পবিত্র রমজান মাসের শেষ শুক্রবার মুসলমানদের বৃহত্তম জুমাআতুল বিদা নামাজ উদযাপনের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে উপমহাদেশের মধ্যে হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদের খ্যাতি বহু পুরনো। ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় এবারও হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদে একসাথে লক্ষাধিক মুসল্লী জুম’আতুল বিদা’র নামাজ আদায় করেছেন।
প্রচণ্ড তাপমাত্রা উপেক্ষা করে শুক্রবার (২৯ এপ্রিল) জুম’আতুল বিদা’আ উপলক্ষে আশে পাশের জেলা, উপজেলা এবং দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লক্ষাধীক মানুষ এ মসজিদে নামাজ আদায় করতে আসে। সকাল ১১টার মধ্যেই বিশাল মসজিদের প্রথম ও দ্বিতীয় তলায় কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে যায়।
দূর-দূরান্ত থেকে আগত মুসল্লিদের নির্বিঘ্নে নামাজ আদায় করতে মসজিদ কর্তৃপক্ষ মসজিদের মাঠ, আহমাদিয়া আলিয়া মাদ্রাসা মাঠ ও ভবন, জামেয়া আহমাদীয়া কওমী মাদ্রাসা ভবন, হাজীগঞ্জ টাওয়ার, রজনীগন্ধ্যা মার্কেট, হাজীগঞ্জ প্লাজা, বিজনেস পার্ক, প্রাইম ব্যাংক ভবন, সাবেক পৌরসভার উপরে বিশাল জামায়াতের আয়োজন করা হয়। এসব ভবন সাড়ে ১২টার মধ্যেই ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের অংশগ্রহণে পরিপূর্ণ হয়ে যায়। জুময়ার নামাজের আযানের পর বয়ান পেশ করেন হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদের পেশ ইমাম ও খতিব মুফতি আবদুর রউফ।
দুপর ১টায় কুমিল্লা-চাঁদপুর আঞ্চলিক মহা সড়ক স্টেশন রোডের সম্মুখ থেকে শুরু করে পূর্ব বাজারস্থ বড় ব্রীজ পর্যন্ত মুসল্লীদের নামাজের কাতার ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় কুমিল্লা-চাঁদপুর আঞ্চলিক মহাসড়কে সকল প্রকার যানবাহন চলা-চল বন্ধ হয়ে যায়। প্রখর রোদ উপেক্ষা করে মুসুল্লীগণ, মাঠ ও মহাসড়কে নামাজ আদায় করে। নামাজ শেষে দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনা এবং বৈশ্বিক মহামারী থেকে মুক্তি চেয়ে বিশেষ মোনাজাত করেন মসজিদের পেশ ইমাম ও খতিব আলহাজ্ব মুফতি আব্দুর রউফ। মোনাজাতের সময় আমিন আমিন ধ্বনীতে আকাশ-বাতাস মূখরিত হয়ে উঠে। এ সময় আল্লাহর দরবারে পানা’হ চেয়ে জুম’আতুল বিদা’র মোনাজাতে মুসুল্লীদের কান্নায় আকাশ-বাতাশ ভারি হয়ে উঠে।
জেলাবাসীর গৌরব হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদের বৃহৎ এ জামায়াতে হাজীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ, উপজেলা প্রশাসন, হাজীগঞ্জ পৌরসভা, হাজীগঞ্জ থানা প্রশাসন, হাজীগঞ্জ বাজার ব্যবসায়ী সমিতি, হাজীগঞ্জ ফোরাম, হাজীগঞ্জ সবুজ সংঘ, হাজীগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি, রোটারী ক্লাব হাজীগঞ্জ, হাজীগঞ্জ প্রেসক্লাব, হাজীগঞ্জ উপজেলা সাংবাদিক কল্যাণ সমিতি, নিরাপদ সড়ক চাই হাজীগঞ্জ উপজেলা শাখা, আহমাদিয়া কামিল মাদ্রাসা, আহমাদিয়া কাওমী মাদ্রাসা, আহমাদিয়া ফাউন্ডেশন, সবুজ ডেকোরেটর, সুজন ডেকোরেটর, সামাজিক সংগঠন প্রচেষ্টা, সামাজিক সংগঠন প্রভাত, হাজীগঞ্জ শিক্ষা কল্যাণ ট্রাস্ট, মাতৈন সমাজ কল্যাণ পাঠাগারসহ, স্থানীয় প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।
জুম’আতুল বিদা’র জুম’আতুল বিদা’র জামায়াত প্রসঙ্গে হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদের মোতাওয়াল্লী (ভারপ্রাপ্ত) প্রিন্স শাকিল আহমেদ বলেন, আলহামদুলিল্লাহ- প্রখর রোদ উপেক্ষা করে বিশাল জামায়াতে নামাজ আদায় করেছি। করোনার দু’বছর মানুষ জুম’আতুল বিদা’র জামায়াতে লকডাউন উপেক্ষা করেও অর্ধলক্ষাধীক মানুষ অংশগ্রহণ করেন। করোনা শেষে এ বছর জুময়াতুল বিদার নামাজ আদায়ে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। আমরা আমাদের সাধ্যমত মুসল্লীদের সেবা দেয়ার চেষ্টা করেছি।
তিনি আরো বলেন, শান্তিপূর্ণ ও সুশৃঙ্খলভাবে নামাজ আদায়ে আমাদেরকে হাজীগঞ্জ থানার পুলিশ বাহিনী, বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও স্থানীয় সংস্থাসমূহ পর্যাপ্ত সহযোগীতা প্রদান করেছে। আমি তাদের প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি এবং ভবিষ্যতেও তাদের এমন সহযোগিতা প্রত্যাশা করছি।
নয়া শতাব্দী/জেআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ