অদক্ষ জনবলকে দক্ষ জনশক্তিতে রুপান্তর করছে চুয়াডাঙ্গা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। এখানে প্রশিক্ষণ নিয়ে বেকারত্ব দূরের পাশাপাশি দেশ-বিদেশে কর্মসংস্থানের মাধ্যমে স্বাবলম্বী হয়ে উঠছেন তারা। সহজে বদলে যাচ্ছে নিজেদের ভাগ্য। প্রতি বছর বিদেশ থেকে পাঠাচ্ছেন রেমিট্যান্স। এখানে ১৩টি কোর্সের মাধ্যমে বেকার যুবক ও যুব মহিলাদের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালে জেলা শহরের পৌর এলাকার ভেমরুল্লায় গড়ে উঠে চুয়াডাঙ্গা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি। ২৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয় প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। এখানে রয়েছে একাডেমিক কাম-প্রশাসনিক ভবন, ডরমেটরী ও অধ্যক্ষের বাসভবন। প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে ৫টি ট্রেড নিয়ে শুরু হলেও বর্তমানে ১৩টি কোর্সে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে নিয়মিত। আধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে হাতে কলমে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে প্রশিক্ষণার্থীদের। প্রতিদিন সকাল ও দুপুর শিপটে শিক্ষকরা দক্ষ জনশক্তি গড়তে সর্বোচ্চ চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন।
চুয়াডাঙ্গা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে কম্পিউটার, ইলেকট্রিক্যাল, অটোমোটিভ, ওয়েল্ডিং, সিভিল, গার্মেন্টস, হাউজকিপিংসহ বিভিন্ন কোর্সে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে। ৬ মাস, ৪ মাস ও ৩ মাসসহ বিভিন্ন মেয়াদে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। এখানে ২ বছর মেয়াদী এসএসসি ভোকেশনাল কোর্সও চালু রয়েছে। বর্তমানে দুই শিফটে ৫১৫ জন প্রশিক্ষণার্থী ১৩টি কোর্সে লিখিত, মৌখিক ও ব্যবহারিক ক্লাসে অংশগ্রহণ করছেন।
চুয়াডাঙ্গা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরিচালিত হচ্ছে। বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় ১৩টি কোর্স নির্দিষ্ট মেয়াদে চলমান থাকে।
শিক্ষার্থী মাহফুজুর রহমান বলেন, কম্পিউটার গ্রাফিক্স ডিজাইনের ওপর ৪ মাসের প্রশিক্ষণ নিচ্ছি। প্রশিক্ষণ শেষে ফ্রিল্যান্সিং করে কীভাবে আয় করা যায় ও বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা যায় সে চেষ্টা করছি।
শিক্ষার্থী লবনী সরকার জানান, সেভের অধীনে বিভিন্ন সেলাই শেখার কাজ করছি। এ কাজ শিখে কীভাবে নিজেকে স্বাবলম্বী হিসেবে গড়ে তোলা যায় সেই চেষ্টায় আছি।
শিক্ষক আল আমিন বিশ্বাস জানান, গার্মেন্টস প্রশিক্ষণে শিক্ষার্থীদেরকে প্রথমে সেলাই মেশিন সম্পর্কে ধারণা দেয়া হয়। এরপর কীভাবে শার্ট-প্যান্ট ও অন্যন্যা পোষাক তৈরির জন্য কাপড় কাটতে হবে এবং সেলাই করতে হবে তা শেখানো হয়।
চুয়াডাঙ্গা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) মো: মুছাব্বেরুজ্জামান বলেন, চুয়াডাঙ্গা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে এ পর্যন্ত ১৩টি কোর্সে ৫ হাজার ৮৭৩ জন যুবক ও যুবমহিলা প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। আরো ৫১৫ জন চলমান কোর্সে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছেন।
তিনি আরো বলেন, খুব শিগগিরই জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার একই ধরণের আর একটি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপিত হবে। এতে করে ওই এলাকার যুবক-যুব মহিলারা প্রশিক্ষণ গ্রহণের সুযোগ পাবে।
নয়া শতাব্দী/জেআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ