আগামী ১২ মে ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনকে সামনে রেখে শহরে বিশাল শোডাউন করেছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রার্থী বিপুল ঘোষ। রোববার (০৮ মে) বিকালে শহরের প্রেসক্লাব চত্বরে শোডাউন পরবর্তী জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিপুল ঘোষ বলেন, ‘ফরিদপুরবাসীর উপর নতুন করে আবার সেই হাতুড়ি বাহিনী, হেলমেট বাহিনীর উথ্থান ঘটেছে, তারা ফরিদপুরবাসীর উপর চেপে বসেছে।’
এর আগে শহরের গোয়ালচামট এলাকার পিটিআই চত্বরে সমবেত হন সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বিপুল ঘোষের সমর্থক ও নেতা কর্মীরা। সেখান থেকে মিছিল, ব্যানার, ফেস্টুন নিয়ে তারা শহর প্রদক্ষিন শেষে প্রেসক্লাব চত্বরে গিয়ে সমবেত হন। সেখানে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে দেন বিপুল ঘোষ।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ একটি বৃহৎ ও প্রাচীন রাজনৈতিক দল। দলটির তৃনমূলের নেতাকর্মীরা গভীর উৎকন্ঠা নিয়ে অপেক্ষায় রয়েছে আসন্ন সম্মেলনে কারা নেতৃত্বে আসে তা দেখার জন্য। এর আগে আওয়ামী লীগের শাসনামলেই আমরা নির্যাতিত নিষ্পেষিত হয়েছিলাম। জননেত্রী শেখ হাসিনা নিজে হস্তক্ষেপ করে আমাদেরকে সেই অত্যাচারীর হাত থেকে বাঁচিয়েছেন। কিন্তু নতুন করে আবার সেই হাতুরী বাহিনী, হেলমেট বাহিনীর উথ্থান ঘটেছে, তারা ফরিদপুরবাসীর উপর চেপে বসেছে। এদের হাত থেকে পরিত্রান না পেলে ভবিষ্যতে দলের অবস্থা আরো ভয়াবহ হবে। এদেরকে উৎখাত না করতে পারলে ফরিদপুরের মানুষের জীবন আগের চাইতে আরো দুর্বিষহ হবে।
তিনি বলেন, আমাদের দলে অনেক নেতা। অনেকেরই গুরুত্বপূর্ণ অবদানের ইতিহাস রয়েছে। কিন্তু সবাইকে গুরুত্বপূর্ণ পদে আসিন করা সম্ভব নয়। তিনি ফরিদপুর পৌরসভার মেয়রকে ইঙ্গিত করে বলেন, তিনি বড় একটি জায়গা পেয়েছেন। আবার দলের সাধারণ সম্পাদকও হতে চান। এভাবে একজনেরই যদি অনেককিছু লাগে তাহলে অন্যরা যাবে কোথায়।
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী ও দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনা সম্মেলনের দিন দলের সাধারণ সম্পাদকের কাছে যাদেরকে সভাপতি-সম্পাদক মনোনিত করে পাঠাবেন সেটাই আমরা সবাই মেনে নিবো। এখন প্রশ্নটা হলো, জননেত্রী শেখ হাসিনাই যদি নেতৃত্ব নির্বাচন করবেন তাহলে আপনাদের মহড়ার দরকারটা কী? তিনি বলেন, আমরাতো মহড়া দেই না। কোন জায়গায় আমার একটা পোস্টার নাই, একটা ব্যানার নাই। ৫৩ বছর রাজনীতি করি। একাত্তর মাস জেল খাটছি। ১৭ বার জেলে গেছি আওয়ামী লীগের কারণে। একবারও আমার ব্যক্তিগত কোন কারণে আমি জেলে যাই নাই।
তিনি বলেন, আপনারা অনেকে প্রার্থী হয়েছেন। আমি তাদের একবারও বলি না আপনারা কেনো আমার বিরুদ্ধে প্রার্থী হইলেন? কিন্তু আমার লোক, আমার সমর্থক, শেখ হাসিনার লোক; তাদের যদি আপনারা মারেন তা হইলে কিন্তু আপনারা পালানোর জায়গা খুঁজে পাবেন না। এই জনগণ টাকায় আসে না। জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভালবাসায় আসে। কিন্তু আপনারা যদি জোর করে কিছু করতে চেষ্টা করেন তাহলে আপনাদের কপালে বহু দুর্ভোগ আছে। কোন কারণে যদি সাধারণ মানুষগুলো ক্ষেপে যায়, তাহলে এদের হাত থেকে আপনারা বাঁচতে পারবেন না।
ফরিদপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সিদ্দিকুর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় আরো বক্তব্য রাখেন জেলা আ’লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কে এম সেলিম, ফরিদপুর পৌর আ’লীগের আহবায়ক মনিরুল হাসান মিঠু, সদস্য আশরাফুজ্জামান মুরাদ, জেলা যুবলীগের আহবায়ক কমিটির সদস্য তাওফিক হোসেন পুচ্চি, জেলা মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্মলীগের সাধারণ সম্পাদক ডা. নাদিম হোসেন প্রমূখ।
নয়া শতাব্দী/জেআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ