রাজশাহীতে তীব্র গরমে জনজীবনে দুর্ভোগ নেমে এসেছে। শুষ্ক আবহাওয়ার কারণে আমের রাজধানী রাজশাহী অঞ্চলে গাছ থেকে আমের গুটি ঝড়ে পড়ছে। এছাড়া বোরো মৌসুমে বরেন্দ্র অঞ্চলের ধানের জমি ফেটে চৌচির হয়ে যাচ্ছে।
রাজশাহীতে গত শুক্রবার গত আট বছরে মধ্যে দেশের সর্বাচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। এদিনে রাজশাহীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রি এবং সর্বনিম্ম তাপমাত্রা ছিল ২৫ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। একদিনের ব্যবধানে রাজশাহীতে ৪০ ডিগ্রীর নিচে নেমেছে তাপমাত্রা। শনিবার রাজশাহীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৮ দশমিক ৩ ডিগ্রী সেলসিয়াস।
রাজশাহীর আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ আবু সাঈদ মিয়া জানান, রাজশাহীর উপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তীব্র তাপদাহ। এটি কয়েকদিন অব্যাহত থাকবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। শনিবার তাপমাত্রা কিছুটা কমেছে। শনিবার ৩৮ দশমিক ৩ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।
রাজশাহী আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, মার্চের মধ্যভাগ থেকে এপ্রিলের মধ্যভাগ পর্যন্ত রাজশাহীর উপর দিয়ে প্রায় মৃদু ও মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে গেছে। এরপর গত ৪ এপ্রিল মাত্র ০ দশমিক ৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। এর আগে ও পরে দেশের বিভিন্ন স্থানে হালকা বৃষ্টি হলেও খরাপ্রবণ এলাকা রাজশাহীতে আর কোনো বৃষ্টিপাত হয়নি। ফলে রাজশাহীর উপর দিয়ে চলমান মৃদু ও মাঝারি তাপপ্রবাহ তীব্র আকার ধারণ করেছে। এতে জীবনে চরম দুর্ভোগ বেড়েছে।
বিশেষ করে রমজান মাসে এই ধরণের তীব্র গরম আবহাওয়ার কারণে চরম কষ্ট পাচ্ছেন বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ।
আবহাওয়া অফিসের পরিসখ্যানে দেখা গেছে, ২০২১ সালে ২৫ এপ্রিল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় যশোরে ৪১.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এরপর ২০১৪ সালের পর যশোরে ওই তাপমাত্রাই ছিল দেশে সর্বোচ্চ। ওইদিন ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৯.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে ২০১৪ সালে চুয়াডাঙ্গায় ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল। একই বছর ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রিতে উঠেছিল। গত দুই যুগে বাংলাদেশে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস উঠেছিল যশোরে। তার আগে ১৯৯৫ সালে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছিল ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালের ১৮ মে রাজশাহীতে রেকর্ড ৪৫ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস সর্বোচ্চ তাপমাত্রা হয়েছিল। দীর্ঘদিন পর এবছর আবারো রাজশাহীতে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রী অতিক্রম করেছে। এতে ফল, ফসলসহ জনজীবনে নেমে এসেছে দুর্ভোগ।
নয়া শতাব্দী/জেআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ