নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার দশটি ইউনিয়নের বিস্তৃর্ণ মাঠে দু-চোখ যতদূর যায় ততদূর পর্যন্ত পাঁকা সোনালী ধান ক্ষেতে স্বপ্ন বুনছিলেন কৃষক ; যা ফিকে হয়ে যাচ্ছে।
রোববার (১৫ মে) সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার সুন্দর খাতা, বালাপাড়া, তিতপাড়া, খগাখড়িবাড়ী, পশ্চিম ছাতনাই, গয়াবাড়ী, ছোটখাতা, চাপানী, নাউতারা, ডিমলাসহ জেলার বিভিন্ন নদী নিকটবর্তী এলাকায় বিস্তৃর্ণ মাঠের পাঁকা ধান শ্রমিক সংকটের কারণে ঘরে তুলতে পারছেন না কৃষক। ধানের ফলন আশানুরুপ হলেও ধান কাটার আধুনিক যন্ত্র পর্যাপ্ত না থাকায় শ্রমিক সংকটে দিশেহারা কৃষক। উচ্চমূল্যেও কৃষকদের ক্ষেতের ধান কাটার জন্য মিলছে না শ্রমিক।
ঘন ঘন বৃষ্টির ফলে ধান ক্ষেতে পানি জমাট বেঁধে আছে। জমির ধান কাটা নিয়ে বিপদে আছে ডিমলা উপজেলার কৃষকরা। শ্রমিক সংকটের কারণে অনেক কৃষক পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ধান কাটা শুরু করেছেন। আবহাওয়া অনুকূল না থাকায় শ্রমিক সংকটের কারণে কৃষকেরা বিঘা প্রতি (৩০ শতাংশ) জমির ধান কাটতে গুনতে হচ্ছে ৩০০০ থেকে ৩৫০০ টাকা পর্যন্ত যা গত বছরের চেয়ে অনেক বেশী।
খগাখড়িবাড়ী ইউনিয়নের কৃষক প্রিন্স জানান, ৭ বিঘা জমিতে বোরো ধান রোপন করেছি । ধান ক্ষেতে হাঁটু পরিমাণ পানি। ধান কাটার শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। এমনিতেই শ্রমিক সংকট আবার ধান ক্ষেতে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা এজন্য বাড়তি টাকা গুনতে হচ্ছে তবুও শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না ।
বালাপাড়া ইউনিয়নের কৃষক জিকরুল হক জানান, আট বিঘা জমির ধান ৯৫ ভাগ পেকেছে বিঘা প্রতি (৩০ শতাংশ) জমির ধান কাটতে ৪০০০ টাকা দিলেও শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। ধান কাটা শ্রমিক না থাকায় কোমড় পরিমাণ পানিতে দু'একটা দিনমুজুর আর ছোট ছোট ছেলেদের নিয়ে ধান কাটতেছি। যদি বৃষ্টি হয় আর উজানের পানি আসে তাহলে ধান তলিয়ে যাচ্ছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ডিমলা উপজেলায় বোরো মৌসুমে প্রায় ১১ হাজার ৫০০ হেক্টর জমি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। চলতি বছর এ উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি পরিমাণের বোরো ধান চাষ হয়েছে।
এ বিষয়ে ডিমলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সেকেন্দার আলী বলেন, বোরো ধানের ফলন ভালো হয়েছে। শ্রমিক সংকট দেখা যাওয়ায় অনেক এলাকার কৃষকেরা আধুনিক যন্ত্রপাতি হারভেস্টার ব্যবহার করে ধান কেটে পাঁকা ধান ঘরে তোলার চেষ্টা করছে। শ্রমিক সংকটের কারণে ক্ষেতের পাঁকা ধানের ক্ষতি হতে পারে তবে দু-একদিনের মধ্যে শ্রমিক সংকট থাকবে না। কৃষকেরা আমাদের প্রাণ। কৃষকেরা এ উপজেলার খাদ্য চাহিদা মিটিয়ে দেশের জনগনের খাদ্য চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম হবে এবং দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে সর্বাত্মক চেষ্টা করবে।
নয়া শতাব্দী/এমআরএইচ
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ