্ষিণ পাশের কক্ষের সিলিংয়ের সাথে ঝুলন্ত ছিলো। ফয়েজের মরদেহ খাটে পড়ে ছিলো। ফয়েজের গলায় হালকা দাগ রয়েছে। নাক মুখ থেকে রক্তক্ষরণ হয়।
নয়া শতাব্দী/এম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ