ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

খুলনার পাম্পগুলোতে পেট্রল সংকট চরমে

প্রকাশনার সময়: ০৭ মে ২০২২, ২০:০৩

চাহিদা বেড়ে যাওয়ার কারণে খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় পাম্পগুলোতে চলছে পেট্রল সংকট। গত ৭ দিন ধরে পেট্রল পাওয়া যাচ্ছে না। এতে চরম বিপাকে পড়তে হচ্ছে গাড়ির মালিকদের। বিশেষ করে মোটরসাইকেল চালকদের। পাম্প মালিকরা বলছেন, ডিপো থেকে কোন পেট্রল সরবরাহ করা হচ্ছে না। সেখানেই চলছে সংকট। এভাবে সংকট চললে পাম্প বন্ধের হুমকি দিচ্ছেন জ্বালানি পরিবেশকরা।

শহরের বকচর এলাকার মাসুদ বিশ্বাস জানান, গত এক সপ্তাহ ধরে পাম্প থেকে পেট্রল মিলছে না। তেল আনতে গেলে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে পেট্রল নেই। যেকারণে বাধ্য হয়ে অকটেন কিনতে হচ্ছে। একটানা অকটেনে মোটরসাইকলে চালালে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে সমস্যায় পড়ছি।

নিজের প্রাইভেটকার ভাড়ায় চালান শহরের বেজপাড়ার বাসিন্দা সাইদ হাসান হিরা। তিনি বলেন, প্রতিদিন অকটেন কিনে পারা যাচ্ছে না। যাত্রীর কাছে বেশি ভাড়া চাইলে তারা যেতে চায় না। এভাবে পেট্রল সংকট চললে আমার মতো হাজারো প্রাইভেটকার চালককে বিপাকে পড়তে হবে।

যশোর-ঝিনাইদহ সড়কের সাতমাইল এলাকার আফিল ফিলিং স্টেশনের মালিক গাজী হাসানুল কবীর হাসান বলেন, আমরা খুলনার ডিপো থেকে তেল সংগ্রহ করে থাকি। সেখানে পেট্রলের মজুদ নেই। আবার পেট্রলের চাহিদা বেড়ে গেছে। যেকারণে খুলনা বিভাগের সব জায়গায় পেট্রল সংকট চলছে। এতে গ্রাহকদের সাথে আমাদের কর্মীদের বাকবিতন্ডা চলছে। অনেকে বেশি দামে অকটেন নিতে চাইছে না।

মনিহার এলাকার যাত্রীক পেট্রল পাম্পের মালিক আতিকুর রহমান জানান, আমরা খুলনার সরকারি জ্বালানি তেল ডিপো থেকে সংগ্রহ করি। গত ১৫ দিন ধরে সেখান থেকে পেট্রল দিচ্ছে না। বলা হচ্ছে মজুদ বাড়লে পাবেন। যেকারণে সব পাম্পে পেট্রল নেই। এতে কিছু গ্রাহকের সাথে আমাদের কথাকাটাকাটি হচ্ছে। বুঝাতে চাইলেও তারা মানতে নারাজ। আবার প্রচুর মোটরসাইকেল বেড়ে যাওয়ার কারণে পেট্রল বিক্রি বেড়ে গেছে। এতে চাহিদা অনুযায়ী পেট্রল মিলছে না।

যশোর জেলা জ্বালানি পরিবেশক সমিতির সাধারণ সম্পাদক গোলাম কাদের মিন্টু জানান, খুলনা বিভাগে মোট ২৬৫টি পাম্প রয়েছে। এরমধ্যে যশোর জেলায় রয়েছে ৬১টি। গত ১৫দিন ধরে খুলনা বিভাগের সব পাম্পে পেট্রল সংকট মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। একারণে আমরা পাম্পে পেট্রল নেই সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দিয়েছি। পেট্রল না থাকার কারণে মোটরসাইকেল চালকদের সাথে বেশি বাদানুবাদ হচ্ছে। পরিস্থিতি বেশি খারাপ হলে জালানি তেল বিক্রি বন্ধ করা ছাড়া উপায় থাকবে না। বিষয়টি তিনি সরকারকে নজর দেওয়ার আহবান জানান।

এব্যাপারে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম ডিলার্স ডিস্ট্রিবিউটরস্ এজেন্টস এন্ড পেট্রল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাজ্জাদুল করিম কাবুল জানান, দীর্ঘদিন ধরে চাহিদা অনুযায়ী পেট্রল সরবরাহ করতে পারছে না জ্বালানি কোম্পানিগুলো। সরবরাহ বাড়াতে বিপিসির তৎপরতা নেই। এতে সারা দেশের পাম্পগুলোতে পেট্রল সংকট চলছে। বেশিরভাগ পাম্প পেট্রল শূন্য হয়ে পড়েছে। বিপিসির উদাসীনতার কারণে বিপাকে পড়তে হচ্ছে পাম্প মালিকদের। তাদের উচিৎ ঘোষণা দিয়ে পেট্রল বিক্রি বন্ধ রাখা। তা না হলে পাম্পগুলোতে পেট্রল বিক্রি বন্ধ করা ছাড়া আর কোন উপায় থাকবে না।

খুলনার পদ্মা অয়েল কোম্পানির সেলস ম্যানেজার আল মামুন জানান, তাদের ডিপোতে সংকট থাকার কারণে পেট্রল সরবরাহ করা কম হচ্ছে। সব পাম্পে পেট্রলের চাহিদা বেড়েছে দ্বিগুণ থেকে তিনগুণ। যে কারণে সংকট দেখা দিয়েছে।

নয়া শতাব্দী/জেআই

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ