ঢাকা, রোববার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

কেনাকাটায় ঈদ বাজার জমজমাট

প্রকাশনার সময়: ২৭ এপ্রিল ২০২২, ১৭:৪৪

ময়মনসিংহের ত্রিশালে জমে উঠেছে ঈদ বাজার। ঈদ উপলক্ষে কেনাকাটা শুরু করেছেন অনেকে। আর আগেভাগে কেনাকাটা করতে উপজেলার বিভিন্ন মার্কেট ও প্রত্যন্ত অঞ্চলের দোকানে দোকানে দেখা গেছে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়।

রমজানের শুরু থেকে রহমত ও নাজাতের শেষে মাগফিরাতের দশ রোজা চলমান। সপ্তাহ পেরোলেই একে একে রোজা শেষে দরজায় কড়া নাড়ছে ঈদুল ফিতর। ঈদ বাজার মানেই আনন্দ, উৎসব খুশিতে মুখরিত হয়ে থাকে চারপাশ। আর নতুন পোশাক ক্রয়ে ত্রিশালের মার্কেটগুলোতে নারীদের উপচে পরা ভিড়।

গত ২ বছর করোনা প্রকোপ বিস্তার রোধে আরোপিত বিধিনিষেধের কারণে ঈদ বাজারে কেনাকাটায় তেমন জোরালোভাবে জমে উঠেনি। ফলস্বরূপ ব্যবসায়ীরা পড়েছিলেন বিপাকে। তবে এবারে ঈদে পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকায় স্বস্তিতে ক্রেতা-বিক্রেতা। কেনাকাটায় দেখা যাচ্ছে ঈদের আমেজ। তবে বিক্রেতা খুশি হলেও জিনিসপত্রের দামে নাখোশ ক্রেতারা।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, বার্মিজ মেগা মল, মেয়র মার্কেট, আব্দুর রশীদ মার্কেট, ইসমাইল প্লাজা, সানাউল্লাহ সুপার মার্কেটসহ প্রতিটি মার্কেটে ঈদ উপলক্ষে আনাগোনা ও ক্রেতাদের মুখরিত সমাগম থাকায় সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এ ভিড় পরিলক্ষিত হয়। নারী-পুরুষ সকলকেই নিজের ও প্রিয়জনের জন্য কেনাকাটা করতে দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে নারীরা কেনাকাটা করতে আসায় ব্যস্ততা বেড়েছে কাপড়, জামা, থ্রী-পিস, টু-পিস, বোরকা, জুতা, কসমেটিকস এবং অলংকার দোকানীদের। ব্যস্ততা বেড়েছে দর্জি পাড়াতেও।

উপজেলার শুধু মার্কেটগুলোতেই নয়। মার্কেটগুলোর আশেপাশে বসা ফুটপাতের দোকানগুলোতেও দেখা দিয়েছে এ উপচে পড়া ভিড়। এমন কিছু নেই যা এ ফুটপাতে পাওয়া যাচ্ছে না।

ত্রিশাল বার্মিজ মেগা মলের পরিচালক এস এ সবুজ জানান, রোজার পূর্ববর্তী ভালো বিক্রি হয়েছে। রোজা থেকে শুরু করে পনের রোজা পর্যন্ত তেমন বিক্রি না হলেও এখন পুরোদমে ব্যস্ততা শুরু হয়ে গেছে। দোকানে পাওয়া যাচ্ছে আকর্ষণীয় ইন্ডিয়ান সুলতান পাঞ্জাবি, নুরস ব্রান্ডের পাঞ্জাবিসহ বাচ্চাদের আকর্ষণীয় পাঞ্জাবি।

পাকিস্তানি লোন থ্রি-পিস, পাকিস্তানি অরগেজ্ঞা থ্রি-পিস, বিন সাঈদ, সারারা থ্রি-পিস, টু-পিস, গারারা থ্রি-পিস। ইন্ডিয়ান বিনয় টু-পিস, ওয়ান- পিসসহ বাচ্চাদের ইন্ডিয়ান পার্টি ড্রেস, পার্টি ব্যাগ, কসমেটিকস। আকর্ষণীয় সবকিছুই পাওয়া যাচ্ছে আমাদের বার্মিজ মেগা মলে।

ঈদের কেনাকাটা করতে আসা সুমাইয়া শিমু বলেন, গত দুই ঈদে লকডাউনের কারণে প্রাণ খুলে ঈদের কেনাকাটা ও ঈদ উদযাপন করতে পারিনি। নিজের ও প্রিয়জনের জন্য কেনাকাটা করারও সুযোগ হয়নি। তাই এবারের ঈদে আগাম কেনাকাটা করতে এসেছি। নিজের ও বাড়ির ছোটদের জন্য জামা, জুতা নেব। সাজসজ্জার জিনিসপত্র কিনবো।

সানাউল্লাহ সুপার মার্কেটে পোশাক কিনতে আসা স্কুল শিক্ষক জাহানারা বেগম বলেন, ঈদ আসতে এখনো বাকি আছে তা ঠিক।আগেভাগেই কাপড় কিনে দর্জির কাছে পাঠিয়ে দিয়েছি। দর্জিকে দেড়িতে কাপড় দিলে তো আর ঈদের আগে জামা তৈরি করে দিতে পারবে না। ঈদের জন্য কেনাকাটা করে যদি ঈদেই নতুন জামা পড়তে না পারি তাহলে কেনাকাটা করে লাভ কী বলেন? আজ আসছি বাচ্চাদের জন্য তাদের পছন্দ অনুযায়ী কেনাকাটা করার জন্য।

এদিকে জিনিসপত্রের দামে অসন্তষ্ট প্রকাশ করেছে বেশিরভাগ ক্রেতা। উপজেলার মার্কেটে কেনাকাটা করতে আসা মরিয়ম আক্তার মিস্টি নামের একজন বলেন, জামা, জুতা কিনতে এসেছি। যে দাম চাচ্ছে কিনতে হিমসিম খেতে হচ্ছে। গতবছর যে থ্রি- পিস ১২০০ টাকায় কিনেছি এবারে সেটার দাম চাইছে ১৮০০ টাকা। জিনিসপত্রের দাম এমন হলে আমাদের মত সাধারণ মানুষের জন্য সমস্যা।

ত্রিশাল বাজারের একাধিক ব্যবসায়ী বলেন, শুধু যে জামাকাপড়ের দাম বেড়েছে এমনটা তো নয়। প্রতিটা জিনিসপত্রের দাম আগের তুলনায় এখন বেশি। সে তুলনায় জামাকাপড়ের দামও কিছুটা বেড়েছে। আর দাম যে খুব বেড়েছে তাও তো মনে হচ্ছে না। সবাই তো নিজের পছন্দের জামাকাপড় কিনছে।

ত্রিশাল বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা বলেন, মানুষ কেনাকাটা করতে খুবই ব্যস্ত। আর এই কেনাকাটায় ক্রেতাদের যেন ভোগান্তি না হয় সেজন্য বাজার কমিটির পক্ষ থেকে উপজেলার কোনায় কোনায় কঠোরভাবে বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে।

নয়া শতাব্দী/জেআই

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ