খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার ময়নাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ১৯৯১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় স্কুলটি। ২০১৫ সাল পর্যন্ত মোটামুটি শিক্ষার্থী থাকলেও বিগত ৭ বছর ধরে এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিতে নেই কোন শিক্ষার্থী। মূলত, উল্লিখিত সময়ে স্কুল এলাকার ২৯টি পরিবারে কোন শিশুর জন্ম না হওয়ায় শিক্ষার্থী সংকটে পড়েছে স্কুলটি। ফলে স্কুলটি বন্ধের সুপারিশ করেছেন কর্তৃপক্ষ।
এদিকে, এ প্রতিষ্ঠানটিতে শিক্ষার্থী না থাকলেও আছেন তিনজন শিক্ষক। শ্রেণিকক্ষে পাঠদান করতে না হলেও টানা ৭ বছর ধরেই বসে বসে বিনা পরিশ্রমে বেতন নিচ্ছেন তারা। তবে, অপেক্ষায় আছেন- শিশু জন্মের এবং স্কুলে ভর্তির।
বিষয়টি স্বীকার করে ময়নাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক স্বপ্না রানী বলেন, ২৯টি পরিবার নিয়ে আমাদের ময়নাপুর গ্রাম। এই গ্রামে গত ৭ বছরে কোনো বাচ্চা জন্মেনি। এ কারণে স্কুলে ছাত্র-ছাত্রীর এই দুরাবস্থা।
সরেজমিনে ময়নাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, এটি যেন একটি পরিত্যক্ত ভাগাড়। পড়ে আছে বিশাল স্কুল ভবন। শ্রেণিকক্ষ ফাঁকা। নেই কোন শিক্ষার্থী-কোলাহল। তবে স্কুল ঘিরে আবর্জনার স্তুপ দেখা দেছে। স্কুল কাম আশ্রয় কেন্দ্রের নিচতলায় ধান শুকানো হচ্ছে। মাঠে চুলা বানিয়ে সেখানে ধান সেদ্ধও করা হচ্ছে। এভাবে ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার হচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।
এ বিষয়ে ডুমুরিয়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সিকদার আতিকুর রহমান বলেন, শিক্ষার্থী সার্ভের পর গত মার্চ মাসে ময়নাপুর স্কুলটি বন্ধের জন্য জেলা শিক্ষা অফিসে লিখেছি। কিন্ত এখনও সিদ্ধান্ত আসেনি।
খুলনা জেলা শিক্ষা অফিসার মো. সিরাজুদ্দোহা বলেন, ওই স্কুলটি বন্ধ করে সেখানকার শিক্ষকদের অন্যত্র বদলি করার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখেছি। সিদ্ধান্ত বা নির্দেশনা পেলে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অপরদিকে ডুমুরিয়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় ২১৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে। এ ২১৪ প্রতিষ্ঠানে ২২ হাজার ৬১৭ জন ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে। এরমধ্যে ২১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৫০ এর নিচে।
নয়া শতাব্দী/জেআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ