ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

টাঙ্গাইলে ইটভাটার গ্যাসে পুড়লো ৩’শ বিঘার ধান

প্রকাশনার সময়: ২১ এপ্রিল ২০২২, ২০:৪৭

টাঙ্গাইলের ইটভাটা থেকে নির্গত বিষাক্ত গ্যাসে তিনটি গ্রামের কৃষকের ৩শ’ বিঘা জমির আধাপাকা ধান পুড়ে গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা ক্ষতিপূরণ দাবি করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। উপজেলার লোকেরপাড়া ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে।

লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, উপজেলার লোকেরপাড়া ইউনিয়নের গৌরিশ্বর মৌজায় অবস্থিত ‘এমএসটি’ নামের ইটভাটা। ফসলি জমির উপর স্থাপিত এই ভাটার চারপাশে রয়েছে গৌরিশ্বর, বিল গৌরিশ্বর ও দশানি বকশিয়া গ্রামের কৃষকের ধানের জমি। কৃষকের অভিযোগ, ইটভাটা থেকে নির্গত গরম বিষাক্ত গ্যাসের কারণে তিন গ্রামের কৃষকের তিনশ’ বিঘা জমির ধান পুড়ে নষ্ট হয়ে গেছে।

ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা অভিযোগ করে বলেন, গত বৃহস্পতিবার ইট পোড়ানোর কাজে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা ইট ভাটার ইট পোড়ানো চেম্বারে জমে থাকা বিষাক্ত গ্যাস চেম্বার থেকে ছেড়ে দেন। গ্যাস ছাড়ার সাথে সাথে এলাকার বাতাস উত্তপ্ত হয়ে যায়। ইট ভাটার বিষাক্ত বাতাস যে দিক দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে সেই দিকের ফসলি জমির আধাপাকা ধান পুড়ে গেছে। ধান পুড়ে নষ্ট হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি আশেপাশের বিভিন্ন গাছের সবুজ পাতা ঝড়ে গেছে।

বিল গৌরিশ্বর গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক আবুল হোসেন বলেন, ধারদেনা করে এক বিঘা জমিতে ধান আবাদ করছিলাম। সব ধান পুড়ে গেছে। এখন ধারই শোধামু কীভাবে খামুইবা কী।

একই গ্রামের আল আমিন ও ফারুক হোসেন বলেন, আর মাত্র কয়েকটা দিন পরেই ধান ঘরে তুলমু। এর মধ্যে আমাদের সর্বনাশ হয়ে গেলো। এই লোকসান কি দিয়া পোসামু বুঝতাছি না।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলার লোকেরপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শহিদুল হক মিলন বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা আমার কাছে এসেছিলেন। তাদেরকে নিয়ে আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে আলাপ করেছি। আশাকরি ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা দ্রুত প্রতিকার পাবে।

এমএসটি ভাটার মালিক ফজলুল হক তালুকদার বলেন, কৃষকের ধান নষ্ট হওয়ার ঘটনা সঠিক। তবে এটা ভাটার কারণে না; পোকার আক্রমণ বা অন্য কোন কারনে হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত না। ইটভাটার কারণে ধানের ক্ষতি হলে স্থানীয় প্রশাসনের সাথে আলাপ করে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দিলশাদ জাহান বলেন, ইটের ভাটার গ্যাসে ধান পুড়ে যাওয়ার বিষয়টি আমাকে জানিয়েছে কৃষকরা। সরেজমিনে গিয়ে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে। ইটভাটার নির্গত ধোয়া ও গ্যাসের কারণেই ক্ষেতের ধান নষ্ট হয়েছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুনিয় চৌধুরী বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা লিখিত আবেদন নিয়ে আমার কাছে এসেছিল। আমি সরেজমিনে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের নষ্ট হওয়া ধান ক্ষেত দেখবো এবং উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার সাথে নিয়ে সরেজমিনে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

নয়া শতাব্দী/জেআই

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ