ঢাকা, সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮ আশ্বিন ১৪৩১, ১৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইচ্ছে থাকলেও সাধ্য নেই

প্রকাশনার সময়: ২৫ এপ্রিল ২০২২, ২১:২০

মুসলিম সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে উপকূল জুড়ে চলছে মন্দার হাট। শেষ সময়ে এসেও এখনও কেনাকাটার ধুম পড়েনি বিপনি বিতানগুলোতে। নতুন কাপড়ের চড়া দাম থাকায় প্রিয়জনের পছন্দের পোশাকের চাহিদা মেটাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের উপর্জনক্ষম মানুষগুলোর। ফলে ক্রেতারা বলছেন, ইচ্ছে থাকলেও কেনার সাধ্য নেই।

ছোটদের পোশাকেও অতিরিক্ত দাম হাকাচ্ছেন দোকানিরা। ফলে আদুরে সন্তানের আবদার মেটাতে একের পর এক দোকান ঘুরছেন অভিভাবকরা। তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, রাজধানীসহ দেশের পাইকারী বাজারে কাপড়ের দাম ঊর্ধ্বগতি হওয়ায় এবার ঈদবাজারে ক্রেতাদের ভীড় কম। এমনকি ঊর্ধ্বমূল্যের কারণে ফুটপাতের দোকাগুলোতেও আশানুরুপ ক্রেতার সংখ্যা মিলছে না। ফলে লোকশান গুনতে হবে তাদের।

সরেজমিনে কথা হয় বাচ্চাদের ঈদের পোশাক কিনতে আসা পৌর শহরের বাসীন্দা আয়শা আক্তারের সাথে। তিনি জানান, গত চারদিন যাবৎ তার দুই আদুরে কন্যার জন্য একাধিক দোকান ঘুরে লেহেঙ্গা কিনেছেন সাড়ে নয় হাজার টাকায়। যা গত বছরের তুলনায় অন্তত ৪ হাজার টাকা বেশি মূল্যে কিনতে হয়েছে বলে অভিযোগ তার।

লালুয়া থেকে শাড়ি কিনতে আসা সুফিয়া বেগম জানান, তার শাশুড়ির জন্য কাপর কিনেছেন ১৬’শ টাকায়। তার অভিযোগ, বর্তমান বাজার ঘুরে দিশেহারা হয়েছেন তিনি। ৬’শ টাকার শাড়ি কিনতে হয়েছে ১ হাজার টাকায়। এছাড়া লুঙ্গির দামও নাগালের বাইরে বলে কিনতে পারেননি। এদিকে পৌর শহরের বাসীন্দা রানী বেগমের অভিযোগ, তার ছোট নাতনীর জন্য নতুন ডিজাইনের সারারা থ্রীপিচ কিনতে গিয়ে বেগ পেতে হয়েছে অনেক। কারণ সাধ্যের চেয়ে দাম অনেক বেশি। দোকানিরা ভারতীয় সারারার (থ্রীপিচ) দাম ৭ থেকে ১৫ হাজার টাকা চাওয়ায় শেষে বাধ্য হয়ে দেশি সারারা কিনতে হয়েছে ৩ হাজার টাকায়।

তিনি বলেন, ঈদের বাজারে জামা কাপড়ের এতোটা দাম আমি আগে কখনো দেখিনি। মহিপুর থেকে জিন্সের প্যান্ট কিনতে আসা হাবীব জানান, তার ছোট ভাইয়ের জন্য পোশাক কিনতে পারেননি। তিনি জানান, ১৫’শ টাকার প্যান্ট এখন ২ হাজার টাকা। বাধ্য হয়ে খালি হাতে ফিরে যাচ্ছেন তিনি। এদিকে পৌর শহরের গার্মেন্টস দোকানী বর্তমান ফ্যাশনের মালিক রেহান উদ্দিন জানান, ঠিক কীভাবে ক্রেতাদের মন রক্ষা করবো বুঝে উঠতে পারছি না। কারণ পাইকারী বাজার থেকে প্রতিটা পোশাক চড়া মূল্যে কিনতে হয়েছে। যারা কিনতে আসেন দাম শুনে অনেকেই চলে যাচ্ছে। দোকানের অর্ধেক মাল বিক্রি হবে কিনা এনিয়ে দুঃশ্চিন্তায় আছি।

কলাপাড়া পৌর শহরের বৃহৎ শিকদার বুটিস হাউজের স্বত্বাধিকারী ফিরোজ শিকদার বলেন, তার শপিংমলে বিক্রির জন্য অন্তত দের কোটি টাকার কাপড় কিনেছেন। তবে তার সামান্যও বিক্রি করতে পারেননি। তিনি বলেন, তিন ভাগের একভাগ কাপড়ও বিক্রি হবে কিনা তা নিয়ে বেশ চিন্তিত।

কলাপাড়া পৌর বন্দর ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি দিদার উদ্দিন মাসুম জানান, কাপড়সহ সকল পণ্যই যাতে ঈদের বাজারে কেউ অতিরিক্ত দামে বিক্রি না করে এনিয়ে ব্যবসায়ীদের সাথে মিটিং করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু হাসনাত মো. শহীদুল হক জানান, অতিরিক্ত দাম কিংবা মানহীন পোশাক বিক্রির অভিযোগ পেলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করা হবে।

নয়া শতাব্দী/জেআই

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ