ঢাকা, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় যুবকের ৮ বছরের কারাদণ্ড

প্রকাশনার সময়: ২৪ এপ্রিল ২০২২, ১৪:৪০

ভোলায় ফেসবুকে ধর্মীয় অবমাননাকর মন্তব্য করে অপপ্রচার চালানোর অভিযোগে দায়ের করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় বাপন দাস (২৭) নামে এক যুবককে ৮ বছর কারাদণ্ড দিয়েছে বরিশাল বিভাগীয় সাইবার ট্রাইব্যুনাল।

রোববার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে বরিশাল বিভাগীয় সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. গোলাম ফারুক এ রায় ঘোষণা করেন। এ সময় মামলার একমাত্র আসামি বাপন দাস আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

বরিশাল বিভাগীয় সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিশেষ সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মো. ইশতিয়াক আহমেদ রুবেল রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, মামলায় বাপন দাসকে ৩টি ধারায় কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। সবগুলো ধারার রায় চলবে একই সঙ্গে। রায়ে ৩৪ ধারায় ৮ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ৩ লাখ টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে ২ বছরের কারাদণ্ড, ২৮/১ ধারায় ২ বছরের কারাদণ্ড ও ১ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে ৬ মাসের কারাদণ্ড এবং ৩১/১ ধারায় ৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ১ লাখ টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে ৬ মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ২৫ অক্টোবর বিকেলে ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার বাসিন্দা বিপ্লব চন্দ্র বৈদ্য (২৫) নামে এক তরুণের নিজের ছবিসংবলিত ফেসবুক আইডি থেকে মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে মন্তব্য করে কয়েকজন ফেসবুক বন্ধুর কাছে মেসেজ পাঠানো হয়। এতে এলাকায় বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। এরপর ওইদিন সন্ধ্যার পর বিপ্লব বৈদ্য বোরহানউদ্দিন থানায় তার আইডি হ্যাক হয়েছে- এই মর্মে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে আসেন। এ সময় পুলিশ বিষয়টি তদন্ত ও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বিপ্লব বৈদ্যকে আটক করে।

জিজ্ঞাসাবাদের সূত্র ধরে পটুয়াখালীর মো. ইমন (১৮) ও কামরুল ইসলাম শরিফ (১৮) নামে দুই তরুণকে সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনায় ২৭ অক্টোবর পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিতে চারজন মারা যায়। এরপর ফেসবুকে কটূক্তির ঘটনায় বিপ্লব বৈদ্য, মো. ইমন ও কামরুলসহ তিনজনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করে পুলিশ। বোরহানউদ্দিন থানার তৎকালীন উপ-পরিদর্শক (এসআই) দেলায়ার হোসেন বাদী হয়ে মামলাটি করেন। পরে ২০২০ সালের ১৭ জানুয়ারি মামলাটির তদন্তভার পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) কাছে হস্তান্তর করা হয়।

তদন্তকালে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে এবং জব্দকৃত মুঠোফোন ও অন্যান্য ডিভাইসের ফরেনসিক প্রতিবেদন অনুযায়ী বেরিয়ে আসে এই মামলায় গ্রেফতার বিপ্লব বৈদ্য, মো. ইমন (১৮) ও কামরুল ইসলাম শরিফের (১৮) বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সত্য নয়। মূলত বিপ্লব বৈদ্যের ফেসবুক আইডি হ্যাক করে যে ফোন থেকে এই অপপ্রচার চালানো হয়েছিল সেই ফোনটি কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলার চাচুয়া গ্রামের বিকাশ দাসের ছেলে বাপন দাসের (২৫)।

এরপর বাপন দাসকে গ্রেফতার করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে বাপন দাস স্বীকার করেন বিষয়টি। এরপর তিনি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। মূলত ফেসবুক আইডি হ্যাক করে অর্থ আদায়ের জন্য বাপন এটা করেন। কিন্তু বিপ্লবের কাছে অর্থ দাবি করে না পাওয়ায় তিনি এই অপপ্রচার চালান।

পরে এই মামলায় গ্রেফতার হওয়া তিন আসামিকে বাদ দিয়ে বাপন দাসকে একমাত্র আসামি করে ২০২০ সালের ১ আগস্ট আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ।

নয়া শতাব্দী/জেআই

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ