ঢাকা, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বেচ্ছাশ্রমে নির্মিত বাঁশের সাঁকোতেই পঞ্চাশ বছর

সেতুর জন্য গ্রামবাসীর হাহাকার
প্রকাশনার সময়: ২৬ জুলাই ২০২১, ১৭:৫৬

একটি পাকা সেতুর অভাবে পঞ্চাশ বছরেরও বেশী সময় ধরে চারটি গ্রামের ১০ সহস্রাধিক মানুষ স্বেচ্ছাশ্রমে নির্মিত বাঁশের সাঁকো দিয়ে পারাপার হচ্ছে। মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া জয়চন্ডি ইউনিয়নের গোগালী ছাড়া নদীর উপর দিয়ে নির্মিত ৬০ ফুট দৈর্ঘ্য ওই সাঁকো দিয়ে পার হতে গিয়ে অনেক রোগীর স্বজনদের পোহাতে হয় নানা ভোগান্তি। শিক্ষার্থীদের নানা রকম বিরম্বনার শিকার হতে হয়। আবাল, বৃদ্ধ, বণিতারা নানা প্রতিবন্ধকতার মধ্য দিয়ে পারাপার হচ্ছেন ওই সাঁকো দিয়ে।

স্বাধীনতার পর থেকে আবুতালিপুর, রামপাশা, মিঠুপুর ও বেগমানপুর গ্রামের হাজারো মানুষ একটি সেতুর জন্য হাহাকার করলেও কেউ কোন কর্ণপাত করছেন না। কোন জনপ্রতিনিধি কাঙ্ক্ষিত একটি সেতু নির্মাণের জন্য কার্যত কোন ভূমিকা নিচ্ছেন না। ক্ষোভে দুঃখে এখানকার মানুষ এখন অসহায়বোধ করছেন। আদৌ কি তাদের কাঙ্ক্ষিত সেতু কখনো নির্মাণ হবে নাকি এই কষ্ট নিয়েই জীবন পার করবেন এমন প্রশ্ন ঘোরপাক খাচ্ছে এখানকার স্বপ্নবাজ মানুষের অন্তরে।

জানা যায়, উপজেলা জয়চন্ডী ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া গোগালীছড়া নদীর উপর নির্মিত বাঁশের ওই সাঁকোটি প্রতি বছর খরা ও পানির স্রোতে ভেঙে পড়লে এলাকাবাসী চাঁদা তুলে আবার তা পুনরায় সংস্কার করে যাতায়াতের ব্যবস্থা করে তুলেন। সংশ্লিষ্ট অনেকেই সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন অনেকবার। কিন্তু কবে বাস্তবায়ন হবে তা কেউ বলে না।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গোগালিছড়া নদীতে কয়েকটি পাকা ও বাঁশের খুঁটি পুঁতে রাখা হয়েছে। অধিকাংশ খুঁটি এক পাশে কাত হয়ে গেছে। এর ওপর বাঁশ ফেলে নির্মিত হয়েছে সাঁকো।

স্থানীয় দিলদারপুর উচ্চ বিদ্যালয়, রহমত আলী ও বন্দে আলী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ওই সাঁকো ব্যবহার করে প্রতিষ্ঠানে যাতায়াত করে। টানা কয়েক দিন বৃষ্টি দিলে নদীতে পানি বেড়ে যায়। এতে কোমলমতি শিশু, বৃদ্ধ, রোগী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদী পার হয়।

দিলদারপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রুপিয়া বেগম বলেন, এখানে একটি সেতু খুবই জরুরি। সাধারণ লোকজন ছাড়াও অনেক শিক্ষার্থীরা এই বাঁশের সাঁকো দিয়ে যাতায়াত করে থাকেন। যার ফলে প্রতিদিন সাঁকো পারাপারের ভয়ে বিশেষ করে ছাত্রীরা স্কুলে আসতে পারেনা।

স্থানীয় ওয়ার্ড সদস্য বিমল দাস বলেন, একটি সেতু নির্মাণের জন্য এলাকার লোকজনকে নিয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরের দ্বারে দ্বারে গিয়েছি। অনেক প্রতিশ্রুতি পেয়েছি। কিন্তু আজও সেতু পাইনি।

জয়চন্ডী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কমর উদ্দিন আহমদ কমরু জানান, গোগালিছড়া নদীতে একটি পাকা সেতু নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরে একাধিকবার জানিয়েছি। কিন্তু কোনো আশ্বাস পাচ্ছিনা।

কুলাউড়া উপজেলা এলজিইডি কর্মকর্তা খোয়াজুর রহমান জানান, কুলাউড়ায় নতুন যোগদান করেছি। সরেজমিন পরিদর্শন করে সেতু নির্মাণের বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাবনা পাঠাবো।

নয়া শতাব্দী/এম

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ